ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

কলকাতা বইমেলায় মমতার ১০ বই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৭ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২২
কলকাতা বইমেলায় মমতার ১০ বই

কলকাতা: সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত একের পর এক ফাইলে সই। তারই মধ্যে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ।

এক নাগাড়ে বেজে চলা মোবাইল ফোনে উত্তর আর মেসেজে চোখ বোলানো- প্রতিদিন এটাই রুটিন পশ্চিমবেঙ্গর প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এ ব্যস্ততার মধ্যেই একটু সময় মিললে কলম তার সঙ্গী।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কোনো পেশাদার প্রাবন্ধিক নন। তবুও জীবনযুদ্ধের নানা ঘাত-প্রতিঘাতকে ডায়েরির পাতায় লিপিবদ্ধ করেন নিয়ম করে। মমতার সে রকম অসংখ্য অভিজ্ঞতা আর বাস্তবের লড়াই ছাপার আকারে পেয়েছেন বাংলার মানুষ, লেখিকা হিসেবে বেশ সমাদৃত মমতা।

করোনার দাপটে দু’বছর বন্ধ ছিল কলকাতা বইমেলা। এবারের ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় তার লেখা নতুন ১০টি বইয়ের মাধ্যমে বাংলার মানুষ ফের যোগাযোগ গড়বেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তথা লেখিকা মমতার সঙ্গে। এদিন বইমেলা উদ্বোধনের পর নিজের বইগুলো প্রকাশ করেন মমতা।

বইমেলার সূচনার শেষ লগ্নে বইমেলার কর্তৃপক্ষ বলেন, দিদি এখানে সবাই আছেন, আপনার বইগুলো এ মঞ্চ থেকে প্রকাশ করতে চাই। দিদিও না করেননি। ‘শিশুমন’, ‘কলম’, ‘কোভিডের দিনগুলি’, ‘কলকাতার দুর্গোৎসব’, নারীদের নিয়ে লেখা ‘লহ প্রনাম মহিয়ষী’, ‘খেলা হবে’, ‘দুয়ারে সরকার’-সহ প্রকাশ হয় আরও কয়েকটি বই। এছাড়া নিজের পুরোনো সংকলনের হিন্দি ও ইংরেজি অনুবাদ। প্রসঙ্গত বাংলার পাশাপাশি হিন্দি ও ইংরেজি যথেষ্ট সাবলীল তিনি।

বই প্রকাশের পর মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, আমি লেখার খুব একটা সময় পাই না। তার মধ্য থেকেও নিজের পুরনো অভ্যেস ছাড়তে পারি না। কীভাবে বইগুলো লেখেন তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বাংলার দিদি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে সকালে আমি যখন ট্রেডমিলে হাঁটি তখন আমার সহকারীকে ডিকটেট করলে সে লিখে রাখে। এছাড়া আমার লেখার সঙ্গী আমার এই মোবাইল ফোন। এছাড়া বাড়িতে আমার সঙ্গী ডায়েরি। সারাদিনের নানা ঘটনা তুলে রাখি। সব মিলিয়ে লেখাগুলো একত্রিত হয়ে বই হয়েছে। আপনাদেরও বলব, যা পারেন লিখতে থাকুন। কিন্তু লিখুন। এতে স্মৃতিশক্তি যেমন বাড়ে তেমনি নিজের দৈনন্দিন জীবনেও পরিবর্তন আসে।

এবারের বইমেলার থিম কান্ট্রি বাংলাদেশ। ফলে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার সূচনায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আন্তরিক আতিথিয়তায় আমাদের মুগ্ধ করেছে। উনি বাংলাদেশেও জনপ্রিয়। মমতা বলেন, আমার বাংলাদেশ পছন্দের। আমিও বাংলাদেশ যেতে চাই। হাসিনা দিদি সুস্থ থাকুক, ভালো থাকুক আমরাও চাই। আপনার যেমনি জয় বাংলা বলেন, আমাদের দলের স্লোগানও জয় বাংলা। আপনারা বারে বারে আসবেন। আমিও যাবো।

এবারে বইমেলায় বাংলাদেশসহ রাশিয়া, ব্রিটেন, আমেরিকা, জাপান মিলিয়ে ২০টি দেশ নিজেদের সাহিত্য সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছে। এছাড়া জাতীয় স্তরে দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, গুজরাত, নাগাল্যান্ড, আসাম, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরলা, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, তেলেঙ্গানা, উড়িষ্যার মতো রাজ্যের প্রকাশনা সংস্থাগুলো অংশগ্রহণ করেছে। মেলা প্রাঙ্গণে অংশ নিয়েছে ২২০টি লিটল ম্যাগাজিনের স্টল। সব মিলিয়ে এবারে কলকাতা বইমেলা মোট স্টল হয়েছে ৬শ’র বেশি।

১৪ দিনব্যাপী এ বইমেলা চলবে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কেনাবেচার পাশাপাশি চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। চলবে অষ্টম কলকাতা সাহিত্য উৎসব। বইপ্রেমীদের জন্য বইমেলা খোলা থাকবে প্রতিদিন স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৬ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২২
ভিএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।