ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

পুরভোটের প্রচার তুঙ্গে, তৎপর বাংলার শাসক দল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
পুরভোটের প্রচার তুঙ্গে, তৎপর বাংলার শাসক দল চলছে ভোটের গণসংযোগ।

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে পাঁচ জায়গার পুরনিগম ভোটের পর রাজ্যজুড়ে পুরসভা ভোটের প্রস্তুতি তুঙ্গে। কলকাতার পর, সম্প্রতি শেষ হয়েছে শিলিগুড়ি, আসানসোল, বিধাননগর ও চন্দনগর করপোরেশন (পুরনিগম) ভোট।

 

এবার রাজ্যজুড়ে ১০৮ মিউনিসিপালিটি (পুরসভা) নির্বাচন। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি পুরসভা ভোটের গণনা হবে ২ মার্চ। সেই ভোটের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যজুড়ে। তৎপর রাজ্যের শাসকদল। ভোট প্রতিযোগিতায় আছে বিজেপি ও বাম, কংগ্রেসের মত মূল দলগুলোও।

নানা কায়দায় চলছে শাসক দলের ভোট প্রচার। আবার কোথাও গোষ্ঠী কোন্দল সামনে আসছে।  

সম্প্রতি ‘গরুর দুধের স্বর্ণ আছে’ বলে এক দলীয় কর্মসূচিতে দাবি করেছিলেন, বিজেপির সাবেক রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

বিজেপি নেতার সেই স্বর্ণতত্ত্ব সামনে এনে মধ্যমগ্রামে অভিনব কায়দায় বিক্ষোভ দেখালেন পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

দিলীপের সামনেই রাস্তায় দুধ ঢেলে স্বর্ণ খোঁজা অভিনয় করেন তৃণমূল কর্মীরা। মধ্যমগ্রামের একটি ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার সেরে ফেরার পথে তার কনভয় দাঁড় করিয়ে প্রথমে জয় বাংলা স্লোগান দেন তৃণমূল কর্মীরা তারপর তারা রাস্তায় দুধ ঢেলে স্বর্ণ খুঁজে বেড়ানোর অভিনয় করেন। এমনকি একটি দুধের প্যাকেট আগে থেকেই তৃণমূল কর্মীরা একটি স্বর্ণের আংটি লুকিয়ে রেখেছিলেন।  

সেই আংটি দিলীপ ঘোষের সামনে হাতে তুলে নিয়ে, ‘পেয়েছি পেয়েছি, গরুর দুধে স্বর্ণ পেয়েছি’, বলে উল্লাস করতে থাকে। রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ প্রথমে ভ্যাবাচ্যাকা খেলে পড়ে হেসে লুটোপুটি খায়। তবে দিলীপ ঘোষের কী প্রতিক্রিয়া তা বোঝা যায়নি, কারণ তিনি কালো কাচের গাড়ির ভেতরে ছিলেন।

আবার শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতেও প্রচার এসেছিলেন দিলীপ ঘোষ। তার প্রচারের পর বারাসাত শহর ‘গঙ্গাজল’ ছিটিয়ে শুদ্ধিকরণের অভিনয় করেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এবারে বারাসাত পুরসভা ভোটে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন দলের সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায়। প্রচারের ফাঁকে একটি চায়ের দোকানে চা পান করছিলেন তিনি, সেসময় দিলীপবাবু তার কর্মীদের নিয়ে পদযাত্রা করছিলেন।  

মুখোমুখি হন দুইজনেই, কুশলবিনিময় করে বলে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘এই সৌজন্য পরিবেশে পৌরসভা নির্বাচন হওয়া উচিত। ’

অপরদিকে এবারের পুরভোটে ‘এক ব্যাক্তি এক পদ’ নীতি বজায় রেখেছে শাসক দল। অর্থাৎ কোনো বিধায়ক, সাংসদের-কাউন্সিলর ভোটে প্রার্থী করেনি দল। তা সত্ত্বেও প্রার্থী তালিকা নিয়ে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে আসছে। বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দলের বিরুদ্ধে ‘নির্দল প্রার্থী’ হয়ে মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন। আর এসব দেখেই বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) হুমকির সুরে দলনেত্রী জানিয়েছেন, ‘মাত্র ৪৮ ঘণ্টা সময় দিলাম, তার মধ্যে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। নাহলে সোজা দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। ’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারি বার্তা, দলের নির্দেশ অমান্য করে নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে দাঁড়ালেই দল থেকে বহিষ্কার করা হবে নেতা নেত্রীদের। লিফলেট বিলি করে সেই নির্দল প্রার্থীদের জানাতে হবে তারা নির্বাচনে লড়ছেন না। এর অন্যথা হলে দল তাদের বহিষ্কার করা হবে।

প্রসঙ্গত, কলকাতাসহ চার পুরনিগমের পর রাজ্যের ১০৮ পুরসভার নির্বাচন আসন্ন। কিন্তু আগের মতো এবারও শাসক দলের কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে নির্দল প্রার্থীরা। এর আগে কলকাতা পুরনিগম ভোটে মমতার নিজের ওয়ার্ডে টিকিট না পেয়ে নির্দল দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন বিদায়ী এক কাউন্সিলর। পরে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয় বিদায়ী ওই কাউন্সিলর।

কলকাতা করপোরেশন ভোটে এ ধরনের ঘটনা একাধিক ঘটেছিল। তখন নেতা-মন্ত্রীরাই এরকম হুমকি দিয়েছিল নির্দল প্রার্থীদের। কিন্তু, এবারের আর নেতা-মন্ত্রীদের কথায় কাজ হচ্ছে না। তাই নেত্রীর কন্ঠে হুমকির বার্তা। সব মিলিয়ে শেষ সময়ে জমে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গে পুরসভা ভোট।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২১
ভিএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।