ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

লাদাখ সীমান্তে ‘যুদ্ধের মহড়া’, জিততে হবে বললেন মমতা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৯ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২০
লাদাখ সীমান্তে ‘যুদ্ধের মহড়া’, জিততে হবে বললেন মমতা

কলকাতা: ‘চীনের কোনো গণতন্ত্র নেই, ওখানে একনায়কতন্ত্র চলে। ওরা যেটা মনে করবে, সেটাই করতে পারে। তবে আমাদের ভারতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ভারত জিতবে, চীন হারবে। আমরা সরকারের সঙ্গে রয়েছি।’

ভারত-চীন সীমান্তের আগামী পরিস্থিতি কী হবে, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার (১৯ জুন) বিকেল ৫টার দিকে ডেকেছিলেন সর্বদলীয় ভার্চ্যুয়াল বৈঠক। তাতে এ মত জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তবে বৈঠকে সম্পূর্ণভাবে কী উঠে এলো, তা এখনও জানা যায়নি।

এ দিন বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী প্রধান নীতীশ কুমার, উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার, সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব, বহুজন সমাজ পার্টির সুপ্রিমো মায়াবতী এবং ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন।

তবে আমন্ত্রণ পাননি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, লালুপ্রসাদ যাদবের দল আরজেডি, আসাদউদ্দিন ওয়াইসির দল এআইএমআইএম।

ভারতীয় সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, ভারতের অংশে লাদাখে প্রবেশ করেছিল চীনের সেনা। দুই দেশের উচ্চপর্য়ায়ে সেনাপ্রধানের বৈঠকের পর চীনাসেনা ভারত ভূমি ছেড়ে যাওয়ার সময় বচসা বাঁধায় ভারতীয় সেনার সঙ্গে।

তাতে চার ফুট লোহার রডে কাঁটাতার পেঁচিয়ে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। প্রটোকল অনুযায়ী আগ্নেয়াস্ত্র কোনো পক্ষই ব্যবহার করেনি। এক কর্নেলসহ ১৯ সেনার মৃত্যু হয়। আহত অনেকে। সবমিলে সংখ্যাটা ৭০ এর কাছাকাছি।

বৃহস্পতিবারও (১৮ জুন) নিজেদের অবস্থান থেকে নড়েনি চীনের রিপাবলিক আর্মি। সে কারণে ভারতে ডাকা হয়েছিল এই সর্বদলীয় বৈঠক। তবে বৈঠকের আগেই প্রস্তুতি শুরু করে ভারতীয় তিন বাহিনীর সেনা। তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের ভিত্তিতে সীমান্তে তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়ত। সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই শুক্রবার সকাল থেকে গলওয়ানে ভারতীয় যুদ্ধবিমান নামাতে শুরু করেছে।

এর আগে গতকাল হঠাৎ করেই লে ও শ্রীনগরের বিমানবাহিনী ঘাঁটি পরিদর্শন করে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন বিমানবাহিনী প্রধান আরকেএস ভাদুরিয়া। এরপরই শুরু হয়েছে বিমানবাহিনীর এই তৎপরতা। লাদাখে চূড়ান্ত সতর্কবার্তা দিয়ে পাঠানো হয়েছে বিমানবাহিনী সেনাদের।

ফলে লাদাখের সীমান্ত বরাবর উড়তে শুরু করেছে ভারতীয় অ্যাটাক হেলিকপ্টার এবং নজরদারি বিমান। অন্যদিকে লে বিমানবন্দর থেকে দৌলতবেগ ওল্ডির বিমানঘাঁটি থেকে রওনা দিতে শুরু করেছে সেনাবাহিনীর কার্গো হেলিকপ্টার ও সামরিক বিমান।

ওই এলাকায় গতকাল থেকেই আরও বেশি সেনাবাহিনী, অস্ত্র ও রসদ পাঠাতে শুরু করেছে ভারত। এর সঙ্গে শুক্রবার সকাল থেকে আকাশপথেও তৎপরতা বাড়াল ভারতীয় সেনা। ভারতীয় সেনা সূত্রের খবর অনুযায়ী, লাদাখে পাঠানো হয়েছে ‘চিনুক কার্গো হেলিকপ্টার’, ‘অ্যাপাচি হেলিকপ্টার’, ‘পি-৮ সার্ভেইলেন্স এয়ারক্রাফট’ এবং ‘আইএল-৭৬ স্ট্র্যাটেজিক এয়ারলিফট’-এর মতো শক্তিশালী ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন উড়ান।

আমেরিকা থেকে বলা হয়েছে, ভারত, তাইওয়ান, জাপানে একের পর এক দেশের সঙ্গে চীন আগ্রাসী আচরণ করছে। এর পাল্টা যেকোনো পরিস্থিতির জন্য বেইজিং যেন প্রস্তত থাকে। এর ওপর সম্প্রতি ভারত আবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্যপদ পেয়েছে। সমর্থন পেয়েছে ১৮৪টি দেশের।

এতগুলো দেশ এভাবে ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে যাওয়ায় কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়েছে চীন। তাই একদিকে যেমন শান্তি ফেরাতে লাদাখ সীমান্তে মেজর জেনারেল স্তরের বৈঠক চলছে, অপরদিকে আবার সীমান্তে শুরু হয়েছে পুরোদমে যুদ্ধের মহড়া।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২০
ভিএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।