ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

করোনা ভাইরাস নিয়ে তৎপরতায় প্রশংসিত মমতা সরকার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪২ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২০
করোনা ভাইরাস নিয়ে তৎপরতায় প্রশংসিত মমতা সরকার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

কলকাতা: করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় মমতা প্রশাসনের প্রশংসা করলো কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সুদান প্রশংসাসূচক এক বার্তা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনকে।

মুর্শিদাবাদে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে ভর্তি এক রোগীর মৃত্যুর আগে তৎপরতা দেখানো, রক্তের নমুনা সংগ্রহ এবং সৌদি থেকে কলকাতা বিমানবন্দর হয়ে মুর্শিদাবাদে বাড়ি পৌঁছানো এবং বাড়ি থেকে হাসপাতালে যাওয়ার মধ্যে ওই ব্যক্তি যতজনের সংস্পর্শে এসেছেন, প্রত্যেককে দ্রুত খুঁজে বের করার জন্যই এ প্রশংসা করা হয়েছে। এমনটাই জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় ও রাজ্যস্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে।

জিনারুল হক নামে এক রোগীর সংস্পর্শে আসা ট্যাক্সি, বাসচালক, মারুতি ভ্যান, দু’টি টোটো চালক, তার পরিবারের লোকজন এবং বিমানে তার সঙ্গে থাকা দুই যাত্রীসহ ১৪ জনের বাড়ির ঠিকানা ও ফোন নম্বর জোগাড় করেছিল স্বাস্থ্যভবন। প্রত্যেকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে আনা হয়। খুবই অল্প সময়ের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে এ চটজলদি কাজে অত্যন্ত সন্তুষ্ট কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি। যদিও পরে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা ওই যুবকের শরীরে করোনা ভাইরাস মেলেনি।

কেন এ প্রশংসা পেলো মমতার প্রশাসন? সৌদি আরব থেকে দুবাই হয়ে গত ৭ মার্চ স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন জিনারুল। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি ট্যাক্সি করে ধর্মতলায় যান। বহরমপুরের একটি বেসরকারি বাস ধরেন। রাত ৮টায় বহরমপুর পৌঁছে সেখান থেকে একটি টোটো ধরে সদরঘাট নদীর পাড়ে পৌঁছান। সেখান থেকে নৌকা করে যান তার বাড়িতে।

রাত তখন ৯টা ৫৮ মিনিট। গোটা রাস্তাতেই শরীর অত্যন্ত খারাপ থাকায় দফায় দফায় বমি করতে থাকেন জিনারুল। রাতে স্থানীয় এক চিকিৎসককে দেখানো হয় তাকে। স্যালাইন দেওয়া হয়। তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরদিন মানে ৮ মার্চ সকাল ১০টা নাগাদ একটি মারুতি ভ্যানে করে তাকে নিয়ে আসা হয় এবং ভর্তি করা হয় মুর্শিদবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ৮ তারিখ বিকেলে সেখানেই মৃত্যু হয় তার।

জ্বর, বমি, শ্বাসকষ্ট, কাশি ইত্যাদি উপসর্গ থাকায় চিকিৎসকদের তাকে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত বলে সন্দেহ হয়। মৃত্যুর আগে তার শরীর থেকে দু’ধরনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। জিনারুলের নমুনা দু’টি পৌঁছে দেওয়া হয় বেলেঘাটার নাইসেড (ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ক্লিনিক্যাল এক্সসিলেন্স) কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে। ৯ মার্চ ভোর সাড়ে ৪টা। রোগীর নমুনা পরীক্ষা করার জন্য ঘটনার গুরুত্ব বুঝে রাত জেগেছিলেন পরীক্ষার কাজে যুক্ত চিকিৎসা বিজ্ঞানী এবং টেকনোলজিস্টরা।

সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। অর্থাৎ করোনা ভাইরাসের জীবাণু পাওয়া যায়নি তার শরীরে। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত ট্যাক্সি, বাস, নৌকা, মারুতি ভ্যানসহ যে যে বাহনে তিনি গিয়েছিলেন, প্রত্যেকটির চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পাশাপাশি বাড়িতে যাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাদেরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে মুর্শিদবাদ মেডিক্যালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাৎক্ষণিক তৎপরতার কারণে প্রশংসিত হয় মমতা প্রশাসন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২০
ভিএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।