ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসে অন্যরকম একুশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২০
কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসে অন্যরকম একুশ

কলকাতা: মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ব্যতিক্রমী আয়োজনে পালন করলো কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস। বহুভাষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এনে দেয় ভিন্নতা। লায়ন ড্যান্স, সালসা, নেপালি ক্লাসিক্যাল, নরওয়েজিয়ানের কণ্ঠে লালন বিশ্লেষণ আর বাংলার মাটির টানের গানের আমেজে সন্ধ্যাটা জমে উঠেছিল এদিন।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলের এ আয়োজনে অংশ নেন কলকাতায় বিভিন্ন দেশের কনস্যুলেট প্রতিনিধিরা। তারা তাদের নিজ নিজ ভাষায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করেন।

 

এদের মধ্যে ছিল নেপাল, রাশিয়া, থাইল্যান্ড, চীন, যুক্তরাজ্য, পর্তগাল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলেট এবং কলকাতা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস।

এর আগে সকালে প্রভাতফেরির পর দিবসটি উপলক্ষে উপদূতাবাস প্রধান তৌফিক হাসান বলেন, এদিনের মাহাত্ম্য এটাই যে প্রত্যেকটা মানুষ যেন তার নিজ মাতৃভাষাকে ভালোবাসে এবং শ্রদ্ধা করে। শুধু নিজের নয়, অন্য মাতৃভাষাকেও শ্রদ্ধা করে, সেই শিক্ষাই দেয় এ দিনটি। সে কারণেই দিনটিতে কলকাতায় অবস্থিত ১১টি বিদেশি দূতাবাসকে তাদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি।  

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মন কেড়েছে চীনের লায়ন ড্যান্স। চীনের তরফে যারা পরিবেশনায় অংশ নেন তাদের শরীরে চৈনিক রক্ত হলেও আদতে তারা কলকাতাবাসী। তাদের গ্রুপের নাম ছিল ‘সাইনিং স্টার’ এবং যারা এদিন অংশগ্রহণ করেছিলেন তারা হলেন রশোন, নেনরি, কেভিন, স্টিফেনসহ ১১ জন। চীনের ঐতিহ্যবাহী লায়ন ড্যান্স সবাইকে মুগ্ধ করে।

এরপর নরওয়েবাসী ওয়েরা নামে একজন বাংলাভাষী নারী গবেষকের লালন ফকির নিয়ে গবেষণার তথ্য সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়।  সবশেষে তিনি বলেন, আমার দুটো ফুসফুস। একটাতে আছে আমার মাতৃভাষা আর একটাতে আছে বাংলাভাষা।

কলকাতায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশনায় অংশ নেন সাবিনা ইয়াসমিন, সৌভিক পাল, ঐশী দাস, মৌমিতা আচার্য, মন্দিরা স্যান্যাল, ঐশী রায়হান, দিবাকর ঘোষ, হৃদিক জাহানসহ অনেকে। বাংলাভাষার একাধিক জনপ্রিয় গান কোলাজ করে নাচের মাধ্যমে দর্শকদের মন মাতান তারা।

এর আগে দিনটি উপলক্ষে সকালে উপ-দূতাবাস প্রাঙ্গণে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। পতাকা অর্ধনমিত করেন উপ-দূতাবাস প্রধান তৌফিক হাসান। এরপর একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে কলকাতার বাংলা ভাষাপ্রেমী কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতিকর্মীদের উপস্থিতিতে প্রভাতফেরি হয়।  

হারমোনিয়াম, ঢোল, বাঁশির সঙ্গে শত শত বাঙালির মুখে ছিল ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’। হৃদয় নিংড়ানো আবেগময় পরিবেশ ছিল প্রভাতফেরির মিছিলে। উপস্থিত ছিলেন উপ-দূতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী।

প্রভাতফেরিটি পার্ক সার্কাসে অবস্থিত বাংলাদেশ গ্রন্থাগার থেকে শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরণি হয়ে বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস প্রাঙ্গণের শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। শহীদ মিনারে পুষ্প অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন ভাষাপ্রেমী সাধারণ মানুষ, কলকাতার বিশিষ্টজনরা।

বাংলাদেশ সময়: ০২৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২০
ভিএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।