ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ভোটে নেই, তবে দিদির পাশে আছি: তাপস পাল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৯
ভোটে নেই, তবে দিদির পাশে আছি: তাপস পাল তাপস পাল এবং তার স্ত্রী নন্দিনী পাল, ছবি: সংগৃহীত

কলকাতা: গোটা পশ্চিমবঙ্গ, ভারত, এমনকি নিজের শহর কলকাতা যখন লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে সরব, রাজনৈতিক প্রার্থী, দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মিছিল, স্লোগানে সরগরম, তখন ভোট থেকে দূরে এক সময়ের লোকসভা সদস্য তথা তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম প্রচারক ও জনপ্রিয় অভিনেতা তাপস পাল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দক্ষিণ কলকাতার নিজের ফ্ল্যাটে নিরিবিলি সময় কাটাচ্ছেন স্বামী বিবেকানন্দ, গান্ধীজী, এপিজে আবদুল কালামের বই আর কিশোর, রফি, মুকেশ, মান্না, হেমন্তের গানের সঙ্গে। সঙ্গে ছয়টি পোষ্য কুকুর।

নির্বাচনী প্রচার থেকে তিনি স্বেচ্ছায় নির্বাসিত।

বর্তমানে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা তার প্রায় নেই। কাগজে, টিভিতে ভোটের খবরও সেভাবে দেখেন না। তার একটা বড় কারণ শরীর তেমন ভালো নেই।

তাপস পালের রাজনীতি জীবন শুরু হয় ২০০৯ সালে। অভিনয় জীবনের মতোই রাজনীতির জীবনেও তাপস পালের উত্থান ধূমকেতুর মতো। শুধু তা-ই নয়, তার সরে যাওয়াটাও অনেকটাই একইভাবে।

একইসঙ্গে রাজনৈতিক জীবন শুরু করা তার এক সময়ের নায়িকা এবং পরবর্তী সময়ের রাজনৈতিক সহকর্মী শতাব্দী রায় এখন পুরোপুরি নেত্রী। কিন্তু তাপস পাল নিজের পরিচয় অভিনেতা হিসেবেই দিতে ভালোবাসেন এখন।

‘বেগ ফর লাইফ’ নামে একটি চলচ্চিত্রের কাজ সদ্য শেষ করেছেন। ‘মাদার’ নামে একটি চলচ্চিত্র শুটিং ফ্লোরে নামবে জুনে। তার সঙ্গে আছে ওয়েব সিরিজে অভিনয়।

তৃণমূল দলের কেউ কেউ খোঁজ নেন। তবে ভোট নিয়ে সবাই বর্তমানে ব্যস্ত, তাই কোনো অভিমান নেই অভিনেতার। তবে মাঝে মাঝে মন চলে যায় তার একসময়ের লোকসভা কেন্দ্র কৃষ্ণনগরের দিকে। কিন্তু হতাশ নয়, জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজের কাজ নিরিখে খুশি অভিনেতা।

তাপস পাল আজও ভোলেননি ভোট প্রচারের মাঝে চড়া রোদে এক অপরিচিত বৃদ্ধার দেওয়া হাতপাখার কথা। অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার তার ঝুলিতে কম নেই, কিন্তু সেই হাত পাখাটি তিনি রেখেছেন নিজের বসার ঘরের দেয়ালে। রাজনৈতিক নেতা হিসেবে এটা কম বড় পাওনা নয় বলে মনে করেন তাপস পাল।

জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি কতোটা সফল, প্রশ্নে তাপস মনে করেন, পানি, রাস্তা, সুইমিংপুল, আলো- এসব যতোটা পেরেছেন করেছেন। কিন্তু অখণ্ড অবসরে ভেসে আসে কিছু মুখ। যারা আদর-আপ্যায়ন করে ঘরে বসতে দিতেন। সেসব মানুষ, যারা একবার অন্তত দেখতে চাইতেন রুপালী পর্দার নায়ককে। আন্তরিকভাবে কতো কী খাওয়াতে চাইতেন। গলা ভেজাতে গাছ থেকে পেড়ে দিতেন ডাব।

তবে সবটাই কি সুখস্মৃতি? চিটফান্ড মামালায় ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই হেফাজতে থাকার যন্ত্রণটা হয়তো এখনও কুড়েকুড়ে খায় নায়ককে। তবে প্রকাশ্যে সেটা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই আলোচনা চাননা অভিনেতা। কিন্তু হতাশা একটা আছে বলেই মনে হয়।

আজও একটা যন্ত্রণা তিনি বয়ে বেড়ান নিজের মনে। সারাজীবন কালিমামুক্ত অভিনেতা হিসেবে কাটিয়ে প্রচারে গিয়ে হঠাৎ করে মুখ দিয়ে কটুকথা বলে গোটা রাজ্যের মানুষের কাছে এক দিনের মধ্যে নায়ক থেকে খলনায়কে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। তার জন্য সকলের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তাপস পাল।

কিন্তু তাপস পালের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী? তিনি কি আবার সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন রাজনীতির ময়দানে? অভিনেতার বিশ্বাস তিনি রাজনীতিতে দিদির (মমতা) পাশে আছেন, আর বেশি করে আছেন বিনোদন জগতে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৯
বিএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।