ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

চিকিৎসা করাতে কলকাতায় গিয়ে দুই বাংলাদেশি নিখোঁজ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৮ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২৪
চিকিৎসা করাতে কলকাতায় গিয়ে দুই বাংলাদেশি নিখোঁজ

কলকাতা: চিকিৎসা করাতে কলকাতায় এসে নিখোঁজ হয়েছেন দুই বাংলাদেশি যুবক। কয়েকদিনের ব্যবধানে দুই যুবক নিখোঁজ হয়েছেন কলকাতার মার্কুইস স্ট্রিট অঞ্চলে।

রহস্য উন্মোচন করতে তদন্ত চালাচ্ছে কলকাতা পুলিশ।

গত ১৮ জুন মা-বাবার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় আসেন পাবনার বাসিন্দা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। ১৯ জুন রাতেই হঠাৎ হোটেল থেকে দেলোয়ার উধাও হয়ে যায়। এরপর ২০ জুন দিবাগত রাতে পরিবারের পক্ষ থেকে কলকাতা পার্ক স্ট্রিট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে মার্কুইস স্ট্রিটের পারামাউন্ট হোটেলে।

দেলোয়ারের বোন কামরুন্নাহার অমি জানিয়েছেন, তার ভাই নার্ভের রোগী। তার শটর্টাম মেমোরি লস হয়। কোন কিছু সহজে চিনে রাখতে পারে না। এ কারণে ১৯ জুন অ্যাপোলো হাসপাতালে তার চিকিৎসা করানো হয়।

তিনি বলেন, গত রাতে আমি স্বামীসহ এক রুমে ছিলাম। আর পাশের রুমে ভাই দেলোয়ারকে নিয়ে বাবা-মা ছিলেন। রাত ১১টা নাগাদ আমার আব্বা আম্মা দেখতে পান রুমের দরজা খোলা। ভাই ঘরের মধ্যে নেই। এরপর ছুটে আসি নিচে। পথে বের হয়ে তার খোঁজ করি। দীর্ঘ এক ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর রাতেই পার্কস্ট্রিট থানায় ডায়েরি করি।

কামরুন্নাহার আরও বলেন, হোটেলের সিসিটিভিতে দেখা যায় ১১টা ২৭ মিনিটে হোটেল ছেড়ে ভাই বাইরে চলে যাচ্ছে। কিন্তু রাত ১১টা থেকে আজ প্রায় ১৮ ঘণ্টা হয়ে গেল এখনো পুলিশ কিছু উদ্ধার করতে পারেনি। খুবই টেনশনে আছি। ভাইকে সাত ঘণ্টা পর পর মেডিসিন খেতে হয়। না হলে ভাইয়ের কথা আটকে যায়, খাবারও গিলতে পারে না। খুবই টেনশনে আছি।  

তিনি বলেন, পার্কস্টিট থানার পাশাপাশি পুলিশের সদর দপ্তর লালবাজার থানাও সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছে আমাদের। দোয়া করবেন ভাইকে নিয়ে যেন দেশে ফিরে যেতে পারি।

এর আগে একইভাবে গত ২৪ মে চিকিৎসা করাতে কলকাতায় এসে নিখোঁজ হন আরও এক বাংলাদেশি যুবক। রাজশাহী জেলার রাজপাড়া লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম শিহাবও (২৪) ছিলেন মানসিক ভারসম্যহীন। মা-বাবার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় মানসিক রোগের চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন তিনি। তার নামেও লালবাজার থানায় নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে। তবে এখনও তাকেও খুজে পাওয়া যায়নি। শিহাবের পরিবার উঠেছিল মার্কুইস স্ট্রিট সংলগ্ন কলিং স্ট্রিটের শামীমা হোটেলে।

শিহাবের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, ২২ মে ছেলের চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসেছিলাম। ২৪ মে ছেলে হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। থানায় মিসিং ডায়েরি করেছিলাম। স্থানীয় সিসিটিভি ফুটেজেও দেখতে পাই ছেলে হোটেল থেকে একা বের হয়ে গাড়ির রাস্তার দিকে যাচ্ছে। এরপর কিছু জানি না। প্রায় একমাস হয়ে গেল। আর পারছি না। ছেলেকে নিয়েই দেশে ফিরতে চাই।

দুই যুবকের নিখোঁজের ঘটনার কোনোটির সুরাহা করতে পারেনি পুলিশ। কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা সব ঘটনাই পুলিশকে জানিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে তারা যোগাযোগ রেখে চলছে।

তবে কাকতালীয় হলেও ঘটনা দুটির খুবই মিল রযেছে। তবে এটি কাকতালীয় নাকি কোনো রহস্য, তা উন্মোচন করতে চেষ্টা করছে কলকাতা পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২৪
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।