ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বুড়িমারী বন্দরে নেই থার্মাল স্ক্যানার, করোনা ছড়ানোর আশঙ্কা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২০
বুড়িমারী বন্দরে নেই থার্মাল স্ক্যানার, করোনা ছড়ানোর আশঙ্কা

লালমনিরহাট: করোনা ভাইরাসে মহামারী আকার ধারণ করা চীনের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশে প্রবেশ পথ বুড়িমারী স্থলবন্দরে নেই ভাইরাস শনাক্তের থার্মাল স্ক্যানার। এ পথে ভাইরাস দেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

চীনের প্রতিবেশী দেশ ভারত, ভুটান ও নেপাল হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ পথ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরে করোনা ভাইরাস বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। থার্মাল স্ক্যানার ছাড়াই স্বাস্থ্যকর্মীদের দ্বারা প্রাথমিক পরীক্ষা করেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের।

তবে যানবাহনের চালকদের এ প্রাথমিক পরীক্ষাও করা হচ্ছে না। যদিও এ ভাইরাস শরীরে প্রবেশের দুই সপ্তাহ পর্যন্ত কোনো বাহ্যিক লক্ষণ প্রকাশ পায় না। তাই এ পথে করোনা ভাইরাস দেশে ছড়ানোর আশঙ্কা করছে সুধীজন।

জানা গেছে, চীনে সাম্প্রতিক সময় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে নয় হাজারের অধিক। ফলে দেশটিসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের প্রতিবেশী দেশ ভারত ছাড়াও নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের ত্রিদেশীয় বাণিজ্যিক সম্পর্কের প্রাণকেন্দ্র লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর। শুধু ব্যবসা-বাণিজ্যই নয়। এ স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে প্রতিদিন প্রায় অর্ধসহস্রাধিক পাসপোর্টধারী যাত্রী এসব দেশে যাতায়ত করছে। যার বেশির ভাগই চিকিৎসার জন্য যাতায়ত করেন। এছাড়াও এসব দেশের শত শত ট্রাকের চালক সহকারী চালক প্রতিদিন বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এবং দেশের চালকরাও ভারতে প্রবেশ করছে। সবমিলে ত্রিদেশীয় প্রবেশ পথও ধরা হয় বাংলাদেশের বুড়িমারী ও ভারতের চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দরকে।  

এমন গুরুত্বপূর্ণ এ প্রবেশ পথে স্বাস্থ্যকর্মীরাই হাত দেখে প্রাথমিক পরীক্ষা করেই যাত্রীদের ছেড়ে দিচ্ছেন। চিকিৎসকদের ভাষ্য মতে, করোনা ভাইরাস শরীরের প্রবেশের দুই সপ্তাহ পরে লক্ষণ বা প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পায়। ভাইরাস প্রবেশের ১৪ দিন আগে কোনো লক্ষণ বুঝার উপায় নেই। এক্ষেত্রে ভাইরাস শনাক্তে থার্মাল স্ক্যানারে স্ক্যানিংয়ের বিকল্প নেই। কিন্তু এমন গুরুত্বপূর্ণ পথে কোনো থার্মাল স্ক্যানার না থাকায় এ পথ দিয়ে করোনা ভাইরাস দেশে ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সুধীজন।  থার্মাল স্ক্যানার ছাড়াই স্বাস্থ্যকর্মীদের দ্বারা প্রাথমিক পরীক্ষা করেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের। সরকারিভাবে বুড়িমারী স্থলবন্দরে করোনা ভাইরাসের সতর্কতা জারি করে স্বাস্থ্যকর্মীদের চার সদস্যের একটি দল নিয়ে মেডিক্যাল টিম বসানো হয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীরা যাত্রীদের জ্বর, সর্দি হয়েছে কী না? এবং সম্প্রতি সময় চীনে সফর করেছেন কিনা? এসব প্রশ্ন করেই তবে তারা যাত্রীদের শরীরের বাহ্যিক অবস্থা দেখেই ছেড়ে দিচ্ছেন। দেশে প্রবেশ ও বাইর হওয়া ট্রাকচালক এবং শ্রমিকদের কোনো রকম পরীক্ষা করা হচ্ছে না। ফলে বাংলাদেশে এ ভাইরাস বহনকারী মানুষ প্রবেশের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খন্দকার মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, এ চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন চার শতাধিক পাসপোর্টধারী যাত্রী বাংলাদেশ ও ভারতে যাওয়া-আসা করেন। বেশিরভাগ যাত্রীরা চিকিৎসার জন্য যান ভারতে। এ কারণে থার্মাল স্ক্যানার ও শরীর স্ক্রিনিং যন্ত্রপাতি বসানো প্রয়োজন।  

লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কাসেম আলী বাংলানিউকে বলেন, বুড়িমারী ও ভারতের চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দর চেকপোস্ট দিয়ে চীনা নাগরিক আসার সম্ভাবনা নেই। যে কারণে সেখানে শরীর স্ক্রিনিং যন্ত্রপাতি বসানো হয়নি। তবে প্রয়োজন হলে অবশ্যই বসানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২০
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।