ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ডিম নিয়ে ৬ ভুল ধারণা

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৭
ডিম নিয়ে ৬ ভুল ধারণা দিনে তিনটি ডিম স্বাস্থ্যের জন্য পুরোপুরি নিরাপদ

ঢাকা: বিশ্ব ডিম দিবস শুক্রবার (১৩ অক্টোবর)। ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতিবছর অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবার বিশ্ব ডিম দিবস পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই দিবসটির মূল লক্ষ্য মানুষকে ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানানো এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো। 

ডিমের নানাবিধ পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সবাই কম-বেশি জানে। পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার হিসেবে বিশ্বজুড়ে ডিমের ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও ডিম নিয়ে মানুষের মনে রয়ে গেছে অনেক ভ্রান্ত ধারণা।

এ ধরনের কিছু প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা সম্পর্কে জানিয়েছেন পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা।

ডিম রক্তের কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে
অনেকে মনে করে থাকেন, ডিম মানুষের রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ উচ্চমাত্রায় বৃদ্ধি করে। পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে, সব ধরনের কোলেস্টেরল দেহের জন্য সমান ক্ষতিকর নয়। ‘স্যাচুরেটেড ফ্যাট’ নামক খারাপ কোলেস্টেরল দেহের রক্তচাপ বাড়ায় এবং হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করে। ডিমে এই ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের উপস্থিতি কম। তাছাড়া ডিমের সাদা অংশ ও কুসুমে কোলেস্টেরলের পরিমাণ আলাদা। ডিমের কুসুমে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি। কোলেস্টেরল একেবারেই পরিহার করতে চাইলে ডিমের সাদা অংশ নির্দ্বিধায় খাওয়া যেতে পারে। দিনে দু’টো ডিমের সাদা অংশ দেহের প্রয়োজনীয় প্রোটিন চাহিদা মেটাতে সক্ষম বলে মত দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।

ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে ডিম ধোয়া
ডিমে সালমোনেলা নামক এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। এই ব্যাকটেরিয়ার ফলে পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি ও মাথা ব্যথাসহ ইত্যাদি স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। প্রচলিত একটি বিশ্বাস আছে, ডিম ব্যবহারের আগে তা ধুয়ে নিলে এই ব্যাকটেরিয়া চলে যায়। কিন্তু এ ধারণা ভুল। সালমোনেলা থাকে ডিমের ভেতরে। তাই খোসাসহ ডিম ধুলে তা যাওয়ার কথা নয়। তবে ডিম রান্না করে নিলে ব্যাকটেরিয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়।

বেশি ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর
অনেকেই মনে করেন, দিনে একটির বেশি ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেন, দিনে তিনটি ডিম স্বাস্থ্যের জন্য পুরোপুরি নিরাপদ। ডিম প্রোটিনের একটি আদর্শ উৎস। তাই প্রোটিনের চাহিদা পূরণের জন্য ডিম আবশ্যিক বলে মনে করেন পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা। কেউ যদি নিরামিষাশী হয়ে থাকেন, তবে অবশ্যই ডিম খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।

লাল ডিম ভাল, নাকি সাদা ডিম?
অনেকে মনে করেন, লাল ডিম ও সাদা ডিমের পুষ্টিগুণ ভিন্ন। ডিম লাল হবে নাকি সাদা, তা নির্ভর করে মুরগির পিগমেন্ট উৎপাদন ক্ষমতার উপর। প্রকৃতপক্ষে সব রঙের ডিমের পুষ্টি উপাদান একই।

কাঁচা ডিমে প্রোটিন বেশি
অনেকে মনে করেন, রান্না করা ডিমের তুলনায় কাঁচা ডিমে বেশি প্রোটিন থাকে। কিন্তু এর কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ নেই। বরং কাঁচা খেলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।  

ডিম ও দুধ একসঙ্গে খাওয়া ঠিক নয়
ডিম এবং দুধ, দু’টোই প্রোটিনের আদর্শ উৎস। তবে ডিমের মধ্যে প্রোটিন ছাড়াও থাকে অ্যামিনো অ্যাসিড, ভিটামিন ও আয়োডিন। অপরদিকে দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম, যা দেহের বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। তাই সেদ্ধ ডিমের সঙ্গে এক গ্লাস দুধ প্রোটিনের পাশাপাশি অন্যান্য দরকারি পুষ্টি উপাদানগুলোর চমৎকার সামঞ্জস্য সৃষ্টি করে। ডিম ও দুধ একসঙ্গে খেতে কোনোই সমস্যা দেখেন না বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৩
এনএইচটি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।