ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

প্রসূতি মা ও শিশু সেবায় দ. এশিয়ায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৭
প্রসূতি মা ও শিশু সেবায় দ. এশিয়ায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য বক্তব্য রাখছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ; ছবি- বাদল

ঢাকা:  বাংলাদেশ চিকিৎসা খাতে ব্যাপক উন্নতি অর্জন করেছে উল্লেখ করে প্রসূতি মা ও শিশু চিকিৎসা সেবা খাতে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় এখন একটি উল্লেখযোগ্য নাম বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) মহাখালীতে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) কনফারেন্স হলে সরকারের সঙ্গে আইসিডিডিআরবি'র স্বাস্থ্যখাতে সহযোগিতার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে  মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।  

মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যখাতকে বর্তমান সরকার অনেক গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছে সব সময়।

যে কারণে এতটা উন্নতির পথে এ খাতে এগিয়েছে বাংলাদেশ। সরকারের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য যে সকল প্রতিষ্ঠান ব্যাপক অবদান রেখেছে তার মধ্যে অন্যতম আইসিডিডিআরবি। কলেরা ও ডায়রিয়া রোগ এক সময় এদেশে মারাত্মক মহামারী ও ভয়ংকর রোগ হিসেবে চিহ্নিত ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে তা খুব স্বাভাবিক রোগ হিসেবে চিহ্নিত তার প্রথম ও প্রধান কারণ আইসিডিডিআরবি। এখনো আইসিডিডিআরবির খাবার স্যালাইন ডাইরিয়ায় সবচেয়ে বিশ্বস্ত নাম।

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্বের মধ্যে একটি উন্নত দেশ জার্মানি। তারাও এক লাখ বহিরাগতদের স্থান দেয়ার সাহস পায় নি। কিন্তু বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ হবার পরও ১০ লাখ রোহিঙ্গা বা বহিরাগতদের আশ্রয় দেয়ার সাহস দেখিয়েছে। তা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মত বিচক্ষণ নেত্রীর জন্য। মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা সম্পর্কে একেবারে অপরিচিত ও অজ্ঞ ছিল। তারা এই সেবার সঙ্গে পরিচিত হয়েছে বাংলাদেশে এসে। এখন সেখানে বড় ধরণের রোগের আশঙ্কা করা যাচ্ছে। এই জন্য আমি আইসিডিডিআরবি'র বিচক্ষণ দলকে প্রস্তুত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। ঠিক যেভাবে এর আগেও তারা বাংলাদেশকে সহায়তা করেছেন এবং করছেন।  

জঙ্গিবাদ ইস্যুতে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে সফল রাষ্ট্র উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর চেয়ে ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ভালো নির্দেশনা ও দক্ষতার জোরেই এ সাফল্য আমাদের ঘরে এসেছে। এখানে আবারও বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণতার প্রমাণ মিলেছে।  

এছাড়া চিকুনগুনিয়া রোগ নির্মূলের ক্ষেত্রেও আইসিডিডিআরবি ব্যাপক অবদান রেখেছে এবং এভাবে কাজ করতে থাকলে ২০১৭ সালের ওয়ার্ল্ড হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ডের মত নোবেল জয়ের সম্ভাবনাতেও আইসিডিডিআরবি থাকবে বলে মন্ত্রী মন্তব্য করেছে।  

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিডিডিআরবি'র নির্বাহী পরিচালক জন ডি ক্লিমেন্স, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, আইসিডিডিআরবি'র ডেপুটি নির্বাহী পরিচালক সায়েদ মঞ্জুরুল ইসলাম, হাসপাতাল শাখার প্রধান আজহারুল ইসলামসহ আইসিডিডিআরবি'র বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

বক্তারা বলেন, আইসিডিডিআরবি এ পর্যন্ত ১২ হাজার গবেষণা করেছে এবং তার মধ্যে ৩৫০ টি মৌলিক গবেষণা বিশ্বজোড়া সমাদৃত হয়েছে। এ হাসপাতালে প্রতি বছর ৩২ কোটি টাকা ব্যয় হয় বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করতে গিয়ে। কিন্তু বর্তমান সময়ে আইসিডিডিআরবি'র স্থায়ী বেশকিছু ডোনারদের সরে দাঁড়ানোর কারণে আমরা কিছুটা সংকটে পড়তে যাচ্ছি। তাই অর্থ সংকুলান করাটা আমাদের জন্য একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও আমরা ২০১৭ সালের ওয়ার্ল্ড হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছি।  

বক্তারা আরও বলেন, ডায়রিয়া কলেরা ছাড়াও মা ও শিশুর চিকিৎসা সেবা, হৃদরোগসহ পরিবেশ বিপর্যয় ও নন কমিউনিকেবল রোগ নিয়ে সেবা ও গবেষণা করে আইসিডিডিআরবি। বাংলাদেশের সঙ্গে পঞ্চাশ বছরের অধিক সময় ধরে কাজ করতে করতে আইসিডিডিআরবি ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে এমনকি উত্তর কোরিয়ার যে অঞ্চলে অন্য রাষ্ট্রের কেউ যেতে পারেনি সেখানে আইসিডিডিআরবি গিয়ে স্বাস্থ্যসেবার কাজ করে এসেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৭
এমএএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।