ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

আকিজ আদ-দ্বীনে কম খরচে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৭
আকিজ আদ-দ্বীনে কম খরচে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ! খুলনার আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ; ছবি: মানজারুল ইসলাম

খুলনা: দেশে সরকারি মেডিকেল কলেজের আসনসংখ্যা সীমিত।একারণে অনেকেরই সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয় না। সে স্বপ্ন পূরণ করছে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো।

কিন্তু সেখানেও বিপত্তি। কিছু কিছু বেসরকারি মেডিকেলে পড়তে গিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ব্যাংক ব্যালান্সের বারোটা বেজে যায়।

উজ্জ্বল ব্যতিক্রম খুলনার আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ। কলেজটি অনেক কম খরচে চিকিসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করছে।

অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাব, শিক্ষার নিম্নমান ও আরও নানা কারণে অনেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজের যৌক্তিকতা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। তকে আদ-দ্বীনে রয়েছে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা। এ কারণে খুলনা অঞ্চলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পছন্দের শীর্ষে আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ।

...সরেজমিনে খুলনা-যশোর মহাসড়কের পাশের আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে সামনের ফুলের বাগান ও বিভিন্ন গাছ-গাছালির সবুজের সমারোহে চোখ জুড়িয়ে যায়। প্রবেশের পর ভিতরের পরিবেশ এতো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন যে মন ভরে যায়।

সাড়ে ৭ বিঘা জমির উপর ৮ তলা ভবনে সাজানো গোছানো মনোমুগ্ধকর পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের পড়তে পাঠিয়ে অভিভাবকরা নিশ্চিন্তেই থাকেন। সম্পূর্ণ আবাসিক ক্যাম্পাস হওয়ায় এই মেডিকেল কলেজের সব কিছুই চলে খুব নিয়মতান্ত্রিকভাবে।

খুলনার আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজআদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. পি. কে. রায় বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৪ সালের কলেজটি উদ্বোধনের পর এটি ইতিমধ্যে বিশেষ একটি অবস্থানে পৌঁছে গেছে। এই মেডিকেল কলেজে বর্তমানে অধ্যয়নরত আছে দুটি ব্যাচে ৮১ জন শিক্ষার্থী। এখানে ছাত্রীদের জন্য দুটি ও ছাত্রদের জন্য ১টি আবাসিক হল আছে। অনেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভাড়া করে শিক্ষক আনলেও আমাদের রয়েছে নিজস্ব অভিজ্ঞ শিক্ষক।

তিনি জানান, ডাক্তার হতে গেলে সবার আগে সুন্দর পরিবেশ দরকার। তা রয়েছে আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পাঠ্য ও গবেষণার বইয়ের বিশাল সংগ্রহ নিয়ে ক্যাম্পাসে রয়েছে মনোরম একটি লাইব্রেরি। লাইব্রেরিতে ১৫শ’ ২৬টি বই রয়েছে। এছাড়া দেশি-বিদেশি জার্নাল রয়েছে ৭০টি। আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. শেখ মহিউদ্দিন কলেজটিকে সমৃদ্ধ করতে অনেক আন্তরিক। কলেজটিতে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের জন্য। এখানে রয়েছে গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রায় নিম্ন খরচে পড়াশোনার ব্যবস্থা।

অধ্যক্ষ জানান, সরকারি নিয়মে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এমবিবিএস ও ইন্টার্নি কোর্সের জন্য সর্বোচ্চ ১৫ লাখ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা আছে। সেখানে আমরা প্রথম ব্যাচে জনপ্রতি ৬ লাখ ৭৫ হাজার ও দ্বিতীয় ব্যাচে ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা ফি নিচ্ছি।

তিনি বলেন, কলেজটি সম্পূর্ণ আবাসিক। অনেক জায়গায় ভর্তির পর শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা চিন্তায় থাকেন, তাদের সন্তান কোথায় থাকবে কোথায় খাবে। কিন্তু এখানে সে চিন্তা নেই। এখানে শিক্ষার্থীরা সেগুন কাঠের খাটে ঘুমায়। দামি ফার্নিচার ব্যবহার করে। অন্য যে কোনো মেডিকেল কলেজের চেয়ে খরচ কম হওয়ায় এরই মধ্যে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা নতুন ব্যাচে ভর্তি হওয়ার জন্য খোঁজ খবর নিচ্ছেন।

তৃতীয় ব্যাচে এবার কত নেওয়া হবে জানতে চাইলে আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজের উপ-অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মো. আশফাকুর রহমান বলেন, এখনও নির্ধারণ হয়নি। তবে আগের চেয়ে বাড়বে না। বরং কমতে পারে।

শিক্ষার মান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কলেজটিতে ৬৭জন অভিজ্ঞ শিক্ষক রয়েছেন। যারা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে পাঠদান করে থাকেন।

কলেজের স্পেশালিটি সম্পর্কে তিনি বলেন, বেশির ভাগ মেডিকেল কলেজে একটি বিভাগে একজন ফুল টাইমার প্রফেসর থাকেন। বাকিরা পার্ট টাইমার। আমাদের কলেজে প্রতিটি বিভাগে ২জন ফুল টাইমার প্রফেসর রয়েছেন। যারা তরুণ ও কর্মঠ।

...মেডিকেল কলেজের ২০১৬-১৭ এমসি-০২ ব্যাচে শিক্ষার্থী পিয়াস কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ও ল্যাব ক্লাসে অংশ নিতে হয়। যেহেতু স্বাস্থ্যশিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ব্যবহারিক, সেহেতু এখানে ব্যবহারিক ও ল্যাবে গুরুত্ব সহকারে শিক্ষাদান করানো হয়। আবাসিক ব্যবস্থাও অনেক ভালো।

আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-ব্যবস্থাপক মো. হোসেন আলী বাংলানিউজকে বলেন, দক্ষ চিকিৎসক তৈরির দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে চলছে কলেজটি। সুবিশাল ডিজিটাল গ্যালারি ও হলরুমসহ বিষয়ভিত্তিক পাঠদানের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, ল্যাব ও যন্ত্রপাতি। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শ্রেণীকক্ষ।

আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশনের পরিচালক (মেডিকেল কলেজ) ডা. তরিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ডাক্তার হতে গেলে একটি ভালো হাসপাতাল প্রয়োজন যা আমাদের রয়েছে। আন-দ্বীন মেডিকেল কলেজটির শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকতে হয়। শ্রেণির কাজ যথাযথভাবে আদায় করা হয় এবং বিষয়ভিত্তিক পাঠদান শেষে নিয়মিত সাপ্তাহিক, মাসিক ও টিউটোরিয়াল পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষায় খারাপ ফল করলে তাকে সতর্ক করা হয় এবং অভিভাবকদের ফল জানানো হয়।

তিনি বলেন, আমাদের চারটি কলেজ, ৬টি হাসপাতাল রয়েছে। যাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালোটি খুলনায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৭
এমআরএম/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।