ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

স্কয়ার-ল্যাবএইডে এ কেমন চিকিৎসা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৫ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৭
স্কয়ার-ল্যাবএইডে এ কেমন চিকিৎসা! ল্যাবএইড ও স্কয়ার হাসপাতাল

আমি একজন মেজর থ্যালাসেমিয়া রোগী। বিভিন্ন সময় অসুস্থতাজনিত কারণে এসব হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন হয়েছে, সে অভিজ্ঞতা লিখছি।

২০১৪ সালে আমি এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলাম। পরীক্ষার আগের দিন রাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।

হাত পা অবশ হয়ে যায়। আম্মা আমাকে ল্যাবএইড হাসপাতালের এমারজেন্সিতে নিয়ে যান। সেখানে প্রথমেই তারা থ্যালাসেমিয়া রোগী হিসেবে আমাকে ভর্তি করতে চায়নি। ডাক্তার ও দেখবে না- এমন পরিস্থিতি। আমাদের পরিচিত ডাক্তারদের জানানো হলে তারা ল্যাবএইডের অথরিটিকে জানান। এরপর তারা আমার চিকিৎসা শুরু করে।

দ্বিতীয় ঘটনা
স্কয়ার হাসপাতাল, ২০১৬ সালে। এবারও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হই। যেটা ঠান্ডাজনিত কারণে হয়েছিল এবং মাত্র একদিন এন্টিবায়োটিক ওষুধ খেয়ে ভালোও হয়ে যায়। আমার প্রতিমাসে যাবতীয় টেস্টসহ ব্লাড ওয়াশ করা, প্যাক সেল রক্ত পরিসঞ্চালনে তখন প্রায় ৬৫০ টাকা ব্যয় হতো (বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া হাসপাতাল)। অথচ স্কয়ারে একই পদ্ধতিতে ব্লাড ট্রান্সফিউশনে আমার প্রায় ৭ হাজার টাকা ব্যয় হয়।

দু’দিন ভর্তি থাকা অবস্থায় ১৩ রকমের ব্লাড টেস্ট করা হয়। যার মধ্যে 'হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রফরোসিস' নামের টেস্টটি ছিল। এ টেস্টটি রক্তের জিন প্রকৃতি জানার জন্য করা হয় এবং এ টেস্টের মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া শনাক্ত করা হয়। টেস্টটি যার রক্ত নিয়ে করা হয় তার দেহে ৪ মাসের মধ্যে রক্ত পরিসঞ্চালন করা হলে রিপোর্ট সঠিক আসবে না। বরং যার রক্ত পরিসঞ্চালিত হয়েছে তার জিন প্রকাশ করবে।

আরও পড়ুন: অর্থ ব্যয় করছেন, সেবা পাচ্ছেন তো?

আমার ৩ মাস বয়সে এ টেস্টটি করে থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়ে। অথচ তারা আমাকে রাত ১টায় ব্লাড লাগিয়ে দিয়ে যায়, মাঝরাতে যা শেষ হয়। এবং সকাল ৯টায় টেস্ট করার জন্য আমার ব্লাড সংগ্রহ করে। সেদিন সুস্থ হয়ে যাওয়ায় দুপুরে ডাক্তার দেখিয়ে আমি রিলিজ পেয়ে বাসায় ফিরে যাই।

আরও পড়ুন: সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখতে দিলো না স্কয়ারের ডাক্তার

পাঁচদিন পর আমাদের ফোন করে জানানো হয় আপনার একটা টেস্টের রেজাল্ট ভুল আসছে আপনাকে আবার স্যাম্পল দিতে হবে। কোন টেস্ট সেটি আমরা তখনও জানি না। আবার গিয়ে স্যাম্পল দেই এবং ৭ দিন পর রিপোর্ট নেই। তখন তারাই বলে এ টেস্টটি ট্রান্সফিউশন ডিপেন্ডেন্ট থ্যালাসেমিক রোগীর ক্ষেত্রে কাজ করে না। রিপোর্টে লেখাই ছিল ৪ মাসের মধ্যে ট্রান্সফিউশন না করে টেস্টের স্যাম্পল দিতে হবে যা মেজর থ্যালাসেমিক রোগীর পক্ষে সম্ভব নয়।

টেস্টটি সাধারণ ব্লাড টেস্ট থেকে বেশি ব্যয়বহুল, সম্ভবত ৩ বা ৪ হাজার টাকা লেগেছিল তখন স্কয়ারে। যা আমি যেখানে ট্রান্সফিউশন করি সেখানে ১৮শ টাকার মধ্যে করা যায়।

সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে অাপনার অভিজ্ঞতা লিখে জানাতে পারেন [email protected] এই মেইলে।

গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের শিক্ষার্থী
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

**লেখা ও মতামত ভুক্তভোগীর।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৭
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।