ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বসুন্ধরার পরশে আলো-আঁধার পরখ করবেন জাইমুনা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৬
বসুন্ধরার পরশে আলো-আঁধার পরখ করবেন জাইমুনা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ছানি রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্ধ হতে বসেছিলেন টাঙ্গাইলের সখিপুরের জাইমুনা আখতার। পুত্র সন্তানহীন এই বৃদ্ধার সামর্থ্য নেই যে ডাক্তার দেখিয়ে ছানি অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচার করাবেন। তাই মৃত্যুর আগে পৃথিবীর আলো দেখার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন।

ঢাকা: ছানি রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্ধ হতে বসেছিলেন টাঙ্গাইলের সখিপুরের জাইমুনা আখতার। পুত্র সন্তানহীন এই বৃদ্ধার সামর্থ্য নেই যে ডাক্তার দেখিয়ে ছানি অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচার করাবেন।

তাই মৃত্যুর আগে পৃথিবীর আলো দেখার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন।
 
এমন সময় আবারও দু’চোখ ভরে পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ করে দিতে এগিয়ে এলো বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট। বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) জাইমুনার এক চোখের ছানি অপসারণের অস্ত্রোপচার করেছে তারা। একেবারে বিনা পয়সায়। আরেক চোখের অস্ত্রোপচারও করা হবে কিছুদিন পর। তারপর জাইমুনা পরখ করে নেবেন আলো-আঁধারের পার্থক্য কী!

কেবল জাইমুনাই নন, সখিপুর, ভালুকা, বাসাইল, কালিহাতি ও ঘাটাইলসহ টাঙ্গাইলের বিভিন্ন অঞ্চলের মোট ৩৮ জন দরিদ্র রোগীর চোখের সফল অস্ত্রোপচার করেছে বসুন্ধরা আই হসপিটাল।
 
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ডি ব্লকে অবস্থিত চক্ষু হাসপাতালটি ‘আউটরিচ’ কর্মসূচির আওতায় ‘আই ক্যাম্প’ করে ওই রোগীদের অস্ত্রোপচার করেছে।
 
গত ২৯ নভেম্বর সখিপুরের বড় চওনা গ্রামে ‘প্রবীণ কল্যাণ কেন্দ্র’ নামে একটি সংগঠনের কর্মীর সঙ্গে নিয়ে ‘আই ক্যাম্প’ করে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট। ওই ক্যাম্পে সখিপুরসহ অন্যান্য উপজেলার ৫শ’র মতো রোগী চিকিৎসা বা পরামর্শ নেন। সেই রোগীদের মধ্যে থেকে চোখের ছানি অপসারণসহ কয়েক ধরনের অস্ত্রোপচারের জন্য ৬৮ জনকে বাছাই করা হয়।
 
এদের মধ্যে থেকে ৩৮ জন রোগী অস্ত্রোপচারে রাজি হন। তাদের গত মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) নিজস্ব খরচে ঢাকায় নিয়ে এসে থাকা-খাওয়া এবং অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করে ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও বসুন্ধরা গ্রপের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এই চক্ষু হাসপাতাল।

ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমবুধবার সকাল থেকে শুরু হয় অস্ত্রোপচার। অধ্যাপক ডা. মো. সালেহ আহমদের নেতৃত্বে চক্ষু বিশেষজ্ঞদের একটি দল এই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন।
 
বসুন্ধরা আই হসপিটাল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিমাসেই এমন আউটরিচ কর্মসূচির মাধ্যমে বিনা পয়সায় দরিদ্র রোগীদের চক্ষু সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা। এর অংশ হিসেবে গত মাসে হাসপাতালের পুরো টিম নিয়ে তারা টাঙ্গাইলের সখিপুরে যায়।  সেখান থেকে ৬৮ জনকে অস্ত্রোপচারের জন্য বাছাই করা হয়। অস্ত্রোপচারে ঢাকায় আসেন এই ৩৮ জন।  

এ বিষয়ে প্রবীণ কল্যাণ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. শাহজালাল চৌধুরী বেলাল বাংলানিউজকে বলেন, চোখের ছানি পড়া রোগ বেশি হয় সাধারণত বয়স্কদের। এর মধ্যে যারা দরিদ্র তাদের অনেকেই পয়সার অভাবে সঠিক চিকিৎসা নিতে পারেন না।  

তিনি বলেন, বসুন্ধরা আই হসপিটালের বিনা পয়সায় চোখের চিকিৎসা দেওয়ার খবর জানতে পেরে আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং সেখানকার ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আমাদের সখিপুরের বড় চওনা গ্রামে গিয়ে রোগী দেখতে রাজি হলে আশেপাশের উপজেলায় মাইকিং করে দুস্থ রোগীদের জড়ো করি।
 
হাসপাতালটি এর আগে এমন আরও সাতটি আই ক্যাম্পে বিনামূল্যে প্রায় ২০০ রোগীর চোখের অস্ত্রোপচার করে। আই ক্যাম্পগুলো করা হয় বরিশাল, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকার কালা চাঁদপুর, কড়াইল বৌবাজার, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ও সাভারের আমান স্পিনিং মিলসে।
 
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বসুন্ধরা আই হসপিটালে এসে বিনা পয়সায় অস্ত্রোপচার করে অন্ধত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া দুস্থ রোগীর সংখ্যা ৩৭০ জন।  
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
এসআই/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।