ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

উচ্চ রক্তচাপ! সতর্ক হোন এখনি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৪
উচ্চ রক্তচাপ! সতর্ক হোন এখনি ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: বর্তমানে মানুষের শরীরে উচ্চ রক্তচাপ ভয়াবহ আকারে দেখা দিচ্ছে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও খাদ্যাভাসের ফলে সৃষ্ট মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এই রোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে।



অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের ফলে মানবদেহের চোখ, মস্তিষ্ক, হৃদযন্ত্র, কিডনি ও রক্তনালীর স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। তাই জনগণকে উচ্চ রক্তচাপ এবং উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগসমূহ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানানো, সচেতন করা ও এর চিকিৎসা সম্পর্কে অবহিত করার জন্য প্রতি বছর ১৭ মে ‘বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস’ পালন করা হয়।  

উচ্চ রক্তচাপ কী: হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ হলো একটি জটিল দীর্ঘস্থায়ী (ক্রনিক) স্বাস্থ্যগত সমস্যা, যার ফলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। দীর্ঘদিন যাবত উচ্চ রক্তচাপে ভোগা অনেক রোগী জানেন না যে, তার উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। অধিকাংশ সময় উচ্চ রক্তচাপের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ এবং উপসর্গ থাকে না। কিন্তু যখন উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা করা হয় না তখন এটি ধমনী এবং মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মারাত্বক ক্ষতিসাধন করে। এজন্য উচ্চ রক্তচাপকে ‘নীরব ঘাতক’ বলা হয়।

পরিসংখ্যান: উচ্চ রক্তচাপ বিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। সারাবিশ্বে ১৫০ কোটি মানুষ আক্রান্ত এবং প্রতিবছর ৯৪ লাখ লোক উচ্চ রক্তচাপজনিত জটিলতায় মৃত্যুবরণ করছে। হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং কিডনি রোগের জন্য উচ্চ রক্তচাপ একটা মারাত্মক রিস্ক ফ্যাক্টর বা ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান।

যেভাবে বুঝবেন আপনার উচ্চ রক্তচাপ: সাধারণত ১২০/৮০ এমএমএইচজি এর সমান বা কম রক্তচাপকে স্বাভাবিক বলে ধরে নেয়া হয়। যদি আপনার রক্তচাপ ১৪০/৯০ এমএমএইচজি এর অধিক কিংবা ১৩৫/৮৫ এমএমএইচজি এর অধিক হয় তাহলে তা উচ্চ রক্তচাপের পর্যায়ে পড়তে পারে। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে করণীয়: উচ্চ রক্তচাপের শিকার হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধে কতিপয় পদক্ষেপ নিন। যেমন ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন, অতিরিক্ত ও পাতে আলগা লবণ পরিহার করুন, তামাক জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন, শাকসবজি ও ফলমূল বেশি খান, নিয়মিত ব্যায়াম করে সক্রিয় থাকুন এবং নিয়মিত রক্তচাপ মাপুন।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে যা করবেন: চিকিৎসকের পরামর্শ মতো নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন, ডায়াবেটিস এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করুন, প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে কিডনির অবস্থা দেখুন, স্বাস্থ্যসম্মত জীবনপ্রণালী অনুসরণ করুন, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে অতিসত্ত্বর ডাক্তারকে অবহিত করুন এবং নিয়মিত রক্তচাপ মাপুন।  

বারডেম হাসপাতালের ডায়াবেটিক্স ও ফেমিলি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আহসান উল্লাহ এর মতে সঠিক ও স্বাভাবিক ওজন রাখলে, ধূমপান ত্যাগ করলে, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করলে ও ফাস্ট ফুড পরিহার করলে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা কম।

তিনি আরো জানান, বাংলাদেশে দিন দিন উচ্চ রক্তচাপে ভোগা রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। একমাত্র সচেতনতাই পারে এ ‘নীরব ঘাতক’ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে পারে।
   
তথ্যসূত্র: হাইপারটেনশন কমিটি অব ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও ইন্টারনেট।  

বাংলাদেশ সময়: ০৩১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।