ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে নিখরচায় ৩৯ জনের ছানি অপারেশন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২৩
বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে নিখরচায় ৩৯ জনের ছানি অপারেশন ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে গরিব ও দুস্থ ৩৯ জন রোগীর নিখরচায় চোখের ছানি অপারেশন করা হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাবরিনা সোবহান রোডে অবস্থিত বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও এ কে এম আবু তাহের ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে দিনব্যাপী এ ফ্রি অপারেশন করা হয়।

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবতৈনিক পরিচালক ও ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদের তত্ত্বাবধানে সার্জারিতে অংশ নেন- ডা. রুবিনা আক্তার, ডা. মজুমদার গোলাম রাব্বি ও ডা. তাসরুবা শাহনাজ। ২৩ জন পুরুষ ও ১৬ জন নারীসহ মোট ৩৯ জন রোগীর অপারেশন করা হয়েছে।

কুমিল্লার বরুড়া থানার বড় হরিপুর গ্রাম থেকে চোখের ছানি অপারেশন করতে এসেছেন দাসু বালা (৫৫) নামে এক বৃদ্ধা। চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে শুধু ছোট ছেলে তার সঙ্গে থাকেন। বাকিরা মায়ের দেখাশোনা করেন না। কয়েক বছর যাবৎ তিনি চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন। কিন্তু গত তিন তার মাসে চোখের সমস্যা আরও বেশি প্রকোপ হয়। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না। বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও এ কে এম আবু তাহের ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে বিনামূল্যে চোখের পানি অপারেশন করতে পেরে এক প্রকার আনন্দিত এ নারী।

কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, চোখে ছানির কারণে কোনো কিছু ভালো করে দেখতে পাই না। সবকিছুই কেমন যেন অন্ধকার অন্ধকার লাগে। চলাফেরা করতেও সমস্যা হয়। আশা করি এখান থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পর আবার সবকিছু ভালো করে দেখতে পারব।  

কুমিল্লার বরুড়া থানার বাতাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেক (৬৫) বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন করতে পেরে তিনি বেশ খুশি।  

কথা হলে আব্দুল মালেক বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় তিন বছর যাবৎ চোখের সমস্যায় ভুগছি। চোখে ঝাপসা দেখি। যেহেতু আমার অনেক বয়স হয়েছে তাই আমি কোনো ধরনের চিকিৎসা করাতে চাইনি। এ ভেবে যে আর বাঁচব কয়দিন। কিন্তু কিছুদিন যাবৎ চোখের সমস্যা এতটাই বেড়েছে যে কোরআন শরিফ পড়তে পারছি না। এজন্যই মূলত এসেছি চোখের ছানি অপারেশন করাতে।  

তিনি বলেন, এ হাসপাতালে খুব সহজে ও সুন্দরভাবে চোখের ছানির অপারেশন করেছি। খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে কোনো কিছুতেই সমস্যায় পড়তে হয়নি। এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যারা জড়িত আছেন আল্লাহ তাদের দীর্ঘায়ু করুক, এ দোয়া করছি।  

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবতৈনিক পরিচালক ও ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদ বলেন, আজ আমরা ৩৯ জন রোগীর চোখের ছানির অপারেশন করেছি। আমরা প্রতি মাসে দুবার ক্যাম্প পরিচালনা করে থাকি। এর আগে আমরা জুলাই মাসে কুমিল্লার হরিপুরের আগানগর উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্যাম্প পরিচালনা করি। সেখানে আমরা এক হাজার ৬০০ রোগী দেখেছিলাম। যার মধ্যে ৩৪১ জন রোগীর চোখের অপারেশনের প্রয়োজন আছে। আজ তার একটা গ্রুপের অপারেশন হয়েছে। বাকিদের পর্যায়ক্রমে হবে।  

তিনি বলেন, আল্লাহ রাসুল (সা.) বলেছেন কেউ যদি ভালো কাজ করে আনন্দিত হয়, খারাপ কাজ করে দুঃখিত হয় তাদের তোমরা ইমানদার হিসেবে বলতে পারো। আল্লাহ রাসুলের এ বাণীকে কেন্দ্র করে আমি বলতে চাই, ভালো কাজ করলে আমাদের খুবই ভালো লাগে। এখান থেকে যারা বিনামূল্যে চিকিৎসা নিয়েছেন তারা সবাই আমাদের জন্য দোয়া করেছেন।  

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পাবলিক রিলেশন অফিসার ফাইজা রহমান বলেন, গরিব-দুস্থ ও অন্ধ রোগীদের চক্ষু চিকিৎসার সাহায্যার্থে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুস্থদের সেবায় আগ থেকেই এ ধরনের প্রক্রিয়া চলে আসছে। সারাদেশে বিনামূল্যে এ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। ক্যাম্পের মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার ৬৪৫ জনের বেশি রোগীর বিনামূল্যে অপারেশন করা হয়েছে।

এ ক্যাম্পটি ১৪ জুলাই, ২০২৩ কুমিল্লার হরিপুর আগানগর উচ্চ বিদ্যালয় অনুষ্ঠিত হয়। কাম্পে এক হাজার ৬০০ রোগীকে বিনামূল্য চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪১ জনকে ছানি, নেত্রনালি ও মাংস বাড়ার কারণে চোখ অপারেশনের জন্য নির্বাচিত করা। আজ সেখানকার ৩৯ জন রোগীর অপারেশন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২৩
ইএসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।