ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে নিখরচায় ৪৪ জনের চোখ অপারেশন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৩
বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে নিখরচায় ৪৪ জনের চোখ অপারেশন ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে কুমিল্লা অঞ্চলের গরিব-দুস্থ ৪৪ জন রোগীর বিনামূল্যে চোখের অপারেশন করা হয়েছে। এরমধ্যে ৪২ জনের ছানি ও ২ জনের নেত্রনালির অপারেশন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাবরিনা সোবহান রোডে অবস্থিত বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে দিনব্যাপী এ ফ্রি অপারেশন অনুষ্ঠিত হয়।  

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও এ কে এম আবু তাহের ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এ অপারেশনের আয়োজন করা হয়েছে।

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক পরিচালক এবং ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদের তত্ত্বাবধানে এই সার্জারিতে অংশ নেন ডা. রুবিনা আক্তার, ডা. মজুমদার গোলাম রাব্বি ও ডা. তাসরুবা শাহনাজ।  

এবারের সার্জারিতে ২৫ জন পুরুষ ও ১৯ জন নারীর চোখের অপারেশন করা হয়েছে।

ছবি: শাকিল আহমেদ

চোখের ছানি অপারেশন করতে আসা মফিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, তিনি ২ থেকে ৩ বছর ধরে চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন। ২ মাস আগে একটা অপারেশন হয়েছিল তার। সেখানে খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার মতো। কিন্তু এ জায়গায় ১ টাকাও খরচ লাগছে না তার।

ওই অপারেশন থেকে তার এই অপারেশনটা বেশি ভালো হয়েছে বলে মনে করছেন মফিজুল ইসলাম। কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, এখানে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। আর আগে যেখানে চোখের অপারেশন করিয়েছিলেন সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়নি। শুধু অপারেশন করেছে।  

মফিজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা খুবই ভালো সেবা পাচ্ছি। চোখ অপারেশন করে খুব ভালো লাগছে। সবাই খুব শান্তি পাচ্ছি। গাড়ি দিয়ে আনছে আবার গাড়ি দিয়ে নিয়ে যাবে। খাওয়া-দাওয়া সবকিছু ফ্রিতে দিছে। আমি দোয়া করি তারা আরো বড় হোক। তারা যেন দেশের প্রতিটি মানুষকে এভাবে সেবা দিতে পারে। ’

ছবি: শাকিল আহমেদ

একই কথা জানান কুমিল্লার আরেক বাসিন্দা তাসলিমা বেগম। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘আমার ৫ বছর ধরে চোখের সমস্যা। চোখ চুলকাইতো, পানি পড়তো ও নেত্রনালী ছোট হয়ে পুঁজ পরতো। আমি প্রাইভেটে ডাক্তার দেখাইছিলাম। অপারেশনের জন্য ১২ হাজার টাকা চায়। কিন্তু আমার কাছে এতো টাকা নেই। বাসা-বাড়িতে কাজ করে খাই। কত আর আয় করি। পরিবারেও কেও নেই যে চিকিৎসা করাবে। পরে এরা যখন আমাদের গ্রামে গিয়েছিলো তখন আমার এক ভাতিজা নিয়ে গিয়েছিলো। এরা বললো টাকা ছাড়াই চোখ ঠিক করে দিবে। এদের বিশ্বাস করে আসলাম এবং তাই দেখলাম। আল্লাহ এদের ভালো করুক। এরা যেন সব সময় ভালো থাকে সেই দোয়াই করি। ’

ছবি: শাকিল আহমেদ

এবারের অপারেশনের বিষয় জানতে চাইলে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক পরিচালক এবং ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদ বলেন, ‘গরিব-দুস্থ ও অন্ধ রোগীদের চক্ষু চিকিৎসার সাহায্যার্থে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুস্থদের সেবায় অনেক আগে থেকেই এ ধরনের প্রক্রিয়া চলে আসছে। সারাদেশে বিনামূল্যে এ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমাদের জাকাত ফান্ড ও ফ্রি ফান্ড থেকে আমরা এটি ব্যবস্থা করে থাকি। ক্যাম্পের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ৬০০ জনের বেশি রোগীকে বিনামূল্যে অপারেশন করা হয়েছে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘গত ১৪ জুলাই কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানার হরিপুর গ্রামের আগানগর উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্পিং অনুষ্ঠিত হয়। ওই ক্যাম্পে প্রায় ১ হাজার ৬০০ রোগী চিকিৎসা সেবা নেন। এর মধ্যে ৩৪১ জনকে চোখের ছানি, নেত্রনালী ও মাংস বৃদ্ধির কারণে অপারেশনের জন্য নির্বাচিত করা হয়। তারই ৪৪ জন রোগীর অপারেশন করা হচ্ছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৩
ইএসএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।