ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সাক্ষাতকারে ডা. লেলিন

আগস্ট-সেপ্টেম্বর মিলিয়ে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আরও বাড়বে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০২৩
আগস্ট-সেপ্টেম্বর মিলিয়ে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আরও বাড়বে

ঢাকা: চলতি আগস্ট ও আগামী সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব আরও বেড়ে যাবে বলে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী।

শনিবার (৫ আগস্ট) বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি কথা বলেন।

বর্তমানে ডেঙ্গু পরিস্থিতি সম্পর্কে ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, বছরের শুরুতেই কীটতত্ত্ববিদদের নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চলে একটি গবেষণা করে মশার লার্ভার ঘনত্ব পরীক্ষা করে। তখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পূর্বাভাস দেওয়া হয় এ বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অনেক বেশি হতে পারে। সেই অনুযায়ী যেন সিটি করপোরেশন মশা নিধনের কার্যক্রম শুরু করে।

এ বছর ডেঙ্গুর যে প্রকার দেখা যাচ্ছে, সেগুলো সেকেন্ডারি ফর্মের। অর্থাৎ আগে যিনি ডেঙ্গুর অন্য কোনো উপধরণ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি এখন আরেকটি ধরণ বা উপধরণ দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়বার যখন কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় তখন মৃত্যু ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এবারে তাই হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, যেভাবেই হোক বর্তমানে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণগুলো বেশ বদলে গিয়েছে। এই বদলে যাওয়া ধরণগুলো দেখে এটা যে ডেঙ্গু জ্বর হতে পারে, সেটা প্রথমে অনেকে বুঝতে পারে না। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যেতে দেরি হয়ে যায়। যেহেতু ২ বা ৩ দিন বুঝতেই পারে না তাই যখন কোরো রোগী হাসপাতালে যান তখন তার ডিহাইড্রেশন ও রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায়।  

বর্তমানে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা দিনে এবং রাতেও কামড় দেয়। এছাড়াও ডেঙ্গু এখন শুধু পরিষ্কার পানিতে নয় যেকোনো পানিতেই জন্মাতে পারে। ডেঙ্গু রোগের লক্ষণও বদলে গিয়েছে, উপসর্গেও পরিবর্তন এসেছে। সবমিলিয়েই মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। যেভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে আমরা যদি সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হই তাহলে চলতি বছরে হয়তো ডেঙ্গুর নথিভুক্ত মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি হবে এবং সেটা কয়েকগুণ বেড়ে যেতে পারে।

ডাক্তার লেলিন চৌধুরী আরও বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া ডেঙ্গুতে মৃত্যু এবং আক্রান্তের সরকারি যে হিসাব তাতে সব মৃত্যু ও আক্রান্তের হিসাব যুক্ত থাকছে বিষয়টি তেমন না। এটি যদি আমরা স্যাম্পল হিসেবে ধরে নিই তাহলে অনুমান করতে পারি সারাদেশে কী পরিমাণ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন ও মারা যাচ্ছেন। আমাদের মনে হচ্ছে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আরও বেড়ে যাবে। ইতিমধ্যেই হাসপাতালগুলো প্রায় পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। যদি ডেঙ্গু সংক্রমণের গতি আরেকটু বেড়ে যায়, তাহলে কিন্তু হাসপাতালে জায়গা দেওয়া সম্ভব হবে না। অতএব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভাগুলো যদি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে সকলেরই সমূহ ক্ষতি হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০২৩
আরকেআর/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।