ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

নিখরচায় বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে ৪৭ জনের ছানি অপারেশন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৩
নিখরচায় বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে ৪৭ জনের ছানি অপারেশন বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে চোখের ছানি অপারেশন, ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে গরিব-দুস্থ ৪৭ জন রোগীর বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন করা হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাবরিনা সোবহান রোডে অবস্থিত বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও এ কে এম আবু তাহের ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে দিনব্যাপী বিনামূল্যে এ অপারেশন অনুষ্ঠিত হয়।

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবতৈনিক পরিচালক এবং ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদের তত্ত্বাবধানে সার্জারিতে অংশ নেন ডা. রুবিনা আক্তার ও ডা. তাসরুবা শাহনাজ। ২৭ জন পুরুষ ও ২০ জন নারীসহ মোট ৪৭ জন রোগীর অপারেশন করা হয়েছে।

কুমিল্লার বরুড়া থেকে মো. সোলাইমান মাস্টার নামে এক ব্যক্তি বিনামূল্যে বসুন্ধরা আই হসপিটালে চোখের ছানির চিকিৎসা করেছেন। অপারেশনের পর চোখে এখন আগের থেকে ভালো ও পরিষ্কার দেখছেন।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার দুটি চোখে ছানি এসে গেছে। যে কারণে আমি ভালো করে কোরআন শরিফ পড়তে পারতাম না। অপারেশনের পর এখন চোখে পরিষ্কার দেখছি। সৃষ্টিকর্তা আমার আশা পূরণ করে দিয়েছে। এবার রোজায় কোরআন শরিফ পড়তে পারবো। বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা দেওয়াতে আমি বসুন্ধরা আই হসপিটালের সবার জন্য দোয়া করছি।     

কুমিল্লার বরুড়া থেকে বসুন্ধরা আই হসপিটালে বিনামূল্যে চোখের ছানির চিকিৎসা করতে এসেছেন বৃদ্ধা শামসু নাহার। দীর্ঘদিন ধরে তিনি চোখে কম দেখেন। চোখে ছানি পড়ায় তিনি সবকিছু অস্পষ্ট বা ঘোলা দেখেন। এ পৃথিবীতে তার আপন বলতে দুই ছেলে আছে। এর মধ্যে বড় ছেলে ঢাকায় থাকেন। সে মায়ের কোনো খোঁজ-খবর নেন না। আর ছোট ছেলে প্রতিবন্ধী। ভালো করে চলাফেরা করতে পারে না। ছোট ছেলেকে নিয়ে তার দুশ্চিন্তা। চোখে ভালো করে দেখতে পান না বলে নিজের ও ছোট ছেলের দেখাশোনা করতে পারেন না। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। অবশেষে তার চোখের অপারেশন হওয়াতে তিনি অনেক খুশি। আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে চিকিৎসকদের এবং বসুন্ধরা আই হসপিটালের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের খোঁজ কীভাবে পেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের ওইখানে মাইকিং হয়েছিল। মাইকিং শোনার পর আমরা ক্যাম্পে যাই। ক্যাম্প থেকে আমাদের এখানে নিয়ে আসা হয়। খুবই ভালো লাগছে। বিনামূল্যে চোখের অপারেশন করতে পারবো কখনোই ভাবিনি। বিনামূল্যে হলেও এখানে সবার ব্যবহার ভালো।  

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবতৈনিক পরিচালক ও ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদ বলেন, জানুয়ারি মাসে আমরা কুমিল্লার বরুড়াতে একটা আই ক্যাম্প করেছিলাম। সেখানে দুই হাজার রোগী দেখেছিলাম। তার মধ্যে ২৪৭ জনের চোখের অপারেশনের জন্য বাছাই করে এসেছিলাম। গত সপ্তাহে প্রথম ধাপে বরুড়ার ৫০ জনের ছানি অপারেশন হয়। আজ দ্বিতীয় ধাপে ৪৭ জন রোগীর চোখের ছানি অপারেশনের হয়েছে। আগামী শুক্রবার (৩ মার্চ) এ ৪৭ রোগীর চোখের বিভিন্ন পরীক্ষা করে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। আর বিনামূল্যে এ ধরনের সেবা শুধুমাত্র বসুন্ধরা আই হসপিটালই দিয়ে থাকে।  

তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের প্রচারণা কিছুটা কম। তবে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে কেউ যদি আমাদের অনুরোধ করে তারা তাদের নিজ এলাকায় ক্যাম্প করাতে পারবে। আমরা তাদের ডাকে সাড়া দেব।  

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ম্যানেজার (এইচ আর অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্টেশন) মোহাম্মদ আহসান হাবীব বলেন, গরিব-দুস্থ ও অন্ধ রোগীদের চক্ষু চিকিৎসার সাহায্যার্থে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুস্থদের সেবায় আগ থেকেই এ ধরনের প্রক্রিয়া চলে আসছে। সারা দেশে বিনামূল্যে এ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। ক্যাম্পের মাধ্যমে প্রায় ১ হাজার ৯৫০ জনের বেশি রোগীকে বিনামূল্যে অপারেশন করা হয়েছে।

এ ক্যাম্পটি গত ২০ জানুয়ারি, ২০২৩ পয়ালগাছা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজ, বরুড়া, কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার সেখানকার দ্বিতীয় ব্যাচের ৪৭ জন রোগীর এ অপারেশন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২৩ 
ইএসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।