ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

২১৯ শিশুর জীবন বদলে দিয়েছেন ওজিল

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
২১৯ শিশুর জীবন বদলে দিয়েছেন ওজিল ছবি: সংগৃহীত

কিছুদিন আগে ১ হাজার অসুস্থ শিশুর অপারেশনের দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মেসুত ওজিল। এবার সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নও শুরু করে দিয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে তার অর্থায়নে ২১৯ জন অসুস্থ শিশুর অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। 

গত গ্রীষ্মে মিস তুর্কি এমাইন গুলসের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার দিনে বিশ্বের ১ হাজার দরিদ্র শিশুর কিডনির অপারেশনের দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন ‍ওজিল। এ নিয়ে তার জার্মান সুপার এজেন্ট, আইনজীবী এবং শিক্ষক ড. এরকুত সগুত বলেছিলেন, “গত বিশ্বকাপ চলাকালীন সে (ওজিল) আমাকে বলেছিল ‘চলো ১ হাজার শিশুর জীবন বদলে দিই, চলো ১ হাজার অপারেশন করাই’।

আমি বললাম ‘এটা তো মিলিয়ন পাউন্ডের ব্যাপার’। কিন্তু সে উত্তরে বলল ‘এখন যদি আমি আমার অর্থ-সম্পদ দান না করি তাহলে কবে করব? আর কার সঙ্গে করব?”

ওজিল যে মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য ওই কথা বলেননি তার প্রমাণ এবার পাওয়া গেল। শিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন একাধিক চ্যারিটির সঙ্গেও যুক্ত ওজিল। ‘বিগ শো চ্যারিটি’ নামের এই সংস্থার মাধ্যমেই অপারেশন পরিচালনা করা হয়েছে। বড়দিনের সকালে একাধিক টুইটের মাধ্যমে ভক্তদের অপারেশনের আপডেট জানিয়েছেন তিনি।

একটি টুইটে ওজিল লিখেছেন, ‘২১৯টি অপারেশন শেষ হয়েছে। কিন্তু এখনও অনেক দূর যেতে হবে! ২০১৯ সালের জুনে আমাদের বিয়ের সময় আমি এবং আমার সহধর্মিণী আমিনে যেমনটা ঘোষণা করেছিলাম, আমরা বিশ্বের ১ হাজার অভাবী এবং অসুস্থ শিশুর জীবন বদলে দেওয়া অপারেশনের ব্যয় বহন করব। ’

এই অপারেশনের পেছনে যাদের অবদান আছে তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বিশ্বকাপজয়ী জার্মান মিডফিল্ডার লিখেছেন, ‘কয়েক বছর ধরে সহযোগিতা করার জন্য বিগ শো চ্যারিটিকে ধন্যবাদ। বিয়েতে উপস্থিত থাকা সকল অতিথি এবং যেসব ভক্ত ও সমর্থক যারা দান করে পাশে থেকেছেন তাদেরও ধন্যবাদ। এবং আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল টিম যারা এতে যুক্ত ছিলেন তাদের বিশেষ ধন্যবাদ। এটা তো কেবল শুরু, চলুন ২০২০ সালে আরও শত শত অভাবী শিশুকে সহায়তা করি। ’

‘বিগ শো’ এমন এক চ্যারিটি নেটওয়ার্ক যা ক্রীড়া তারকা এবং সমর্থকদের সঙ্গে জড়িত। এই চ্যারিটি নেটওয়ার্ক মূলত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিশুদের মেডিক্যাল অপারেশনে সহায়তা করে থাকে। যেসব দেশে চিকিৎসক, অর্থ এবং ওষুধের অভাব এমন সব দেশের শিশুদের নিয়ে কাজ করে এই সংস্থা। ২০১৪ বিশ্বকাপে জয়ের পর থেকেই এই সংস্থার সঙ্গে জড়িত ওজিল।  

জার্মানির হয়ে ২০১৪ বিশ্বকাপ জেতার পর পুরস্কার হিসেবে পাওয়া ২ লাখ ৪০ হাজার পাউন্ডের পুরোটাই আয়োজক দেশ ব্রাজিলের ২৩ জন শিশুর অপারেশনের জন্য খরচ করেন ওজিল।  

বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার দিনে ওজিল তুরস্ক ও সিরিয়ার ১৬টি শরণার্থী শিবিরের ১ লাখ মানুষকে খাওয়ানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন। ৩১ বছর বয়সী ওজিল শুধু সিদ্ধান্ত নিয়েই বসে থাকেননি, খাদ্য বিতরণের জন্য পুরো অর্থ তিনি এরকুতের হাতে তুলে দেন। পরে এরকুতের আয়োজনে এই খাদ্য বিতরণ করে রেড ক্রস।

নিজের পূর্বপুরুষদের দেশ তুরস্কে প্রায়ই দরিদ্রদের মাঝে অর্থ-সম্পদ দান করতে দেখা যায় ওজিলকে। এর আগে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার কয়েকজন ক্ষুধার্ত শিশু তাদের অভাব দূর করার জন্য ওজিলকে ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ ম্যাসেজ পাঠিয়েছিল।

গত মাসে তুরস্কের ডেভরেকে অবস্থিত ওজিলের পিতৃভূমিতে শহরের উদীয়মান ফুটবলারদের জন্য পাঁচতলা বিশিষ্ট একটি ফুটবল একাডেমি নির্মাণ করেছেন। শুধু কি তাই, আর্সেনালের ঘরের মাঠ ‘এমিরেটস স্টেডিয়াম’র বক্সে অবস্থিত ১৫টি সিটের মধ্যে ৫টিই চ্যারিটির জন্য নির্ধারিত থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৯
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।