ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

ডেমরায় জামদানির হাট জমজমাট 

শাকিল আহমেদ, স্টাফ ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২১
ডেমরায় জামদানির হাট জমজমাট 

ঢাকা: নারী মানেই শাড়ি। আর বাঙালি নারী হলে তো কোনো কথাই নাই।

জামদানি শাড়ি ছাড়া যেন বাঙালি নারীর সংজ্ঞা অসম্পূর্ণ। এমন কোনো বাঙালি নারীকে পাওয়া যাবে না যে তার সংগ্রহে অন্তত একটি জামদানি শাড়ি নেই বা জামদানিকে ভালোবাসেন না।

এদেশে অনেক ধরনের শাড়ি তৈরি হলেও নিজস্ব ও স্বতন্ত্র ডিজাইনের নান্দনিক শাড়ি হচ্ছে জামদানি শাড়ি। তাই এসব শাড়ি নান্দনিকত আর দামি হওয়ায় এটি আভিজাত্য ও রুচিশীলতা প্রদর্শন করে।

এছাড়া জামদানি শাড়ি বাংলার ঐতিহ্য বহন করে। আর এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে রাজধানীর অদূরে ডেমরা বাজারে বসে ‘জামদানি হাট’।

প্রতি শুক্রবার রাত ৩টা থেকে শুরু হয় আর শেষ হয় সকাল ৯ টার মধ্যে।  

শীতের সময় ভোর রাতে হালকা ঠাণ্ডা থাকায় অনেক পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা চাদর অথবা সোয়েটার গায়ে দিয়ে চলে আসেন হাটে। ঢাকা থেকে সহজেই যাতায়াত করা যাওয়ায় এ স্থানটিকে বেছে নিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।  

ডেমরা নদী পার হলেই রূপগঞ্জের নোয়াপাড়ার জামদানি পল্লী। এখান থেকে খুব সহজেই হাটে পৌঁছানো যায়, তাই ক্রেতা-বিক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী গত কয়েক বছরেরও বেশি সময় ধরে এ স্থানে চলে আসছে ঐতিহ্যবাহী সাপ্তাহিক জামদানি হাট। এছাড়া নোয়াপাড়া জামদানি হাউজিং এলাকায়ও হাট বসে।

রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সহজ যোগাযোগের জন্য রাজধানী ও রাজধানীর বাইরেও বিভিন্ন পাইকাররা জামদানি শাড়ি কিনতে আসেন এখানে। খোলা এ হাটে পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা মাটিতে বিছানা চাদর বিছিয়ে বিভিন্ন রকমের জামদানি শাড়ি বিক্রি করে।

এ হাটে ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা দামের শাড়ি পাওয়া যায়। রাজধানীর বড় বড় মার্কেট শপিং মলের মালিকরাও এখান থেকে জামদানি শাকি কিনে নেয়। এছাড়াও প্রিয়জনকে উপহার দিতেও রাজধানী থেকে খুচরা ক্রেতারও আসেন।

শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) সরেজমিনে দেখা যায়, নুরুল হক নামে এক বিক্রেতা দুই হাতে দুটি শাড়ি উঁচিয়ে ধরে হাঁক দিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। এভাবেই রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ক্রেতার জামদানি বিক্রি করে থাকেন।  

ডেমরায় জামদানি তৈরি না হলেও পার্শ্ববর্তী নোয়াপাড়া, রূপগঞ্জের রূপসী, মৈকুলী, খাদুন, পবনকুল, কাজীপাড়া, মোগরাকুল, সোনারগাঁ এবং আড়াইহাজারের তাঁতিদের তৈরি জামদানি সংগ্রহ করতে আসেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশে এক সময়ের ঢাকাই মসলিন শাড়ির চাহিদা থাকলেও অনেক আগেই এ শাড়ি বিলুপ্তি হয়েছে। এ হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বর্তমান সরকারের পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর উদ্যোগে রূপগঞ্জে তারাবো এলাকায় স্থাপন করা হচ্ছে ঢাকাই মসলিন হাউস।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২১
এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।