ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

খেলার কৌশল নিজে শিখতে সক্ষম এআই

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৭
খেলার কৌশল নিজে শিখতে সক্ষম এআই খেলার কৌশল নিজে শিখতে সক্ষম এআই (ছবি: সংগৃহীত)

ঢাকা: প্রযুক্তিবিশ্বে চলছে উন্নত ক্ষমতাসম্পন্ন এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উদ্ভাবনের প্রতিযোগিতা। গুগলের এআই বিষয়ক গবেষণা প্রজেক্ট ডিপমাইন্ড সম্প্রতি এমন এক এআই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে, যা কোনো সমস্যার সমাধান পদ্ধতি নিজে নিজেই শিখে নিতে সক্ষম। 

আলফাগো জিরো নামের এ প্রোগ্রামটি চায়নিজ বোর্ড গেম ‘গো’-এর কৌশল মানুষের সাহায্য ছাড়াই আয়ত্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এমনকি এই খেলায় বর্তমান বিশ্বের সেরা দু’জন খেলোয়াড়কে হারিয়ে দিয়েছে সিস্টেমটি।

 

প্রতিষ্ঠানটির এআই প্রজেক্ট আলফাগো আগে গো-গেমের হাজার হাজার নমুনা ইনপুটের মাধ্যমে এর কৌশল আয়ত্ত করতো। কিন্তু প্রজেক্টের নতুন উদ্ভাবন আলফাগো জিরোতে গো-গেমের কোনো নমুনা ইনপুট করতে হয়নি। একদম শূন্য অভিজ্ঞতা নিয়ে গেমটি খেলতে শুরু করে আলফাগো জিরো।  

খেলা শুরুর মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ‘গো’ গেমের অরিজিনাল প্রোগ্রামকে পরাজিত করার মতো যথেষ্ট পারদর্শী হয়ে ওঠে এআই। ডিপমাইন্ডের প্রধান নির্বাহী ডেমিস হাসাবিস মনে করেন, সিস্টেমটি এখন বিভিন্ন গবেষণা কাজে ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট উপযোগী হয়ে উঠেছে।  

সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাসাবিস বলেন, আমরা নতুন এ সিস্টেমটির ব্যাপারে বেশ আশাবাদী। কারণ, সত্যিকারের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উদ্ভাবনের জন্য আমাদের সামনে আরও অনেক পথ বাকি। এদিকে আমাদের এই নতুন উদ্ভাবন ইতোমধ্যেই সত্যিকারের সমস্যা সমাধানে যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করেছে।

চায়নিজ বোর্ড গেম ‘গো’-তে একসঙ্গে অনেক বেশি সম্ভাব্য কৌশল নিয়ে কাজ করতে হয়। একটি যন্ত্রের পক্ষে এ পরিমাণ দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রয়োজন, এ গেমের লক্ষাধিক নমুনার রেকর্ড করা ডেটা এবং অনেক বেশি কম্পিউটার প্রসেসিং পাওয়ার। অথচ এসব নিজে নিজেই আয়ত্ত করতে সক্ষম হয়েছে আলফাগো জিরো। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই সিস্টেমটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উৎকর্ষের একটি অন্যতম ধাপ হিসেবে ভূমিকা রাখবে।

আলফাগো জিরো উদ্ভাবক দলের একজন সদস্য ডেভিড সিলভার বলেন, আমরা এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নতুন একটি পদ্ধতি প্রয়োগ করেছি। শুরুতে এই গেমটি সম্পর্কিত কোনো তথ্যই এতে ইনপুট করা হয়নি। শুধু গেমের বেসিক নিয়মগুলো ইনপুট দেওয়া হয়েছিল। এরপর যন্ত্রটি নিজের সঙ্গে খেলতে খেলতে এ খেলার বাদবাকি সব কৌশল আয়ত্ত করে ফেলে।

আলফাগো জিরোর কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে ডেভিড সিলভার বলেন, প্রথম ইনপুট করা প্রিন্সিপালের উপর ভিত্তি করে এটা নিজে নিজেই জ্ঞান আহরণ করতে থাকে। সুতরাং, এর জ্ঞান সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা নেই বললেই চলে।

‘গো’ চীনের একটি অতি প্রাচীন ও জনপ্রিয় খেলা। প্রায় কয়েক হাজার বছর আগে খেলাটির প্রচলন ঘটে। খেলাতে দাবার মতোই কালো-সাদা বর্গাকৃতির অনেকগুলো ছক থাকে। কালো-সাদা এই দুই রঙের গুটি দিয়ে তা খেলতে হয়।  

এ খেলার নিয়ম তুলনামূলকভাবে দাবার চেয়ে সহজ। কিন্তু কৌশলগত দিক থেকে তা দাবার চেয়ে অনেক বেশি জটিল। খেলোয়াড়কে একসঙ্গে প্রায় দুইশটি বিকল্প কৌশল নিয়ে ভাবতে হতে পারে এ খেলায়। এদিকে দাবায় সর্বোচ্চ ২০টির বেশি বিকল্প তৈরি হতে দেখা যায় না।

বাংলাদেশ সময়: ০২১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৭
এনএইচটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।