ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

ঘরের বাগানের যত্নআত্তি

সানজিদা সামরিন, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৫
ঘরের বাগানের যত্নআত্তি

ঢাকা: ইট পাথরের এ শহরে প্রাণের ছোঁয়া মেলে না সহজে। যানজট আর দ‍ূষিত রাজপথের দু’ধারে সবুজ গাছের সারি দেখতে পাওয়া রীতিমতো স্বপ্নই।

তবে গাছের ছায়ায় শীতল হাওয়া গায়ে লাগাতে না পারলেও, অনেকেই ঘরের ভেতরে গড়ে তুলেছেন এক টুকরো বাগান। আর সেখানে ঠাঁই পেয়েছে রঙিন ফুল, পাতা বাহার ও ছোট ছোট অনেক গাছ।

তবে গাছের যেহেতু প্রাণ রয়েছে, সেহেতু তার প্রয়োজন যথেষ্ট আলো-বাতাসের। যাদের ভবনে বারান্দা রয়েছে তাদের চিন্তা কিছুটা ঘুচলেও, যাদের বারান্দা নেই বা থাকলেও সল্প পরিসরে অথবা রোদ প্রবেশ করে না বললেই চলে, তাদের ক্ষেত্রে গাছের যত্ন নেওয়াটা একটু কঠিনই।

এক্ষেত্রে ঘরের ভেতরেই আশ্রয় হয় শখের গাছগুলোর। ফলে প্রয়োজনীয় আলো-বাতাসের অভাবে গাছের পাতা শুকিয়ে যায় বা ফাঙ্গাস পড়ে। আবার অনেক সময় গাছ মরেও যেতে পারে।
 
এটা ঠিক যে, যেকোনো গাছই কিন্তু ঘরের ভেতর ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে না। তবে ইনডোর গাছগুলো আলাদা থাকে। ইনডোর গাছ শুধুমাত্র পানিতেই ভালো থাকে। এগুলো খুব একটা যত্ন না নিলেও চলে। চলুন তবে শিখে নেওয়া যাক বেশ কিছু গাছের যত্ন।

মানিপ্ল্যান্টস

ঘরের গাছ হিসেবে মানিপ্ল্যান্ট অতি প্রসিদ্ধ একটি নাম। যারা ঘরে গাছ লাগান তাদের তালিকায় মানিপ্ল্যান্টস শীর্ষে। লতানো অসাধারণ এ গাছটি পানি ও মাটি উভয় জায়গাতেই বেড়ে উঠতে পারে। এ গাছের যত্ন নিতে আপনাকে খুব একটা ধকল সামলাতে হবে না। যদি মাটিতে মানিপ্ল্যান্টস লাগান তাহলে মাটি শুকিয়ে এলে প্রয়োজন মতো পানি দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, টবের নিচে যেন অবশ্যই ছিদ্র থাকে। যাতে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যেতে পারে। আর যদি পানিতে লাগানো হয়, তাহলে কিছুদিন পর পর পানি বদলে দিন। দেখবেন, তরতাজা মানিপ্ল্যান্ট কী সুন্দর আপনার ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিচ্ছে।

লেমনগ্রাস

লেমনগ্রাসের নাম আমরা সবাই শুনেছি। সালাদে লেমনগ্রাসের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। আবার এর ঔষধি গুণাগুণও অনেক। সাধারণত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশগুলোতে লেমনগ্রাস জন্মে। আমাদের দেশের পাহাড়ি এলাকায় এটি চাষ করা হয়। আবার এখন ঘরের বারান্দায়ও ঠাঁই পেয়েছে স্নিগ্ধ সবুজ এ গাছটি। গাছটি লম্বায় প্রায় এক মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। সাধারণত এ গাছটি ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেই ভালো থাকে। একদিন পরপর পানি দিলে ও সপ্তাহে অন্তত দু’দিন রোদে দিলে লেমনগ্রাস গাছ ভালোভাবেই বেড়ে ওঠে।

ক্যাকটাস

কাঁটাযুক্ত হলেও ফুলগাছের পাশাপাশি ক্যাকটাসের চাহিদাও অনেক। ক্যাকটাস অনেক ধরনের হয়- ছোট, বড়, লম্বাটে ও গোল। ক্যাকটাস গাছের যত্নে পানির চাইতে রোদের দরকার বেশি। আবার ক্যকটাসে বেশি পানি কিংবা একেবারেই কম পানি দেওয়া ঠিক নয়।   তাই গাছগুলো প্রতিদিন রোদে দেওয়া উচিত। শীতকালে ক্যাকটাসে মাসে দুই থেকে তিনদিন পানি দিলেই গাছ ভালো থাকবে।

গাঁদা ফুল

বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় লাগানো ফুল গাছের মধ্যে গাঁদা অন্যতম। আর প্রায় সারাবছরই চলে গাঁদা ফুলের মৌসুম। বর্তমানে বীজের তুলনায় টবসহ ফুলগাছই বেশি কেনা হয় । ফুলগাছ বেড়ে উঠতে যথেষ্ট আলো-বাতাসের প্রয়োজন। মাটিতে প্রয়োজনীয় সার দিতে হবে। বাড়িতেই বানাতে পারেন এসব সার। বিভিন্ন সবজির খোসা পলিব্যাগে আটকে বেশ কিছুদিন রেখে দিন। তারপর টবের মাটি খুঁচিয়ে তুলে ভেতরে সার দিয়ে আবার মাটি দিয়ে ঢেকে দিন। গাঁদা ফুলগাছে বেশি পানি দিলে শেকড় পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার কম পানি দিলেও মাটিতে রস থাকে না বলে গাছ বেড়ে উঠতে পারে না। মাঝে মাঝে গাছের আগাছা ছেঁটে ফেলা ও কিটনাশক স্প্রে করতে হবে।

গোলাপ

ফুলের রানি গোলাপ। গোলাপ বাহারি রঙের হয়। আর সুগন্ধি ফুল হিসেবে গোলাপ প্রায় সবারই প্রিয়। ফুলের রানি বলে কথা! বিশেষ যত্ন তো নিতেই হবে। গোলাপ গাছে প্রচুর সূর্যের আলো প্রয়োজন। এটি ছাদে টবে লাগানোই ভালো। গোলাপ গাছ যেন দিনে অন্তত পাঁচঘণ্টা সূর্যের আলো পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়াও দিনে দু’বার পানি দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে পানি গাছের গোড়ার মাটি সরিয়ে না দেয়।

বাগান বিলাস

বাড়ির সাজসজ্জায় বাগান বিলাস একটি পরিচিত নাম। সাধারণত বাড়ির সদর দরজায় বাগানবিলাস লাগানো হয়। আবার অনেকে ছাদের উপর দিয়েও ঝুলিয়ে দেন বাগান বিলাস। বাগান বিলাস গাছের ফুল সাধারণত গোলাপি, সাদা, কমলা ও মেরুন রঙের হয়। গাছে শুকনো মৌসুমে প্রতিদিনই পানি দেওয়া প্রয়োজন। তবে বৃষ্টির মৌসুমে পানি না দিলেও চলে। এছাড়া মাঝে মাঝে ইউরিয়া সার দিতে হবে।   

বাংলাদেশ সময়: ০১০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।