ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

শতাধিক মৃত্যুসঙ্গ দেওয়া বাঙালির গল্প

শুভ্রনীল সাগর, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৫
শতাধিক মৃত্যুসঙ্গ দেওয়া বাঙালির গল্প

ঢাকা: কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, মৃত্যু নিয়ে আপনার প্রস্ততি বা পরিকল্পনা কী, প্রশ্ন শুনে ভদ্রলোক মুখের দিকে শুধু তাকাবেন। ভাববেন, কোথা থেকে কোন পাগল এলো! সত্যিই তাই, জন্ম-মৃত্যু জীবনের সবচেয়ে অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও, বেঁচে থাকা নিয়ে মানুষের যত আয়োজন, মৃত্যু নিয়ে ঠিক তার উল্টো।

বরং এ বিষয়ে না ভাবতে পারলেই যেন বাঁচে।

এর কারণ সম্ভবত সবচেয়ে ভালো ধরতে পেরেছিলেন কবি রণজিৎ দাশ। ‘আমাদের প্রেম’ কবিতায় তিনি লিখেছিলেন, ‘প্রকৃতির সত্যগুলি দৃশ্যত ভৌতিক, কিন্তু আসলে স্বয়ংসিদ্ধ, আবেগ বর্জিত’।

তবে একজনের কথা বলা যায়, যার কাজ ও নেশা ওই উল্টো বিষয় অর্থাৎ মৃত্যুর আয়োজন নিয়ে। নাম আবদুল্লাহ আল-হারুন। এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক মৃত্যুপথযাত্রীকে সঙ্গ দিয়েছেন। তবে কাজটি তিনি ‘হজপিস’ নামে একটি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে করেন।  

ব্যক্তি আবদুল্লাহ আল-হারুন সম্পর্কে আমরা পরে জানবো। সংক্ষেপে আগে হজপিস সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

মৃত্যু সম্পর্কে অযৌক্তিক ভয় ও নেতিবাচক ধারণার অবসানে ইউরোপে হজপিস আন্দোলনের শুরু। হজপিস মৃত্যু সম্পর্কে প্রচলিত উদ্ভট সব অপব্যাখ্যা আর যৌক্তিক-অযৌক্তিক প্রশ্নের সময়োপযোগী উত্তর নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে উপস্থিত হয়।

এ আন্দোলনের পুরোভাগে ছিলেন দু’জন নারী। প্রথমজন এলিজাবেথ কুবলার-রস, যিনি আমেরিকা ও ইউরোপে মৃত্যুপথযাত্রীদের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন ও মৃত্যুর সত্য পরিচয় জানার জন্য সবাইকে উৎসাহিত করার ব্যাপারে অসামান্য অবদান রেখেছেন।

দ্বিতীয়জন হলেন চিকিৎসাবিদ ডা. সিসেল সন্ডারস। তিনি ১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ডে বিশ্বখ্যাত সেন্ট ক্রিস্টোফার হজপিস স্থাপন করেন। দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত রোগীদের অসহ্য শারীরিক যন্ত্রণা নিরসনে এ হজপিস প্রতিষ্ঠানটি কার্যকরি ও সুষম চিকিৎসার প্রবর্তন করে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে।

একাকী ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন মৃত্যুপথযাত্রীকে তার শেষ সময়ে একটু মানবিক ও সন্মানিত সঙ্গ দেবার সংগঠন এবং আশ্রয় হিসেবেই হজপিস আন্দোলনের জন্ম হয়। এটা মনে করা আবার ভুল হবে যে, হজপিস শুধু গৃহ ও পরিবারহীনদেরই মৃত্যুসঙ্গ দেয়।

এটি মৃত্যুর আগে মানুষের শেষ সময়ে সঙ্গ দেয় একজন পরিজন ও নিকটাত্মীয়ের মতো। তার হারিয়ে যাওয়া বা দূরে থাকা পরিবারের অভাবটি বুঝতে না দিয়ে জীবনের শেষ সময়টি মানবিকতা আর সহৃদয়তায় ভরিয়ে তোলে। হজপিস আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তদের বলা হয়, হজপিসকর্মী।
   
আবদুল্লাহ আল-হারুন একজন হজপিসকর্মী। তিনি গত ৩৮ বছর ধরে জার্মান প্রবাসী। ১৯৯৭ সালে তিনি এ আন্দালনের সঙ্গে যুক্ত হন। সম্প্রতি দেশে এসেছিলেন। এসময় তার সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের।

স্বাভাবিকভাবেই সবার আগে হজপিসের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রশ্নটি আসে। কীভাবে, কোন ভাবনা থেকে আপাত অর্থে ‘ভীতিকর’ এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হলেন।

শোনা যাক আবদুল্লাহ আল-হারুনের মুখেই, আমি ১৯৭৭ সালে দেশত্যাগ করি। ১৯৯৭ সালের দিকে আমি দীর্ঘ বেকারত্বের মধ্যে পড়ি। প্রায় দু’বছর আমার চাকরি ছিল না। জার্মানিতে বেকার থাকলে একটা সমস্য হলো, সোম থেকে শুক্রবার দিনগুলো কাটানোর মতো কোনো উপকরণ নেই। আমি বাড়িতে বসে পত্রিকা পড়ি, একটা সময়ের পর তাও আর ভালো লাগে না!

বলে চলেছেন আবদুল্লাহ, একদিন আমার জার্মান বান্ধবী জানায়, সেখানকার স্থানীয় পত্রিকায় একটি বিজ্ঞপ্তি বেরিয়েছে। একদল মানুষ একটি সমিতি করার মধ্য দিয়ে হজপিস আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হতে চায়। আমি তখন প্রথম ‘হজপিস’ শব্দটি শুনলাম। ওরা একটি তথ্যসন্ধ্যা (ইনফরমেশন ইভিনিং) করবে।

আমি গেলাম। ওরা আগ্রহীদের নিয়ে ছয় সপ্তাহের (সপ্তাহে তিনদিন) একটি কোর্স করালেন। মজার ব্যাপার হলো, আগ্রহীদের তালিকায় আমিই ছিলাম একমাত্র পুরুষ, একমাত্র এশিয়ান, একমাত্র বাঙালি এবং সেখান থেকেই শুরু বলে জানান আবদুল্লাহ।

জানান, হজপিসের মধ্য দিয়ে তিনি এক নতুন পৃথিবীর সন্ধান পেলেন। সাধারণত মৃত্যু পরবর্তী জীবন সম্পর্কে প্রাচ্যের মানুষের যে ধারণা, সেটি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে। কিন্তু মৃত্যুকালীন যে অভিজ্ঞতা সেটি ভীতিকর। সেটাই অনন্য এক আনন্দময় অভিজ্ঞতা হয়ে দেখা দিল তার কাছে।

প্রায় দুই দশকে শতাধিক মৃত্যুসঙ্গ দেওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে, জীবিত অবস্থায় মানুষ যতটা আকর্ষণীয় থাকেন, মৃত্যুকালে বা তার আগে তার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠেন বলেই তিনি বিশ্বাস করেন।

জার্মানিতে হজপিসের কার্যালয়

শুরুর দিকে হজপিসের নিয়ম অনুযায়ী, মৃত্যুসঙ্গ দিতে অভিজ্ঞ কারো সহকারী হয়ে যেতেন। যেরকম এখন নবীন কোনো কর্মীর অভিজ্ঞ সঙ্গী হয়ে যান। ধীরে ধীরে শুরু হয় একা সঙ্গ দেওয়া। প্রথম প্রথম মৃত্যুভয় ঢুকে যেত মনে। এজন্য বেশ কয়েকবার মানসিক হাসপাতালে থেকে মনোচিকিৎসাও নিতে হয়েছে। প্রচণ্ড ভয় পেয়েছেন কিন্তু হাল ছাড়েননি।

রণজিৎ’র কবিতার মতোই অসংখ্য ভৌতিক অভিজ্ঞতার সম্মুখীনও হয়েছেন। অদ্ভুত আর অবিশ্বাস্য ব্যাপারও কম ঘটেনি।

‘এমনও হয়েছে মাঝরাত্রিরে কোনো মৃত্যুপথযাত্রী ডেকে বলছেন- আবদুল্লাহ দেখ, আমার বাবা এসেছেন, মা বা কোনো নিকটাত্মীয় এসেছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলতেও শুনেছি। কিন্তু আমি কাউকে দেখিনি। তারা বলেন যে, তুমি দেখতে পাবে না। আমাকে উনি দেখা দিচ্ছেন। যেহেতু আমি তার সঙ্গে যোগ দেব। ’

কথায় কথায় জানা যায়, একা প্রথম মৃত্যুসঙ্গ দেন ১৯৯৮ সালের দিকে। সে যাত্রায় মৃত্যুপথযাত্রী হিসেবে পেয়েছিলেন জুলিয়ানা রাফিকে। ৭২ বছর বয়সে অন্য জগতে পাড়ি জমান জার্মানীর স্থানীয় একটি শহরের এ লাইব্রেরিয়ান। মৃত্যুর আগে রাফির সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো আবদুল্লাহ লিখেছেন তার ‘মৃত্যুর দুয়ারে রবীন্দ্রনাথ’ লেখায়।   

রবীন্দ্রনাথের নামটি যখন এলো তখন বলি, তিনি কায়-মনে একজন রবীন্দ্রপ্রেমী। তার সাহিত্যকর্ম, লেখালেখি, ভাবনা-চিন্তাসহ সবকিছু জুড়ে রয়েছেন রবীন্দ্রনাথ।

এক কথায় মৃত্যুর সংজ্ঞাও দিয়েছেন সেভাবে, ‘আমার কাছে মৃত্যু হলো খুব পছন্দনীয় রবীন্দ্রসংগীত’।

আরও বিস্তারিতভাবে বলেছেন, জীবন ও মৃত্যু উভয়ে কেউ কারো শত্রু নয় বরং পরম বন্ধু। মানুষ যতদিন বাঁচে, দু’জনে পরস্পরের হাত ধরাধরি করে চলে। দেহ একসময় অনিবার্যভাবে প্রাণিজ (বায়োলজিকাল) কারণে ক্লান্ত হয়ে আত্মার সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হতে বাধ্য হয়। সেসময় জীবনের পরম বন্ধু, মৃত্যু তার প্রধান দায়িত্বটি পালন করে। দেহকে মুক্তি দিয়ে আত্মাকে সে অন্য এক ভুবনে নিয়ে যায়।


অন্যভুবনের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমানো তিন যাত্রী

পছন্দনীয় রবীন্দ্রসংগীত শুনতে শুনতেই শুনেছেন নানা জীবনের নানা সুর। ‘মনের কথাটি রবে না গোপনে’র মতো অন্যভুবনের যাত্রীরা তার কাছে তাদের যাপিত জীবনকে মেলে ধরেছেন। কেউ পরম আস্থা নিয়ে বলে গেছেন, খুন বা পিতার কন্যা ধর্ষণের মতো গর্হিত পাপের কথা। জীবদ্দশায় যে অপরাধের কথা কেউ ধরতে পারেনি বা তার কারণে বিনাদোষে শাস্তিভোগ করার কথাও অনেকে বলে গেছেন।

আবদুল্লাহ যাদের মৃত্যুসঙ্গ দিয়েছেন তাদের মধ্যে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে পওলিনের মৃত্যু। ১৩ বছর বয়সী এ কিশোরীকে দেওয়া মৃত্যুসঙ্গ নিয়ে তিনি লিখেছেন ‘আবার আসিব ফিরে’ লেখায়। জীবনানন্দের এ বিখ্যাত কবিতাটি তিনি পওলিনকে জার্মান ভাষায় অনুবাদ করে শুনিয়েছিলেন। মারা যাওয়ার আগে সে পরজন্মে ঘুঙুর পরা কিশোরী হয়ে এই বাংলায় জন্ম নেবে বলে কথা দিয়ে গেছে।

লেখাটির একদম শেষে পওলিনের ঘুঙুর পরা কিশোরীজন্ম কল্পনা করে তিনি লিখেছেন, ‘পায়ে ঘুঙুর পরে কিশোরী পওলিন গ্রামবাংলার এক আলপনা আঁকা উঠানে নোলক পরা চাষী মায়ের আঁচল ধরে হাঁটছে। মা কুলা দিয়ে ধান ঝাড়ছেন। তা দিয়ে খইয়ের চাল কুটবেন। পওলিন উঠানের ঘাসে তা ছড়িয়ে শুকাবে। পুতুলের মতো পটুয়ার হাতে আঁকা পওলিনের মুখে গরম বাতাস লেগে ঘাম হয়েছে। মা আঁচল দিয়ে মুছিয়ে দিচ্ছেন। চোখ মুঁদে পওলিন তার গতজন্মের সমস্ত অনাদর, অবহেলা সুদে-আসলে তুলে নিচ্ছে। মুখে তার রাজ্যের প্রশান্তি। বাড়ির পাশের ধানসিঁড়ি নদীতে ছেঁড়া সাদা পালের ডিঙা থেকে একটি কিশোর তাকে ডাকছে। আকাশে শঙ্খচিল, শালিক, কাক, ধবল বক উড়ছে। শিমুলের ডাকে লক্ষ্মীপেঁচাও আছে। কলমীর গন্ধে ভেজা জলাঙ্গীর ঢেউয়ে হাঁসেরা ভেসে যায়। ’

এক পর্যায়ে বাংলাদেশে হজপিসের বাস্তবতা নিয়ে কথা হয়। তার মত, ইউরোপের তুলনায় এদেশের সমাজ কাঠামো আলাদা হওয়ায় এখানে প্রত্যক্ষভাবে হজপিস আন্দোলন গড়ে উঠতে আরও সময় লাগবে। তবে দেশের মানুষ দিন দিন যেভাবে ব্যক্তিবাদের দিকে ঝুঁকছে, তাতে খুব শিগগিরই অন্য আদলে এটি চালু হতে পারে।   


হজপিসের মরদেহ রাখার হল

যে মানুষটির নেশাই এখন মৃত্যুপথযাত্রী মানুষকে সঙ্গ দেওয়া, তার বয়সও তো থেমে নেই, বর্তমানে ৬৯ চলছে। তিনি তার মৃত্যুটি নিয়ে কি ভাবছেন!

বললেন, এখানে একটি কথা বলে রাখা ভালো, হজপিসের কাজ মৃত্যুকে তরান্বিত করা নয়, মৃত্যুভয় দূর করা। এতগুলো মৃত্যুসঙ্গ দেওয়ার পর মৃত্যুভয় আমার উঠে গেছে। মৃত্যুকালীন অভিজ্ঞতাটি আনন্দময় করে তোলার ব্যাপারটি আমি জানি। কাজেই আমি আমার পরিবার অর্থাৎ স্ত্রীর রূপার সঙ্গ নিয়েই অন্যভুবনে উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে চাই।

পরিবারের কথা উঠল যখন এই ফাঁকে তার ব্যক্তিজীবন নিয়ে কিছু তথ্য দেওয়া যাক।

আবদুল্লাহ আল-হারুনের জন্ম ১৯৪৫ সালে, জামালপুরে। পারিবারিক জীবনে চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। বড় ভাই আবদুল্লাহ আল-মামুন ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যজন। স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্য বিভাগে।

১৯৬৮ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত পাবনার একটি কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে পেশাগত জীবন শুরু। ১৯৭৭ সালে দেশত্যাগের আগ পর্যন্ত তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। প্রথমে গ্রিস তারপর ১৯৭৮ সালের জুন থেকে জার্মানিতে বসবাস শুরু করেন। ছুটে বেড়িয়েছেন সমগ্র ইউরোপ।

একমাত্র বাঙালি মৃত্যুসঙ্গী হিসেবে এখন পর্যন্ত শতাধিক মৃত্যুসঙ্গ দেওয়ার জন্য তিনি হজপিস থেকে সম্বর্ধিত হয়েছেন। এখনও সুযোগ পেলে সানন্দে মৃত্যুপথযাত্রীদের সঙ্গ দেওয়ার পাশাপাশি নবীন মৃত্যুসঙ্গীদের প্রশিক্ষক হিসেবেও কাজ করেন।

মৃত্যুসঙ্গের ধারাবয়ান ও বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘জীবনমরণের সীমানা ছাড়িয়ে’, ‘মৃত্যু: একটি দার্শনিক জিজ্ঞাসা’ ও ‘অঙ্গবিহীন আলিঙ্গন’।

প্রায় চার দশকের প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে তার প্রথম বই ‘প্রবাসে দৈবের বশে’ প্রকাশিত হয় ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। মূলত আবদুল্লাহ আল-হারুনের লেখক জীবনের পরিচিতি পায় সেসময়। এ বইটির মাধ্যমে এদেশের পাঠকরা মৃত্যু নিয়ে এমন তথ্যসমৃদ্ধ লেখার সঙ্গে পরিচিত হয়।


তার বেশকিছু অনুবাদকর্মও ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অনুবাদ কর্মের মধ্যে সুইডিশ উপন্যাস ‘সিটি অব মাই ড্রিমস’ (ইংরেজি থেকে বাংলা), ২০০৯ সালে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক হার্টা ম্যুলারের ‘আটেমশাউকেল: নিঃশ্বাসের দোলা আশা হয়ে বাঁজে’ (জার্মান থেকে বাংলা), টনি ব্লেয়ারের ‘দি জার্নি’র (ইংরেরি থেকে বাংলা) কথা বলা যায়।

আবারও বলতে হয়, শতাধিক মৃত্যুপথযাত্রীকে মৃত্যুসঙ্গ দিয়েছেন। আবদুল্লাহ আল-হারুন সর্ম্পকে এক কথায় বললে, একটি জীবনের মধ্যে অসংখ্য জীবন। দুর্লভ এ অভিজ্ঞতাগুলোকে লিখে প্রকাশ করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। তবে শরীর-মন যতদিন চাইবে, ততদিন মৃত্যুসঙ্গ দিয়ে যাবেন।

চাঁদ ওঠা কোনো রাতে অন্যভুবনের পথে যাত্রা করা কারো উদ্দেশ্যে বলে উঠবেন, ‘ভয়ের কিছু নেই, আপনার জীবন পূর্ণতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, আপনার শেষযাত্রা শুরু হয়ে গেছে। আমরা যারা এ পৃথিবীতে রইলাম, তাদের কাছ থেকে বিদায় নিন। আপনার যেসব স্বজন ওপারে আপনার অপেক্ষায় রয়েছেন, তাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য প্রস্তুত হোন। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।