ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

বিপর্যয়ে ইস্টারদ্বীপের শিল্প-সংস্কৃতি

সানজিদা সামরিন, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৫
বিপর্যয়ে ইস্টারদ্বীপের শিল্প-সংস্কৃতি

ঢাকা: ইস্টার দ্বীপের কথা আমরা কমবেশি সবাই শুনেছি। এটি দক্ষিণ-পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের পলিনেশিয়ান দ্বীপ।

প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড পাথরমূর্তির জন্য স্থানটি বেশ বিখ্যাত। এগুলো বহন করে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।


কিন্তু ইস্টার দ্বীপের বর্তমান সাংস্কৃতিক পতনের মূলে মানুষের তুলনায় এখানকার পরিবেশই দায়ী বলে জান‍াচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

ইস্টার দ্বীপ ‘রাপা নুই’ নামেও পরিচিত। মূলত ১২০০ অব্দে ইস্টার দ্বীপ গঠিত হয়। আর এখানে ইউরোপিয়ানদের আগমন ঘটে ১৭২২ খ্রিস্টাব্দে। শিক্ষা-দীক্ষা ও সংস্কৃতির জন্য স্থানটি প্রসিদ্ধ।

বিজ্ঞানী ও লেখক জার্ড ডায়ামন্ড ২০০৫ সালে তার ‘কোলাপস: হাউ সোসাইটিস চুজ টু ফেইল অর সাকসিড’ বইয়ে লিখেছেন- ‘ইস্টার দ্বীপের সৃজনশীল সমাজ থেকে মানুষের সরে আসার মূল কারণ ইউরোপ। ইউরোপের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ার ফলে এখানকার শিক্ষিত সমাজ নিজ এলাকার প্রতি কম প্রাধান্য দিচ্ছে। ’

তবে নতুন গবেষণা বলছে অন্য কথা। এখানে বলা হচ্ছে ইউরোপিয়ানদের সঙ্গে যোগাযোগের আগে থেকেই এখানকার সমাজ ও জনগণ দুর্ভোগে ছিলো। এই দুর্ভোগের মূলে রয়েছে ১৬৩ স্কয়ার মাইল জুড়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়। অর্থাৎ,  আগ্নেয়গিরির লাভা দিয়ে তৈরি কাচ আবিষ্কারের ধারণাটি।


গবেষণার ফলাফল প্রসঙ্গে সহ লেখক থিন লেডফজ বলেন, ‘গবেষণার ফলাফল আমাকে চমকপ্রদ করেছে। ’ বিগত গবেষণায় তারা জানিয়েছিলেন, ইস্টার দ্বীপে প্রাচীনকালেই ইউরোপীয় যোগাযোগ ছিলো, যার ফলে এখানকার সৃজনশীল সমাজ ধ্বংস হচ্ছে বলে জানান নিউজল্যান্ডের অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নৃবিজ্ঞানী।

লিডফজ ও তার সহযোগীদের মতে ইস্টার দ্বীপের এই পরিবর্তন এখানকার প্রত্নতাত্ত্বিক দলিল সংরক্ষণের দিক থেকে সুফল বয়েই আনবে। কারণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এলিটদের আধিপত্য ধুয়ে মুছে গেছে। তাদের বসবাসের জমিগুলোকে কৃষিকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। মানুষ বসবাসের গুহা ছেড়েছে। অবসিডিয়ান নামের আগ্নেয় কাচের আবিষ্কার করেছে ও তৈরি করছে আরো নতুন ধরনের বর্শা। ফলে উন্নয়নই হচ্ছে।

এসবের মধ্যে কিছু সমস্যাও তৈরি হয়েছে। অবসিডিয়ান তৈরির সময় উৎপাদন দ্রব্য আনা নেওয়া ও উৎপাদন কেন্দ্রে বিপুল লোকের ব্যবহার করা হয়। যার ফলে এসব কাজেই অধিকাংশ লোক ব্যস্ত তাই নজর পড়ছে না শিল্প-সংস্কৃতির ওপর।


তবে ইস্টার দ্বীপে অবসিডিয়ান কাচ তৈরির সঠিক শুরুর সময়টা নিয়ে অনেক মতভেদ রয়েছে। আবার এটাও পাওয়া গেছে যে অবসিডিয়ান কাচ ইউরোপিয়ানরা আসার আগে থেকেই তৈরি হচ্ছে। তাই এখানকার শিল্প ও সংস্কৃতি নষ্টের মূলে ইউরোপিয়ানরা নয়। তবে এটা ঠিক যে এই অঞ্চলের পরিবেশের তারতম্য ঘটেছে ইউরোপিয়দের সঙ্গে সখ্যতা ও সংক্রামক রোগ বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গেই।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।