ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

জন্মের অপেক্ষায় ১৫ হাজার সামুদ্রিক কাছিম

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৭ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১২
জন্মের অপেক্ষায় ১৫ হাজার সামুদ্রিক কাছিম

কক্সবাজার: প্রায় ১৫ হাজার সামুদ্রিক কাছিম জন্মের অপেক্ষায় রয়েছে। এপ্রিল মাসের মাঝা-মাঝি সময় বিশেষ ব্যবস্থায় সংরক্ষিত ডিম থেকে জন্ম নেবে এসব সামুদ্রিক কাছিম।



সোনাদিয়ার পূর্বপাড়ায় সামুদ্রিক কাছিমের ডিম সংরক্ষণ কেন্দ্রে এসব কাছিমের জন্মের পরই অবমুক্ত করা হবে সমুদ্রে।

বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ অধিদফতর, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক তহবিল এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অধিনে নেকম, আইইউসিএন, এসবিএফ ও হেল্প নামের চারটি সংস্থা পরিচালিত কাছিমের ডিম সংরক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে এসব ডিম সংরক্ষিত রয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, প্রকল্পের জীববৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ুম।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, সামুদ্রিক কাছিম প্রকৃতিক পরিবেশে উপকূলীয় এলাকায় ডিম দেয়। ডিম ছাড়ার জন্য কাছিমের নির্জন এলাকা প্রয়োজন হয়। ডিম দেয়ার স্থানে লোকজনের অবাধ বিচরণ এবং আলো কাছিমের ডিম দেয়ায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।

রাতে উপকূলীয় এলাকায় মা কাছিম এসে গর্ত করে ডিম দিয়ে ফের মাটি চাপা দেয়। তারপর সমুদ্রে চলে যায়। কিন্তু বিভিন্ন সময় স্থানীয় লোকজন কাছিমের ডিম তুলে বিক্রি করে দেয়। এছাড়া দ্বীপে থাকা শিয়াল-কুকুরও এসব ডিম খেয়ে থাকে। যার কারণে সামুদ্রিক কাছিমের বংশ বিস্তার ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব কারণে তারা প্রকল্পের অধিনে ডিম সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছে।

পরিবেশ অধিদফতরের সিবিএইসিএ প্রকল্প কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, প্রকল্পের অধিনে পাঁচটি কাছিমের হ্যাচারি রয়েছে। পেঁচার দ্বীপ, বড়ডেইল, শহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়া, খুরের মুখ ও সোনাদিয়ার পূর্ব পাড়ায় পাঁচটি হ্যাচারিতে বর্তমানে ১৪ হাজার ৫৮৩টি ডিম সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, এ প্রকল্পের অধিনে ১০ জন অভিজ্ঞ স্থানীয় লোককে গার্ড হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এরা মা কাছিমের যাতায়াত পদ চিহ্নিত করে ডিম সংরক্ষণ করে থাকে। এ সংরক্ষণের ৬০ দিন পরে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে এবং পরে বাচ্চাগুলোকে সমুদ্রে ছেড়ে দেয়া হয়। নিয়ম মতে আগামী এপ্রিল মাসের মাঝা-মাঝি সময় ডিম থেকে বাচ্চা  জন্ম নেবে।

সোনাদিয়া পূর্ব পাড়ায় প্রকল্পের অধিনে নিয়োজিত প্রহরী গিয়াস উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, সমুদ্র থেকে কাছিম উঠে আসার কারণে বালুর উপর একটি পথ দেখা যায়। কাছিম আসা এবং যাওয়ার পথই বলে দেয় কাছিম কোথায় ডিম ছেড়েছে। তখন ওইসব ডিম সংরক্ষণ করা হয়।

সরেজমিনে সোনাদিয়ার পূর্ব পাড়ার সমুদ্র বালি চরে কাছিমের এসব যাতায়তের পথ দেখা গেছে। অনেকটা গাড়ির চাকার মতো দেখতে এ চিহ্ন। কাছে গেলে কাছিমের পায়ের ছাপ বোঝা যায়। একই সঙ্গে সোনাদিয়া পূর্ব পাড়ার কাছিমের হ্যাচারি এলাকার ভেতরে মাটিচাপা দেয়া কয়েকটি ডিমও দেখায় গার্ড গিয়াস উদ্দিন।

বাংলাদেশ সময় : ১৪২০ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১২

প্রতিবেদন: নুপা আলম
সম্পাদনা: তানিয়া আফরিন, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।