ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

বকশীগঞ্জে বন্যহাতির তাণ্ডব, ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২২
বকশীগঞ্জে বন্যহাতির তাণ্ডব, ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ

জামালপুর: জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী কামালপুর ইউনিয়নে গত সাতদিন ধরে তাণ্ডব চালাচ্ছে বন্যহাতির পাল।

কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে ক্ষতি করছে ফসলের।

হুমকির মুখে রয়েছে সীমান্তের প্রায় দুই হাজার পরিবার।
 
বন্যহাতির তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বুধবার (২৪ আগস্ট) শুকনা খাবার বিতরণ করেন জামালপুর-১ আসনের এমপি আবুল কালাম আজাদ।  

বর্তমানে সীমান্তবর্তী ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নে ১০ গ্রামের মানুষের মধ্যে বন্যহাতির আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত সাতদিন ধরে পাহাড়ি টিলায় অবস্থান করছে ভারতীয় বুনো হাতির পাল। রাত হলেই লোকালয়ে নেমে এসে ফসলি জমি ও ধান ক্ষেতে চালাচ্ছে তাণ্ডব। রাত জেগে পাহাড়া দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে ও ডাক-ঢোল পিটিয়ে হাতির আক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। এতে কাঁচা বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসল নিয়ে শঙ্কিত পাহাড়ি এলাকার মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, গত ১৬ আগস্ট মঙ্গলবার ভারতের কাঁটা তারের বেড়া পেরিয়ে প্রায় ৭০ থেকে ৮০টি বন্যহাতি বকশীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের গারো পাহাড় সংলগ্ন লোকালয়ে চলে আসে। দিনভর পাহাড়-টিলায় থাকলেও রাতে তারা লোকালয়ে নেমে চালায় তাণ্ডব। বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা, সবজি ক্ষেত ও বোরো ধান খেয়ে বিনষ্ট করে।

হাতি আতঙ্কে ভুগছেন কামালপুর ইউনিয়নের অশেনা কোনা, সাতানীপাড়া, শোমনাথপাড়া, বালুরচর, টিলাপাড়া, পাগল গোছা, দিঘলা কোনা, সোমনাথপাড়া ও হাতিবারকোনাসহ সীমান্তবর্তী ১০ গ্রামের মানুষ। তাদের রাত কাটছে নির্ঘুম। জমির কাঁচা ধান, করলা, শিমুল আলুসহ বিভিন্ন ফসল বাঁচাতে রাতের বেলা আগুন জ্বালিয়ে ও ঢাক-ঢোল পিটিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা।  

এদিকে হাতি তাড়ানোর ক্ষেত্রে রয়েছে বনবিভাগে কঠোর নিষেধাজ্ঞা। হাতি তাড়ানোর জন্য কেনা বৈদুত্যিক জেনারেটর ব্যবহার করতে দিচ্ছে না স্থানীয় বনবিভাগ।  

স্থানীয়রা জানান, রাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সীমান্তের কাঁটাতারের গেট খুলে দেয়।  

দিঘলকোনা এলাকার বাসিন্দা হোসিও জানান, গত সাতদিন ধরে হাতির পাল পাহাড়ের টিলায় অবস্থান করছে। রাতে নেমে আসছে লোকালয়ে। ফসল বাঁচাতে রাত জেগে পাহাড়া দিতে হচ্ছে হাতি। আগুন জ্বালিয়ে ও ঢাক-ঢোল পিটিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করা হলেও থামানো যাচ্ছে না হাতির তাণ্ডব।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস) বকশীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি রাহুল রাকসাম বলেন, হাতির ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারি না। সারাক্ষণ শঙ্কিত থাকি, কখন হাতি লোকালয়ে এসে তাণ্ডব চালায়। ভয়ে ভয়ে দিন কাটে আমাদের। পাহাড়ি এলাকার মানুষের হাতিই এখন বড় শত্রু। হাতি সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধান চাই আমরা।

হাতির তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ শেষে এমপি আবুল কালাম আজাদ জানান, হাতির সমস্যা সমধানে তিনি ভারতীয় হাই কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।