ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

রাক্ষুসে সাকার ফিস ধ্বংস করার পরামর্শ মৎস্য বিভাগের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২২
রাক্ষুসে সাকার ফিস ধ্বংস করার পরামর্শ মৎস্য বিভাগের লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীত জেলেদের জালে ধরা পড়া সাকার ফিস। ছবি: সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদী থেকে জেলেদের জালে একটি সাকার ফিস ধরা পড়া খবর পাওয়া গেছে। মাছটি জেলেরা মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেয়।

তাদের কাছ থেকে আগ্রহ নিয়ে একজন ক্রেতা মাছটি কিনে নেয়।

রাক্ষুসে এবং অন্যান্য মাছের জন্য হুমকির কারণে নদীতে এ মাছ পাওয়ায় চিন্তিত মৎস্য বিভাগ। সাকার মাছ পাওয়া গেলে তা সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংস করার কথা জানান সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. সারোয়ার জামান।

জানা গেছে, গত শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে একটি সাকার ফিস ওঠে। পরে সেটিকে ঘাটে এনে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। প্রায় এক কেজি ওজনের মাছটি জেলা শহরের সমসেরাবাদ এলাকায় নিয়ে আসলে স্থানীয় গোবিন্দ মাতব্বর নামে এক ব্যক্তি ৩০০ টাকা দিয়ে মাছটি কিনে নেন। তখনো মাছটি জীবিত ছিল এবং তিনি পানি দিয়ে মাছটি সংরক্ষণ করেছেন বলে জানা গেছে।

মৎস্য বিভাগ বলছে, মাছটি “সাকার মাউথ ক্যাট ফিস” নামে পরিচিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম হাইপোসটোমাস প্লিকোসপোমাস।

উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে, সাকার ফিস দুই ধরনের। একটির রঙ সাদা ও ছোপ ছোপ দাগ এবং অপরটি কালো ও তার উপর সাদা ডোরাকাটা দাগ। বর্তমানে বাংলাদেশের নদ-নদীতে দ্বিতীয়টি ব্যাপকভাবে পাওয়া যাচ্ছে। এটি সাধারণ একুরিয়ামের জন্য আদর্শ মাছ। একুরিয়ামের ময়লা খেয়ে বেঁচে থাকে এবং স্বাদু পানির দানব হচ্ছে এই মাছ। ময়লাসহ অন্যান্য মাছের খাদ্য খেয়ে থাকে এবং দ্রুত বংশবিস্তার করে থাকে। তাই যে জায়গায় এই মাছ বেশি পরিমাণে থাকে সে জায়গায় অন্যান্য মাছ কম থাকে। এ মাছ বিষাক্ত এবং খেতে বিস্বাদ। এটি এ দেশীয় মাছ নয়, ফলে অনেকেই এই মাছের সঙ্গে পরিচিত নন।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. সারোয়ার জামান বাংলানিউজকে বলেন, খালবিল, পুকুর নদী বা জলাশয়ের জন্য সাকার ফিস হুমকি স্বরূপ। এটি বর্তমানে বুড়িগঙ্গা নদীতে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু মাছটি উন্মুক্ত জলাশয় বা নদীর মাছ ছিল না। এটি শখের বসে একুরিয়ামে পালন করে অনেকে। একুরিয়ামে বড় হয়ে গেলে কেউ হয়তো মাছটি না মেরে উন্মুক্ত জলাশয়ে ছেড়ে দিচ্ছে। সেখান থেকে খালবিল বা নদী নালায় ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশের পানি এবং মাটি এ মাছের বেড়ে উঠা এবং বংশ বিস্তারের জন্য খুবই উপযোগী। তাই সহজেই এ মাছের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মৎস্য কর্মকর্তা সারোয়ার জামান বলেন, সাকার ফিস আমাদের দেশীয় মাছের জন্য হুমকি স্বরূপ। এগুলো অন্যান্য মাছের ডিম বা পোনা মাছ খেয়ে ফেলে। যে সকল জলাশয়ে এ মাছ থাকে, সেখানে অন্য মাছ টিকে থাকতে পারেনা। লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে মাছটি পাওয়া যাওয়ার কারণে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ মাছের কারণে নদীর অন্যান্য মাছের বংশবিস্তার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই মৎস্য বিভাগ থেকে এ জাতীয় মাছ ধ্বংস করার নির্দেশনা আছে। কেউ যেন একুরিয়ামের সাকার ফিস উন্মুক্ত পানিতে না ছাড়ে- সে পরামর্শ দেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২২
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।