ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

চীনা নদীর গ্রাসকার্প দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাংলার পুকুর-হাওর

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২০
চীনা নদীর গ্রাসকার্প দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাংলার পুকুর-হাওর

মৌলভীবাজার: গ্রাসকার্প চাষের জন্য বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়। দ্রুত বর্ধনশীল এ মাছ চাষে খরচ কম, লাভ বেশি।

বড় হলে স্বাদেও অনন্য। মূলত চীনের নদীতে মাছটির বিচরণ। সেখান থেকে বাংলাদেশে এসে মাছটি স্বাদু পানির মাছ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।

এই মাছের আদি নিবাস চীন। সেখান থেকেই এই মাছটিকে প্রায় তিন/চার দশক আগে নিয়ে আসা হয়েছিল আমাদের দেশে। বিদেশি মাছটি প্রায় স্বদেশী মাছে পরিণত হয়েছে। আমাদের হাওর-বিল, পুকুর-জলাশয়ে পাওয়া যাচ্ছে ঢের। মাছের খামারেও চাষ করা হচ্ছে এই রুপালি রঙের গ্রাসকার্প মাছ।  

শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে শ্রীমঙ্গলের হাইলহাওর থেকে এই গ্রাসকার্প মাছটিকে ধরে বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন জনৈক বিক্রেতা। মাছের ভাড়ের ভেতর (মাছ রাখার বাঁশের পাত্র) যেন জায়গা হচ্ছিল না।  

সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে বিশেষত মাছের চাহিদা বেশি থাকায় মাছবিক্রেতারা আকারে বড় মাছগুলোই বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসেন শহরের আবাসিক এলাকায়।  শীতমৌসুমে হাওর এলাকা থেকে এ জাতীয় মাছগুলো বেশি পরিমাণে ধরা হয়।  

মাছ বিক্রেতা জানান, মাছটির ওজন ৬ কেজি ৪২৫ গ্রাম। কেজিপ্রতি একদর ৩শ টাকা। এখানে আর দামাদামির সুযোগ নেই। এটা হাওরি মাছ, খেতে খুবই স্বাদ।  

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমদাদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, মাছগুলোকে চায়নিজ কার্প বলে। এগুলো মূলত চায়না নদীর মাছ। আমাদের দেশে ৯০ এর দশকে আমদানি করা হয়েছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Ctenopharyngodon idella।

তিনি বলেন, এগুলো মূলত প্রাকৃতিক ঘাস খায়। তবে চাষের অবস্থায় খাবারও দেওয়া যায়। ফিডও খায় সে। এগুলো সর্বোচ্চ ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ কেজি পর্যন্ত বিশাল আকারের হয়। তবে ৬/৭ কেজি ওজনের গ্রাসকার্পও কিন্তু দারুণ সুস্বাদু হয়।  

স্বাদ সম্পর্কে এমদাদুল হক বলেন, যে কোনো মাছের চর্বি না হলে কিন্তু স্বাদ লাগবে না। এজন্য লক্ষ্য করে থাকবেন– ছোটমাছ তেমন স্বাদ লাগে না। কারণ তাদের চর্বি কম থাকে। মাছের তেল এবং চর্বি বরাবরই স্বাদ বাড়ায়।

কার্প প্রজাতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রুই, কাতলা, স্বরপুঁটি, মৃগেল, কালিবাউশ, ঘনিয়া- এ সবগুলোই কিন্তু কার্পজাতীয় মাছ। গ্রাসকার্প ‘একজোটিক’ শ্রেণির মাছ অর্থাৎ বিদেশ থেকে আমদানি করা মাছ। সেসময় ১২ প্রজাতির মাছ বিদেশ থেকে আনা হয়েছিল। গ্রাসকার্প, সিলভারকার্প প্রজাতিগুলো চায়না থেকে এবং কমনকার্প নরওয়ে থেকে আনা হয়।  

এই মাছটিকে বাংলায় ‘ঘেসোকার্প’ হিসেবে নামকরণ হয়েছে বলে জানান এই জেলা মৎস্যকর্মকর্তা এমদাদুল।  

বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২০
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।