ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

লাউয়াছড়ায় ১১ প্রজাতির নতুন প্রাণীর সন্ধান 

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২০
লাউয়াছড়ায় ১১ প্রজাতির নতুন প্রাণীর সন্ধান 

মৌলভীবাজার: ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের আয়োজনে মাঠ পর্যায়ের গবেষণায় উঠে এসেছে লাউয়াছড়ায় নতুন প্রজাতির প্রাণী প্রাপ্তির সন্ধান। মোট ৭১ প্রজাতির উভচর ও সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীর সন্ধান মিলেছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে।

যার মধ্যে ১১টিই বাংলাদেশে নতুন।  

শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের কক্ষে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অজগরের বাস্তুসংস্থান এবং উভচর সরীসৃপ প্রাণীর জরিপের উপর গবেষণা কাজের ফলাফল উপস্থাপন শীর্ষক আলোচনায় এ তথ্য জানানো হয়।  

প্রধান অতিথি হিসেবে এ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী। এছাড়াও এসিএফ আনিসুর রহমান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নজরুল ইসলাম, মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী রেঞ্জ কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  

ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের উদ্যোগ এবং ক্যারিনাম ও বাংলাদেশ বন বিভাগের সহযোগিতায় মৌলভীবাজার জেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের উভচর ও সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীর উপর এক গবেষণার তথ্য আন্তর্জাতিক গবেষণাপত্র চেকলিস্টে প্রকাশ হয়েছে।  

ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের প্রধান নির্বাহী শাহরিয়ার সিজার জানান, এই জাতীয় উদ্যানে ১৫ ধরনের উভচর, ৪৩ ধরনের সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী পাওয়ার তথ্য মিললেও এই গবেষণাকাজে সর্বমোট ৭১ প্রজাতির উভচর ও সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীর সন্ধান মিলেছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে। যার ১১টিই বাংলাদেশে নতুন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে কয়েক প্রজাতির ব্যাঙ এবং কয়েক প্রজাতির সাপ। এগুলো আগে থেকেই হয়তো এখানে ছিল, এতদিন গবেষণায় উঠে আসেনি।  

তিনি আরো বলেন, ২০১১ সালে বাংলাদেশ পাইথন প্রজেক্টের অধীনে এই বনে অজগর সাপের উপর গবেষণা কাজ শুরু হলে গবেষকদলের সামনে উঠে আসতে থাকে এই উদ্যানের জীববৈচিত্র্যের নানা ক্ষেত্র। মূলত অজগর সাপের আবাসস্থল খোঁজাকালীন লাউয়াছাড়ার ভিতর দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তার উপর মরে পড়ে থাকা উভচর, সরীসৃপ প্রাণীর দেহাবশেষ পাওয়ার মধ্য দিয়ে এই গবেষণা কাজের যাত্রা শুরু বলা চলে।

‘বন বিভাগের অনুমতিক্রমে পরবর্তীসময়ে অজগর ও কচ্ছপের উপর শুরু হওয়া মূল গবেষণা কাজের পাশাপাশি বনের ভিতরের প্রাপ্ত উভচর ও  সরীসৃপ প্রাণী ছবি, তাদের দৈহিক বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে লাউয়াছড়ার উভচর ও সরীসৃপ প্রাণী তথ্য সংগ্রের কাজ চলমান থাকে। ’ 

গবেষণা সহযোগী হাসান আল রাজী জানান, ২৩ প্রজাতির উভচর ও সরীসৃপ যা আগে লাউয়াছড়ায় পাওয়া যেত বলে ধারণা করা হতো সেগুলোকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করে তাদের প্রজাতি নিরূপণ করা হয়েছে এই গবেষণা কাজের অধীনে। উভচর শ্রেণির মধ্যে ১৯ প্রজাতির ব্যাঙ এবং মাত্র এক প্রজাতির সিসিলিয়ান জাতীয় প্রাণ পাওয়া গেছে। সরীসৃপ শ্রেণির মধ্যে পাওয়া গেছে ২ প্রজাতির কচ্ছপ, ১৪ প্রজাতির টিকটিকি জাতীয় (২ প্রজাতির গুঁইসাপ) এবং ৩৫ প্রজাতির সাপ, যার মধ্যে মাত্র ৬ প্রজাতির বিষাক্ত সাপ। এই প্রজাতিগুলোর মধ্যে রাজগোখরা, অজগর, পাহাড়ি হলুদ কচ্ছপ এরইমধ্যে বিশ্বব্যাপী আইইউসিএন এর লাল তালিকায় ‘মহাবিপন্ন’ বা ‘বিপন্ন’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত।

অপরদিকে চিকিলা, বাইবুন গেছো ব্যাঙ, ব্লিথের সাপের মতো প্রজাতি লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে পাওয়া গেছে যা আইইউসিএন এর লাল-তারিকায় অপর্যাপ্ত তথ্যের কারণে ডাটা ডেফিসিয়েন্ট তালিকায় রাখা হয়েছে বলে সেমিনারে জানানো হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২০
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।