ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি, বেড়েছে ভাঙন-দুর্ভোগ

ফজলে ইলাহী স্বপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২০
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি, বেড়েছে ভাঙন-দুর্ভোগ

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার নীচে নামলেও ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার উপরেই রয়েছে। নদ-নদীর পানি কমায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নিতি হলেও দুর্ভোগ কমেনি বন্যা কবলিতদের।

নদ-নদীর প্রবল ভাঙনের মুখে কুড়িগ্রামের উলিপুর ও রৌমারী উপজেলায় চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে ৩ কোটি টাকার।

ধরলার প্রবল ভাঙনের মুখে পড়েছে সারোডোব ও জয়কুমোর এলাকা।

সোমবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার সাত সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। কমেছে অন্যান্য নদ-নদীর পানিও।

বন্যার পানিতে ঘর-বাড়ি তলিয়ে থাকা পরিবারগুলো পাকা সড়ক, বাঁধ ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার অনেক পরিবারের ঘর-বাড়ি থেকে বন্যার পানি সরে না যাওয়ায় তারা ঘরে ফিরতে পারছেন না। বন্যার্ত এলাকায় চলছে গো খাদ্যের সঙ্কট। কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে থাকায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, চলতি বন্যায় ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনে বিলীন ও একটি বিদ্যালয় ভাঙনের মুখে রয়েছে। আংশিক ক্ষতি হয়েছে ১৫২টি বিদ্যালয়ের। ভাঙনে বিলীন বিদ্যালয়ের মধ্যে উলিপুর উপজেলার চর বজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নয়াডারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং রৌমারী উপজেলার বলদমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফলুয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া উলিপুরের সুখেরবাতির চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের মুখে রয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, জেলায় ১৩৭ হেক্টর আয়তনের ৮৫৪টি পুকুর পুরোপুরি নিমজ্জিত হয়েছে। এরফলে ১৯০টন মাছ ও ৩৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকার মাছের পোনা ভেসে গেছে। প্রায় ২০ লাখ টাকার পুকুর পাড়ের ক্ষতি হয়েছে। চলতি বন্যায় প্রায় ৩ কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। বন্যার ফলে জেলার নিবন্ধিত ১৮ হাজার মৎস্যজীবীর হ্যাচারি উৎপাদন ও বিপণন হুমকির মুখে পরেছে।

কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজার রহমান প্রধান জানান, আমন ধানের বীজতলার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষক পর্যায়ে কমিউনিটি বীজতলা স্থাপন করা হবে। বীজতলা তৈরিতে কৃষকের মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে ১৯৩৫ টাকা করে খুব শিগগিরই পাঠানো হবে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, নদ-নদীর পানি কমায় ভাঙন বেড়েছে। ভাঙনরোধে জেলার ১৯টি পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। উলিপুর-চিলমারী ও রৌমারী-রাজিবপুরে দু’টি স্থায়ী তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ করোনা পরিস্থিতির কারণে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নে ভাঙন ঠেকাতে ৪ হাজার বস্তা জিও ব্যাগ পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি সাহেবের আলগা ও কর্তিমারীতে ভাঙন ঠেকাতে মেরামতকরণ কাজ শিগগিরই শুরু হবে।

বাংলাদশে সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২০
এফইএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।