ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

খুলনায় আশ্রয়কেন্দ্রে বাড়ছে ভিড়, পৌঁছেনি খাবার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৯
খুলনায় আশ্রয়কেন্দ্রে বাড়ছে ভিড়, পৌঁছেনি খাবার

খুলনা: ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে খুলনার ৩৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে শনিবার (০৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ১ লাখ ৭৫ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। সন্ধ্যার কিছুটা আগে বাতাস শুরু হলে লোকজন আতঙ্কিত হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া শুরু করেন।

সন্ধ্যার পর লোকজন ছোটাছুটি করে যে যার মত ঘরের আসবাবপত্র, বিছানা-বালিশ, হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশু নিয়ে পার্শ্ববর্তী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটতে শুরু করেন। তবে কেউ কেউ দুপুরের পর এসেছেন।

রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

জেলার দাকোপ উপজেলার সুতারখালী পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারে (তিন তলা) প্রায় ১৫০ জন নারী ও সুতারখালি মাদারনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারে (তিন তলা) প্রায় ১৫০ আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, দুপুরে আশ্রয়কেন্দ্রে এলেও কোনো শুকনো খাবার, পানি ও অন্য কোনো কিছু তারা পাননি। সাইক্লোন শেল্টার খুলে রেখে দায় সারছেন দায়িত্বরতরা।

সুতারখালী পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারে ভুক্তভোগী অনেকে বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান সন্ধ্যায় ১০ প্যাকেট মুড়ি পাঠিয়েছেন। তা দিয়ে আমরা কি করবো? গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এলেও শান্তি নেই। বেঞ্চ উঁচু করে কোনোমতে বসে থাকলেও মলমূত্র ত্যাগের সমস্যা রয়েছে।

সুতারখালী পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ননী গোপাল বৈদ্য বাংলানিউজকে বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে সাইক্লোন শেল্টারে কোনো খাবার দেওয়া হয়নি। স্থানীয় চেয়ারম্যান কিছু মুড়ি পাঠিয়েছেন।

যদিও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, নগদ টাকা, ওষুধ এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সাইক্লোন শেল্টারে পাঠানো হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দ্দার বাংলানিউজকে বলেন, দাকোপ, কয়রা, পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা ও রূপসা উপজেলায় মোট ৮ লাখ লোক দুর্যোগ ঝুঁকিতে রয়েছেন। যাদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু মিলে ১ লাখ ৭৫ হাজার লোক ইতোমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেছেন।

তিনি আরও জানান, মহাবিপদ সঙ্কেত জারির পরও আশ্রয়কেন্দ্রে যারা যায়নি, তাদের জোর করে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

দাকোপের সাইক্লোন শেল্টার দু’টিতে শুকনো খাবার ও পানি না পাওয়া প্রসঙ্গে আজিজুল হক জোয়ার্দ্দার বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখনও মনে হয় ওখানে পৌঁছেনি। তারপরও বিষয়টি আমি দেখছি।

এদিকে, কয়রা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, দুপুরের পর থেকেই দুই নম্বর কয়রাসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে যাওয়া শুরু করেন। সন্ধ্যার মধ্যেই অনেক সাইক্লোন শেল্টার মানুষ ও গবাদি পশুতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। আবার অনেকে সাইক্লোন শেল্টারে যেতে গড়িমসি করেন।

অনুরূপভাবে পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা ও রূপসা উপজেলার বিভিন্ন সাইক্লোন শেল্টারে সন্ধ্যার পর থেকে মানুষের ভিড় বাড়ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৯
এমআরএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।