প্রতিটি ‘লাল-বনমোরগ’ নতুন প্রভাতের উদাত্ত কণ্ঠের ঘোষক। ‘কুক-কুরু-কু...কুক-কুরু-কু’ ডাকটি দীর্ঘ থেকে সরু হয়ে একসময় শ্রীমঙ্গলের সবুজ প্রকৃতিতে মিলিয়ে যায়।
বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস শনিবার (০৩ মার্চ)। এই বনমোরগগুলোই তার আপন কণ্ঠধ্বনিতে নিজেদের জাগরণের কথাগুলো এতোকাল ধরে ঘোষণা করে চলেছে- অরণ্যের পড়তে পড়তে। এই বসন্তপ্রকৃতির আম্রমুকুলের গন্ধে, বিরামহীন মৃদু বাতাসের মর্মরে।

তিনি আরো বলেন, বনমোরগ লম্বায় সাধারণত ৬৩-৬৫ সেন্টিমিটার এবং বনমুরগি প্রায় ৪৫ সেন্টিমিটার। এরা উড়ে লম্বা স্থান অতিক্রম করতে পারে। এদেশে দুই শতক আগেও টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া প্রায় সর্বত্রই এদের বিচরণ ছিল; এমনকি গত শতাব্দীর মাঝামাঝি ঢাকার অদূর সাভার-টঙ্গী এলাকায়ও বনমোরগ দেখা যেতো।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, এখন মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জে বনমোরগ বেশ ভালোই চোখে পড়ছে। আমিও ভোরের দিকে তাদের একাধিকবার দেখেছি। আসলে, বন-জঙ্গলের সুস্থাস্থ্যের প্রতীক বনমোরগ।
তিনি আরো বলেন, এখনো কিছু কিছু চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় কতিপয় অসাধু চা শ্রমিকরা বিভিন্ন ফাঁদ পেতে বনমোরগ শিকারে বিষয়টি শোনা যায়। তাদেরকে সচেতন করা হলে এবং এ ব্যাপারে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ হলে বনমোরগের প্রজনন আরো বৃদ্ধি পেয়ে বনের সৌন্দর্য বাড়াবে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, হবিগঞ্জ-মৌলভীবাজারের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) তবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের নজরদারীর ফলে বর্তমান শুধু বনমোরগই নয়; অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের প্রজনন যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি ধরে রাখতে পারলে আমাদের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ অন্যান্য চা বাগানের জঙ্গল এলাকাগুলোতে বনমোরগের প্রজননে বেশ আশাব্যঞ্জক সফলতা আসবে।
এখানে আগত পর্যটকরা সকালে ঘুম থেকে উঠে জঙ্গল এলাকা প্রাতঃভ্রমণে বের হয়েই আরো বেশি সংখ্যায় বনমোরগের ডাক শুনতে পাবেন। বনমোরগসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী শিকার ও প্রচার বন্ধে আমরা তৎপর রয়েছি বলে জানান এসিএফ তবিবুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৮
বিবিবি/জেডএস