ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

হাকালুকি হাওরের বাঁধ দেয়ায় থানায় জিডি

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৭
হাকালুকি হাওরের বাঁধ দেয়ায় থানায় জিডি হাকালুকি হাওরের সম্প্রতিক ক্ষতি/ছবি: বাংলানিউজ

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): হাকালুকি হাওরে হিজল গাছের চারা বিনষ্ট করে বাঁধ দেয়ায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। ফলে সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল কর্তৃক বাঁধ দিয়ে মাছ ধরার অবৈধ কার্যক্রম। 

বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা সূত্র জানায়, হাওরের পরিবেশ, প্রতিবেশ এবং হ্যাভিটেড উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওরের বালুজুড়ি, পলোভাঙ্গা, মেধা, বড়মেধা, রুনচি প্রভৃতি বিলে ৩০০ হেক্টর জলজবৃক্ষ হিজল ও করচের বাগান সৃজন করা হয়।  

তার মধ্যে হাল্লা কেন্দ্রে আওতায় বালুজুড়ি বিলের চারদিকে ৯৫ হেক্টর ও পলোভাঙ্গা বিলের চারপাশে ৫৫ হেক্টর মোট ১৫০ হেক্টর এবং ভাটেরা কেন্দ্রের আওতায় আরো ১৫০ হেক্টর জায়গায় চারা রোপণ করা হয়।

 

স্কেভেটর দিয়ে খননকৃত মাটি।  ছবি : বাংলানিউজ গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টায় হাল্লা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিনের মোবাইল ফোনে খবর আসে যে কে বা কারা স্কেভেটর দিয়ে বাগানের ভেতরে বাঁধ নির্মাণ করবে। পরদিন সকাল ৮টায় ওই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বালুজুড়ি বিলের উত্তর-পূর্ব পাশে দিয়ে লক্ষ্য করেন, নূরুল চেয়ারম্যান লোকজনসহ স্কেভেটর গাড়ি দিয়ে বনবিভাগের সৃজন করা বাগানের ভেতর দিয়ে মাটি কেটে কেটে বাঁধ নির্মাণ করছেন। সরকারি বাগান নষ্ট করে বাঁধ নির্মাণে তাৎক্ষণিকভাবে আপত্তি জানালে তারা তা শোনেন নি।

স্কেভেটরে কাটা হচ্ছে হাকালুকি হাওরের মাটি/ছবি: বাংলানিউজসহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. তবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই আমি সকালে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানাতে গেলে উনার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাই। পরে বিষয়টি জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারকে জানাই। আমি তাদের নিষেধ করার পরও তারা স্কেভেটর দিয়ে মাটি কেটে বাঁধ নির্মাণ করে যাচ্ছিলেন।  

তিনি আরো বলেন, পরে দুপুর আড়াইটায় বড়লেখার থানার ওসির সহায়তায় স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটার কাজটি বন্ধ করা হয়। তারপর বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের পক্ষ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি বড়লেখার থানার ওসি বরাবরে একটি জিডি করা হয়েছে।  

তবিবুর রহমান আরো বলেন, বিলের চারদিকে কৃত্রিম বাঁধ নির্মাণ করে বিলের পানি নেমে যাওয়ার পথ বন্ধ করা ও বিলের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করা জলাভূমি (ওয়েটল্যান্ড) সংরক্ষণ নীতিমালার পরিপন্থি। কাজেই এ ধরনের জলাভূমিবিরোধী কাজ করা থেকে বিরত রাখতে সার্বক্ষণিক মনিটরিংসহ সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৭ 
বিবিবি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।