ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

ফিউচার ফর ন্যাচার অ্যাওয়ার্ড পেলেন শাহরিয়ার সিজার রহমান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
ফিউচার ফর ন্যাচার অ্যাওয়ার্ড পেলেন শাহরিয়ার সিজার রহমান শাহরিয়ার সিজার রহমান

বাংলাদেশের বণ্যপ্রাণী এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অসামান্য অবদানের জন্য মর্যাদাপূর্ণ ফিউচার ফর ন্যাচার অ্যাওয়ার্ড পেলেন তরুণ জীববিজ্ঞানী ও বন্যপ্রাণী গবেষক শাহরিয়ার সিজার রহমান। বিশ্বজুড়ে বিপদাপন্ন বন্য প্রাণী ,পরিবেশ ও প্রতিবেশ নিয়ে কাজ করেন এমন গবেষকদের এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়।

বিশ্বের ১৭০ জন বন্যপ্রাণী গবেষকের মধ্যে থেকে তিনজনকে পুরস্কারের জন্য বিবেচনা করা হয়েছে। ৫০ হাজার ইউরো সমমানের এই পুরস্কারের তালিকায় বাংলাদেশের শাহরিয়ার সিজার রহমান ছাড়াও  আছেন ইরাকের হানা রাজা ও ইন্দোনেশিয়ার ফারউইজা ফারহান।

আগামী ৩১ মার্চ নেদারল্যান্ডসে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।  

বন ও তার বাসিন্দাদের রক্ষায় প্রতিনিয়ত ছুটে চলা শাহরিয়ার সিজার রহমান যেতে চান আরও বহুদূর। হারানো বন্য প্রাণকে ফিরিয়ে আনার সংগ্রামকে গতিশীল করার কাজ থামিয়ে দিতে রাজী নন তিনি।

“এই পুরস্কার আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একথা যেমন ঠিক, তেমনি সংরক্ষণ এবং গবেষণার কাজ যারা করেন পরিবেশের প্রতি মনের গহীনতম ভালোবাসা থেকেই করেন। আমি কথা দিচ্ছি নিরন্তর কাজ চালিয়ে যাবো। আমি যে এলাকা নিয়ে এখন কাজ করছি, সেই পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিবেশ ও প্রতিবেশগত ভাবে মহাবিপদাপন্ন। একে রক্ষায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি”।

দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের গহীন বনাঞ্চলে ক্রমশ বিলুপ্তপ্রায় বন্য প্রাণী ও পরিবেশ প্রতিবেশ নিয়ে কাজ করছেন শাহরিয়ার সিজার রহমান ও তার ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স। এরই মধ্যে এ গবেষণার মাধ্যমে এমন অনেক স্তন্যপায়ী এবং সরিসৃপের সন্ধান পাওয়া গেছে, ধারণা করা হচ্ছিলো যারা বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে গেছে। ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে এসব বন্য প্রাণীর ছবি ধারণ করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সূর্যভাল্লুক,গাউর বা বনগরু, বেশ কয়েক জাতের চিতা বিড়াল এবং কয়েক ধরনের কচ্ছপ। শাহরিয়ার সিজার রহমান ও তার দল বেশ কয়েক বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পার্বত্য অঞ্চলে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের পায়ের ছাপ খুঁজে পেয়েছেন।

আধুনিক ক্যামেরা ট্র্যাপিং গবেষণা পদ্ধতিতে স্থানীয় আদীবাসীদের সম্পৃক্ত করায় তা ইতিবাচক ফল দিচ্ছে।

“আমরা আসলে স্থানীয় মানুষজনকে সম্পৃক্ত করেছি। এ কারণে যে, সেসব এলাকা এত দুর্গম সেখানে শহর থেকে লোকবল এবং যন্ত্রপাতি নিয়ে গিয়ে গবেষণার কাজ করা প্রায় অসম্ভব। এছাড়া স্থানীয় মানুষকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে তাদের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটানোও আমাদের কাজের লক্ষ। এর ফলে তাদের মাঝে শিকারের প্রবণতা কমবে। ” বলছিলেন শাহরিয়ার সিজার রহমান।

এছাড়া তিনি সিলেট অঞ্চলে বিশেষ করে লাউয়াছড়া বনে অজগরের উপর গবেষণা অব্যাহত রেখেছেন। অজগরের দেহে রেডিও ট্রান্সমিটার বসানোর মাধ্যমে তার জীবনচক্র জানা এ গবেষণার অন্যতম উদ্দেশ্য।

বাঙলাদেশ সময়: ০১৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৭
জেএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।