ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

‘বিশ্বায়নের যুগে উষ্ণায়নের চাবুকে জর্জরিত প্রাণিকুল’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১০
‘বিশ্বায়নের যুগে উষ্ণায়নের চাবুকে জর্জরিত প্রাণিকুল’

ঢাকা: ‘বিশ্বায়নের যুগে উষ্ণায়নের চাবুকে জর্জরিত হচ্ছে প্রাণীকুল। আর এর পেছনে দায়ী মানুষের লোভ।



ট্যাক্সিডার্মি শব্দটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই মঙ্গলবার জাতীয় যাদুঘরে মাসব্যাপী কর্মশালায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কথাগুলো বলেন জার্মান ট্যাক্সিডামিস্ট মার্কো ফিশার।

জার্মানির আরফার্ট ন্যাচারাল মিউজিয়ামের ট্যাক্সিডামিস্ট ফিশার বলেন, ট্যাক্সিডার্মি শব্দটি বাংলাদেশে একটু নতুন মনে হলেও বিশ্ব ইতিহাসে তা নতুন নয়। এর আক্ষরিক অর্থ ‘প্রাণী চর্ম প্রতিরূপ’। সোজা কথায় মৃত প্রাণীর চামড়া বিশেষ পদ্ধতিতে ছাড়িয়ে অবিকল আরেকটি অবয়ব তৈরিই ট্যাক্সিডার্মি।

তিনি আরও বলেন, এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের ছাত্র এবং গবেষকদের কাছে পৃথিবীর বিলুপ্ত এবং বিপন্ন প্রাণীদের ইতিহাসে টিকিয়ে রাখা যায়। কারণ মানুষের লোভের কারণে ক্রমেই বিলুপ্ত হচ্ছে প্রাণীকুল। ’

কর্মশালাটি যৌথভাবে আয়োজন করছে জাতীয় জাদুঘর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগ।

জাতীয় যাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে কর্মশালার উদ্বোধন করেন তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ট্যাক্সিডার্মি বিষয়টি শুনতে নতুন হলেও মিশরের ফারাওরা যে কায়দায় মমি তৈরি করতেন এটা তার কাছাকাছি। এর মাধ্যমে বিলুপ্ত ও বিপন্নপ্রায় প্রাণী সংরক্ষন করা যাবে এবং বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে। ’

পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও অসচেতনতার কারণে দেশের অনেক প্রাণী এখন বিপন্ন ও বিলুপ্তির পথে। দেশে অনেক জায়গায় বন্য হাতির তাণ্ডবের কথা শেনা যায়। কিন্তু হাতি তো মানুষের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেনি, মানুষ অভিবাসিত হয়েছে হাতির বাড়িতে। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রকৃতিকে যেভাবে আঘাত করছি যুগের পর যুগ ধরে, তাতে প্রকৃতি এখন ক্ষ্যাপাটে রূপ নিয়েছে। বৈরী আচরণ করছে। ’

১৯৯২ সালে বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে প্রথমবারের মতো সতর্ক করলেও কেউ তা গুরুত্ব দেয়নি বলে জানান হাছান মাহমুদ।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃতির প্রতি সচেতন হওয়া জরুরি কেবল বিপন্ন প্রাণীকে রক্ষার জন্য নয়, মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যও। ’

অনুষ্ঠানে ট্যাক্সিডার্মির ওপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন মার্কো ফিশার।

তিনি বলেন, ‘ট্যাক্সিডার্মির ইতিহাস মানবেতিহাসের সমসাময়িক। সাধারণত মেরুদণ্ডী প্রাণীকেই এর মাধ্যমে পুনঃরূপ দেওয়া হয়। ’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানীবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র দাস বলেন, ‘বর্তমানে সারা বিশ্বে ট্যাক্সিডার্মি বিষয়টি অতি জনপ্রিয় বিষয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে শিক্ষা, গবেষনা, জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ, চাকরি ও প্রত্যক্ষ টাকা উপার্জনের উপায়। ’

বাংলাদেশে প্রথম এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালিত হয় চলতি বছরের মার্চ মাসে। পক্ষকালব্যাপী ওই কর্মসূচিটি ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মারে কিলার, জাতীয় যাদুঘরের মহাপরিচালক প্রকাশ চন্দ্র দাস প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪, ডিসেম্বর ২১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।