ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

হারিয়ে যাচ্ছে শকুন

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৩
হারিয়ে যাচ্ছে শকুন

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপারে উত্তর-পশ্চিম দিকে একসময় তাকালে চোখে পড়তো একটি নির্জন চর। সেখানে দেখা মেলতো বড় বড় শকুনের।



কিন্তু সে দৃশ্য এখন আর নেই। বিলুপ্তির পথে শ্যেনদৃষ্টির এ পাখির। এখন আর ময়মনসিংহে সহজে শকুনের দেখা মেলে না।  

৮০-র দশকে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার পোড়াকান্দুলিয়া বাজারের পশ্চিমে হাটবারে আকাশ কালো করে আসতো অনেক শকুন। কংশ নদে ভেসে যাওয়া গরু-ছাগলসহ লাশের ওপর বসতো ধূসর শকুন। গরু মহালের আকাশে ছায়া ফেলে চক্কর দিতো শকুন-শকুনিরা।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ময়মনসিংহ সীমান্তে নেতাই ও সোমেশ্বরী নদীতে ভেসে যেত লাশের পর লাশ। শিববাড়ি ওয়েনজেসি শরণার্থী শিবিরে প্রতিদিন অসংখ্য লোক মারা যেত।

সেই সব লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হতো নদীতে। নেত্রকোণার দুর্গাপুরের শীতলি বিল ভরে গিয়েছিল লাশে। সেই সময় লাশের সঙ্গে পাল্লা দিতো শকুনের সংখ্যাও। লাশের পাশে অবস্থান নিয়ে থাকতো শকুন।

শকুন প্রখর দৃষ্টিশক্তির অধিকারী। এরা বটগাছ, কড়ইগাছ, শিমুল, বাঁশঝাড়ে থাকতে ভালোবাসতো। এদের দৃষ্টি এতই প্রখর যে, অনেক উঁচু থেকেও এরা মাটি বা পানির ওপর থাকা মৃত লাশ দেখতে পায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শকুন আকাশের অনেক উঁচুতে উঠে ঘণ্টার পর ঘণ্টা উড়তে পছন্দ করে। মাইলের পর মাইল ঘুরেও আবার ঠিকই ফিরে আসতে পারে একই স্থানে।

আন্তর্জাতিক সংস্থা বার্ড লাইফ ইন্টারন্যাশনালের তথ্য মতে, গত এক যুগে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলা শকুনের সংখ্যা ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব কনজারভেশন ফর নেচারের পর্যবেক্ষণে বাংলা শকুনকে অতি বিপন্ন প্রাণীর তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শকুনের বিলুপ্তির কারণ আবাস ও খাদ্য সংকট। উচুঁগাছের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় শকুনের আবাসস্থল নষ্ট হয়েছে। আবাসস্থল সংকটের কারণে এদের প্রজনন ব্যবস্থায় সমস্যা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময় ১৭৫৫ ঘণ্টা, ১৮ এপ্রিল, ২০১৩
সম্পাদনা: শফিকুল ইসলাম শামীম, নিউজরুম এডিটর, আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।