ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

পাখির মেলায় কিচিরমিচির সারা বেলা

ইসমাইল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১২
পাখির মেলায় কিচিরমিচির সারা বেলা

ঢাকা: কোনটার লেজ লম্বা, কোনটার মাথায় ঝুটি, কোনটার সুঁচালো ঠোট। কোনটা লাল, কোনটা নীল, কোনটা আবার লাল-নীল-হলুদ রঙের।

এমন নানান প্রজাতির পাখি নিয়ে বসেছে পোষা পাখির মেলা। খাঁচায় বন্দি নানান বর্ণের এসব পাখি দেখতে ভিড় জমিয়েছেন পাখিপ্রেমীরা। শত প্রজাতির পাখির কিচিরমিচির ডাকে জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে যেন বনের আমেজ।

এভিকালচার সোসাইটি অব বাংলাদেশের আয়োজন প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার থেকে দু’দিনব্যাপী এ মেলা শুরু হয়েছে। মেলায় শতাধিক প্রজাতির বিদেশি পোষা পাখি প্রদর্শনীর জন্য নিয়ে এসেছেন এভিকালচার সোসাইটির সদস্যরা।

এভিকালচার সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি আব্দুল হামিদ বকুল বাংলানিউজকে বলেন, “বনের পাখির উপর চাপ কমাতে এ মেলার আয়োজন। ”

দেশি পাখি ধরা ও শিকার এবং বিক্রি না করার ক্ষেত্রে এ মেলা গরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে জানান তিনি।

মেলায় লাভ বার্ড, ফিন্স, কোকাটেইল, বাজরিগার, কাকাতুয়া, বিভিন্ন প্রজাতির ম্যাকাউ (টিয়া), জাভা, ইলেকটা, কোনরসহ শতাধিক প্রজাতির ৫ শতাধিক বিদেশি পাখি প্রদর্শনীর জন্য নিয়ে এসেছেন পাখি পালকরা।

এভিকালচার সোসাইটির সহ-সভাপতি মো. আসলাম নিয়ে এসেছেন তিন প্রজাতির স্ক্রটেল ম্যাকাউ। লম্বা লেজওয়ালা এই পাখির একটির দাম প্রায় সাড়ে চার টাকা। এই পাখিটিকে হাতে বা ঘাড়ে নিয়ে ছবি তুলছেন তরুণ-তরুনীরা। আর এ জন্য দিতে হচ্ছে একশ’ টাকা করে।

রাজধানীর মিরপুরের মনোয়ার হোসেন শাওন নিয়ে এসেছেন বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। তিনি লাভ বার্ড, বাজারিগার ও ফিন্স পাখি পালছেন। এভাবে পাখি পুষে শখের পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হওয়া যায় বলে জানান তিনি।

কেরানীগঞ্জের মনোয়ার হোসেন পলাশ নিয়ে এসেছেন ৬ প্রজাতির অর্ধশত পাখি। তিনি বাসায় বিভিন্ প্রজাতির ৫ শতাধিক পাখি পালেন।

তিনি জানান, এসব পাখি খাঁচার বাইরে গেলে বাঁচতে পারবে না। খাঁচাতেই তাদের জীবনচক্র।

এদিকে মেলায় পাখি প্রেমীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। মেলায় আসা তুরণ-তরুণীরা পাখি নিয়ে ছবি তুলছেন, কেউ বা হাত বুলিয়ে আদর করছেন। বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দাম ৫শ’ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা। অনেকে পাখি কেনার জন্য দরদাম ঠিক করে বুকিংও দিয়ে যাচ্ছেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আট বছরের শিশুকে নিয়ে এসেছিলেন আরিফা ইয়াসমিন।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, “ছোটবেলা থেকেই তিনি বিভিন্ন প্রজাতির পাখির পুষি। মেলায় আরও কিছু প্রজাতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারলাম। ”

এভিকালচার সোসাইটির সভাপতি আব্দুল হামিদ বকুল বাংলানিউজকে বলেন, “খাঁচায় পাখি পালনের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে আগ্রহ বেশি। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে অল্প খরচে পোলট্রি শিল্পের মতো এই শিল্পের বিকাশ সম্ভব। বিদেশে রফতানি করেও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হতে পারে।

আয়োজকদের অভিযোগ, বিদ্যমান বন আইনে বিদেশি পাখি পুষতে অনেক জটিলতার শিকার হতে হয়। এই আইন সংশোধন কিংবা নীতিমালা তৈরি করে বিদেশি পাখি পালনের সুযোগ করে দিলে বেকারদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বিদেশে রফতানি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যাবে।    

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১২
এমআইএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।