ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

দীর্ঘদিন পর দেখা গেল বিরল ‘মেটোচাঁদি-চড়ুইভরত’ 

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৩
দীর্ঘদিন পর দেখা গেল বিরল ‘মেটোচাঁদি-চড়ুইভরত’  চরের মাটিতে হাঁটছে ‘মেটোচাঁদি-চড়ুইভরত’ (পুরুষ পাখি)। ছবি: শামীম আলী চৌধুরী

মৌলভীবাজার: দীর্ঘ বিরতির পর আবার পাওয়া গেল ‘বিরল’ একটি পাখি। যে পাখিকে খুবই কম অর্থাৎ হঠাৎ হঠাৎ দেখা যায়।

তাতেই সৃষ্টি হয় সেই পাখিটির প্রতি আরও কৌতূহল। আরও ভালোলাগা। আরও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের তাগিদ। সম্প্রতি শৌখিন পাখিবিষয়ক আলোকচিত্রী শামীম আলী চৌধুরী চর এলাকায় গিয়ে এই পাখিটির ছবি তার ক্যামেরায় ধারণ করেছেন। এ পাখিটির নাম ‘মেটোচাঁদি-চড়ুইভরত’।  

দীর্ঘ বিরতির পর হঠাৎ করে নতুন কোনো পাখি ছবি ধারণ করতে পারার আনন্দ যে কী – সেটা পাখিবিষয়ক আলোকচিত্রীই সবচেয়ে ভালো জানেন। কেননা, একেকটি পাখির ছবি তোলার পেছনে তাদের অসীম ধৈর্য এবং কষ্ট অবিশ্বাস্য।  

সরেজমিন বা মাঠপর্যায়ে না গেলে সহজে কেউ বিশ্বাস করতে চাইবেন না। আর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয়ের কথা - সে তো বলাই বাহুল্য।

বিরল আবাসিক পাখি ‘মেটোচাঁদি-চড়ুইভরত’ (স্ত্রী পাখি)।  ছবি: শামীম আলী চৌধুরী

এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ পাখিটির নাম ‘মেটোচাঁদি-চড়ুইভরত’। কেউ কেউ আবার ‘বালুচাটা ভরত’ও বলে থাকেন। ইংরেজি নাম Ashey crowned sparrow lark. ১১ নভেম্বর আমরা ১৩ জন বার্ড ফটোগ্রাফার মাওয়া দিয়ে লৌহজংয়ের একটি পাখির খোঁজে পদ্মার চরে যাই। ২০১০ সালে এই পাখিটি পঞ্চগড়ে প্রথম দেখা যায়। তখন অল্প সংখ্যক ফটোগ্রাফার পাখিটির ছবি তুলেছেন। দীর্ঘ বিরতির পর ২০২০ সালে রাজশাহীর পদ্মার চরে একজন ফটোগ্রাফার পাখিটির আবার দেখা পায়।  

পাখিটির শারীরিক বর্ণনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এরা ধূসর বর্ণের ছোট পোকা শিকারি পাখি। দৈর্ঘ্য ১৩ সেন্টিমিটার এবং ওজন ১৬ গ্রাম। এদের ঠোঁট খুব খাটো ও গোলাকার। এরা মূলত কাঁটাযুক্ত বিচ্ছিন্ন ঝোপসমেত শুকনো অঞ্চল, ঘাসের ঝোপ, বালুময় নদীর পাড়ে ও শুকনো জোয়ার-ভাটার কাদাচরে বিচরণ করে। এরা জোড়ায় থাকে। কখনো ছোট দলেও দেখা যায়। এদের খাবার তালিকায় রয়েছে বীজ, শক্ত খোলকযুক্ত গোবরে পোকা, পিঁপড়া ও অন্যান্য পোকামাকড়। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের বালুময় নদীতীরে পাওয়া যায়।

উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি জানান, ‘পাখিটি বাংলাদেশের ‘বিরল আবাসিক পাখি’। সহজে দেখা যায় না। সর্বশেষ ২০২৩ সালে পাখিটি মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের পদ্মার চরে আবারও দেখা যায়। খবর পেয়ে আমরা ছুটে যাই পাখিটির ছবি তোলার জন্য। পাখিটির ছবি তুলতে পেরে আমরা সবাই আনন্দিত। ’ 

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) বাংলাদেশের ‘রেড লিস্ট’ অনুযায়ী এই প্রজাতিটি ‘ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত’ প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৩
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।