ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

চট্টগ্রাম থেকে সোমেশ্বর অলি

চট্টগ্রামে ভেঙে ফেলা হচ্ছে আরও দুটি প্রেক্ষাগৃহ

সোমেশ্বর অলি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৬
চট্টগ্রামে ভেঙে ফেলা হচ্ছে আরও দুটি প্রেক্ষাগৃহ ছবি: নূর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম থেকে : সরকারি নির্দেশে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের দুটি প্রেক্ষাগৃহ। ঐতিহ্যবাহী এই সিনেমা হলগুলো দিনে দিনে জৌলুস হারালেও টিকে ছিলো কোনোরকম।

এবার হলগুলো চিরতরে অস্তিত্ব হারাতে যাচ্ছে। বাংলানিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন নগরীর আলমাস ও দিনার প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, আলোচিত প্রেক্ষাগৃহগুলো ভেঙে বহুতল ভবন তৈরি করা হবে।

শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে বাংলানিউজের এই প্রতিবেদক সরেজমিনে এসব তথ্য সংগ্রহ করেন। জানা গেছে, স্বাধীনতার আগে থেকে গৌরবের সঙ্গে সিনেমা প্রদর্শন করছে চট্টেশ্বরী রোডের আলমাস সিনেমা হল। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে চারতলা ভবনটিতে আরও একটি হল চালু হয় দীর্ঘদিন আগে। এর নাম দিনার। এই হলটি মূলত ইংরেজি সিনেমা প্রদর্শন করতো।

পরে দুই হলেই বাংলাদেশি ছবি একযোগে দেখানো হয়। একটিতে পুরনো আর একটিতে নতুন ছবি দেখার সুযোগ পেতেন দর্শক। দিনের পর দিন লোকসান হওয়ায় বন্দের নির্দেশ আসে সরকার থেকে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

আলমাস হলের ম্যানেজার আব্দুল আওয়াল বাংলানিউজকে বলেন, ‘২০ বছর ধরে এখানে দায়িত্ব পালন করছি। সিনেমার টানে এখানে পড়ে আছি। ভেবেছিলাম শেষ পর্যন্ত লড়বো। কিন্তু লোকসানের মুখে ওপর থেকে হলটি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলার চেষ্টা করছি দীর্ঘদিন ধরে। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠান হলেও এটি ইজারা নিয়ে পরিচালনা করছে আল হেলাল অ্যান্ড কোম্পানি। তারা নতুন করে ইজারা নিতে গেলে সরকার থেকে বলা হয় যে, এখানে আর সিনেমা হল চলবে না। হবে বহুতল ভবন। ’

বহুতল সেই ভবনটিতে থাকছে মার্কেট ও আবাসিক ব্যবস্থা। এ ক্ষেত্রে সিনেপ্লেক্স রাখার কোনো উদ্যোগ আছে কি-না জানতে চাইলে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আওয়াল জানান, তিনি এমনটি শোনেননি। সিনেপ্লেক্স না থাকার সম্ভাবনাই বেশি।

দিনার হলের ম্যানেজার সাবের আহমেদ জানান, বহুতল ভবন নির্মাণের সব কাগজপত্র তৈরি হয়ে আছে। চারতলা বিশিষ্ট এই ভবনের আলমাস ও দিনার হলের অস্তিত্ব প্রায় বিলীন। যে কোনো মুহূর্তে এটা ভেঙে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

একের পর এক হল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আব্দুল আওয়াল ও সাবের আহমেদ জানান, এখন মানসম্পন্ন সিনেমা তৈরি হয় না। মাঝে মধ্যে দু’একটা ভালো ছবি দিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এ কারণে সবাই অন্য কাজে মনোনিবেশ করছে। শুধু ভালোবাসা দিয়ে হল টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তিনি মনে করেন, এ ব্যাপারে সরকারের সদিচ্ছা জরুরি। অন্যথায় বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ভাগ্যে করুণ পরিনতি রয়েছে।

চট্টগ্রাম শহর ও আশপাশে সব মিলিয়ে প্রেক্ষাগৃহ ছিলো ২৬টি। এর মধ্যে এখন টিকে আছে মাত্র পাঁচটি। গত পাঁচ বছরে এখানে তিনটি হল বন্ধ হয়েছে। পাঁচ বছরে বন্ধ হয়ে যাওয়া হলগুলো হলো ঝুমুর, সাগরিকা ও গুলজার সিনেমা হল। এবার যুক্ত হচ্ছে আরও দুটি।

বাংলাদেশ সময় ১৬৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৬
এসও/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।