ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

বৃষ্টিতে ভিজেই শিক্ষার্থীদের পক্ষে ‘শিল্পী সমাজের’ বিক্ষোভ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০২৪
বৃষ্টিতে ভিজেই শিক্ষার্থীদের পক্ষে ‘শিল্পী সমাজের’ বিক্ষোভ

কোটা সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি বেশ কয়েকদিন ধরেই উত্তাল সারাদেশ। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দেশের বিনোদন অঙ্গনের তারকারাও এ বিষয়ে কথা বলছেন।

বৃহস্পতিবার (০১ আগস্ট) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানাতে ফার্মগেটে ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ’-এর ব্যানারে সমবেত হয় শিল্পী সমাজ। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই এ সময় উপস্থিত ছিলেন মামুনুর রশীদ, মোশাররফ করিম, আজমেরী হক বাঁধন, সাবিলা নূর, আশফাক নিপুণ, নুরুল আলম আতিক, অমিতাভ রেজা, পিপলু আর খান, শিবু কুমার শীল, রেদওয়ান রনি, জাকিয়া বারী মম, সোহেল মণ্ডল, সিয়াম আহমেদসহ অসংখ্য সংস্কৃতিকর্মী।

উপস্থিত প্রায় সবার একই দাবি, হত্যার বিচার এবং হত্যা বন্ধ করা। সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির প্রতিও। এ সময় ‘ভয়হীন-ন্যায্য-মানবিক মর্যাদার বাংলাদেশ চাই’, ‘সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করো’, ‘হত্যা-সহিংসতা-গণগ্রেফতার-হয়রানি বন্ধ কর’ স্লোগান দিতে থাকেন শিল্পীরা।  

এই আয়োজনে অংশ নিয়ে মোশাররফ করিম বলেন, দেশে বর্তমানে যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তাতে আমরা ঘরে বসে থাকার মতো অবস্থায় নেই। আমরা সাধারণ মানুষ। আমরা শান্তি চাই, আর গোলাগুলি, রক্ত, হত্যা দেখতে চাই না।  

অভিনেতা সিয়াম আহমেদ বলেন, যখন দেশের মানুষ একটা ন্যায্য দাবী রাখেন তখন এটা বুঝা উচিত এটা ফেলে দেওয়ার মত না। আমাদের যে ভাই-বোনেরা মারা গেল এটা মেনে নেওয়ার না। যদি আপনি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ হন তবে রাতে ঘুমাতে পারবেন না।  

সিয়াম আহমেদ আরো বলেন, আমার নিজের বাচ্চা আছে। আমি জানি আজ থেকে ১০ বছর পর আমার বাচ্চা আমাকে প্রশ্ন করবে তখন তুমি কি করেছিলে। সে সময় যেন আমি বুক উঁচু করে বলতে পারি আমি তাদের পাশে ছিলাম। আমি তাই ছাত্রদের সঙ্গে আছি। এই বাচ্চারা কোনো অনৈতিক দাবী রাখেনি যার জন্য তাদের প্রাণ হারাতে হবে। একেকজন বাবা-মায়ের আহাজারি নেওয়া যায় না। এর বিচার যতদিন না হবে বাংলাদেশের মানুষ শান্তি পাবে না।   

আজমেরী হক বাঁধন বলেন, আমাদের সঙ্গে অন্যায়-অবিচার-নিপীড়ন হয়েছে। যতদিন শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে আছে, আমরা ততদিন তাদের সঙ্গে থাকবো। আমার যদি বিবেক থেকে থাকে, তাহলে এই অবস্থায় মানসিকভাবে সুস্থ থাকার কোনো অবকাশ নেই। কারণ যেদিন থেকে এই ঘটনাগুলো শুরু হয়েছে, যেদিন থেকে গুলি চলেছে, সেদিন থেকে আমি দুই চোখের পাতা এক করতে পারিনি। কারণ ওই শিশুগুলোর মধ্যে আমার সন্তান থাকতে পারতো। ওই মানুষগুলোর মধ্যে আমি, আপনি থাকতে পারতাম। আমি এসব অন্যায়ের সুষ্ঠু তদন্ত চাই এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হোক। এর প্রকাশ্য প্রয়োগ আমরা দেখতে চাই।  

সাবিলা নূর বলেন, যেসব শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের মুক্তি চাই। যেসব হত্যা হয়েছে সেসবের বিচার চাই।  

নির্মাতা আশফাক নিপুণ বলেন, আমরা ছাত্রদের নয় দফার সঙ্গে সংহতি জানাই। যাদের আটক করা হয়েছে তাদের দ্রুত মুক্তি দেওয়া হোক। ছাত্ররা কী বলতে চায় সেটা রাষ্ট্র শুনুক। তারা দেশের শত্রু না, তারা মানবিক সমাজ গড়তে চায়। আমরাই একটা মানবিক সমাজে থাকতে চাই।  

অভিনেত্রী নাজিয়া হক অর্ষা বলেন, এভাবে গ্রেপ্তার মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। এত রক্ত, এত ক্ষত আমি মেনে নিতে পারিনি, পারছিও না সাধারণ নাগরিক হিসেবে। তাদের যে দাবি সেটা যদি শুরুতেই আলোচনায় শেষ করা হতো তাহলে এত মানুষ মরতো না। ওই জায়গা থেকে মনে ক্ষত আছে আমার। যেভাবে মারধর, গুলি করা হচ্ছে এটা বন্ধ করা উচিৎ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০২৪
এসসি/এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।