ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

৩ বার ‘মাইলস’ ছাড়েন শাফিন আহমেদ

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৪
৩ বার ‘মাইলস’ ছাড়েন শাফিন আহমেদ

ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল শাফিন আহমেদের। ভার্জিনিয়ার একটি হাসপাতালে গত দু’দিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।

কিন্তু আর ফেরা হলো না। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায়  বাংলাদেশ সময় আজ (২৫ জুলাই) সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও ব্যান্ড তারকা।

আশি ও নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশে তুমুল জনপ্রিয় ছিল ব্যান্ড সংগীত। সোলস, ফিলিংস (নগর বাউল) ও এল আর বি’র সঙ্গে যে ব্যান্ডটি সমানতালে পাল্লা দিত সেটি হলো মাইলস।

আর মাইলসের বেজ গিটারিস্ট ও প্রধান গায়ক ছিলেন শাফিন। ভাই হামিন আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে মাইলসকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যান শাফিন। শাফিন-হামিমের কণ্ঠে ব্যান্ডটি থেকে প্রকাশিত ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘ফিরিয়ে দাও’ ও  ‘কি যাদু’সহ অনেক গান সে সময় ছিল মানুষের মুখে মুখে।

কনসার্ট বা কোনো সঙ্গীতায়োজন মানেই এসব গান। এমন জনপ্রিয়তা পাওয়ার পরও বিভিন্ন সময়ে তিনবার মাইলস মাইলস ছেড়ে বের হয়ে যান শাফিন আহমেদ। আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বই শাফিনের ব্যান্ডটি ছাড়ার মূল কারণ বলে জানা যায়।

২০১০ সালের শুরুর দিকে একবার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ব্যান্ড থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন শাফিন। কয়েকমাস পর ফের ব্যান্ডে ফেরেন।

এরপর ২০১৭ সালে অক্টোবরেও তিনি একবার মাইলস ছেড়ে দেন। কয়েকমাস পর দ্বন্দ্ব ভুলে ফের ব্যান্ডে ফিরেছিলেন।  

সবশেষ তথা তৃতীয়বার মাইলস ছাড়েন ২০২১ সালের নভেম্বরে। শাফিন আহমেদ জানান, তিনি মাইলস থেকে আলাদা হয়ে গেছেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে ব্যান্ডের সব কার্যক্রম বন্ধের দাবিও করেন তিনি।

সে সময় এক ভিডিও বার্তায় শাফিন বলেন, ‘মাইলসের সঙ্গে আমার পথ চলা সেই ১৯৭৯ সালে। অনেক সময় দিয়েছি, শ্রম দিয়েছি, অনেক ক্রিয়েটিভ কাজ হয়েছে। মাইলসের আজকের অবস্থানের পেছনে আমার কতটা অবদান সেটা সবাই জানেন। চলতি বছরের শুরুতে একটা সিদ্ধান্ত নেই মাইলসের বর্তমান লাইনআপের সঙ্গে আমার মিউজিকের কোনো কার্যক্রম সম্ভব হবে না। বর্তমান লাইনআপের সঙ্গে সব ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকব। ’

মাইলস ছাড়লেও সংগীত ছাড়বেন না বলে স্পষ্ট করেছিলেন শাফিন। তবে মাইলস নামটি যেন অপব্যবহার না হয় সে দাবিও রাখেন।

শাফিন বলেছিলেন, ‘মাইলসের সঙ্গে যদি কাজ না করতে পারি তাহলে এখানেই মাইলসের কার্যক্রম স্থগিত করাই বেস্ট ডিসিশন বলে আমি মনে করি।  অন্য কেউ যেন মাইলস নামটি ব্যবহার না করে। তবে আমাকে স্টেজে পাওয়া যাবে, আমাকে রেকর্ডিংয়েও পাওয়া যাবে। ’

ফরিদ রশিদের হাত ধরে ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ব্যান্ড দল ‘মাইলস’। দলটির প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম ‘প্রতিশ্রুতি’ প্রকাশ হয় ১৯৯১ সালে। তার আগে প্রকাশিত হয় দুটি ইংরেজি গানের অ্যালবাম ‘মাইলস’ ও ‘এ স্টেপ ফারদার’।

শাফিন-হামিন ছাড়াও মাইলস ব্যান্ডের প্রাণ যারা- মানাম আহমেদ (ভোকাল ও কী-বোর্ড), ইকবাল আসিফ জুয়েল (ভোকাল ও গিটার), সৈয়দ জিয়াউর রহমান তূর্য (ড্রামস), ওয়াসিউন (গিটার), শাহিন (গিটার), সুমন (কী-বোর্ড), উজ্জ্বল (পার্কিশন), শামস (বেজ গিটার) ও রূমি (ড্রামস)।  

‘চাঁদ তারা সূর্য নও তুমি’র মতো মাইলসের জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে- ‘গুঞ্জন শুনি’, ‘সে কোন দরদিয়া’,  ‘ধিকি ধিকি’, ‘পাহাড়ি মেয়ে’, ‘নীলা’, ‘প্রথম প্রেমের মতো’, ‘কতকাল খুঁজব তোমায়’, ‘হৃদয়হীনা’, ‘স্বপ্নভঙ্গ’, ‘শেষ ঠিকানা’, ‘পিয়াসী মন’, ‘বলব না তোমাকে’, ‘জাতীয় সঙ্গীতের দ্বিতীয় লাইন’ ও ‘প্রিয়তমা মেঘ’।

আরও পড়ুন>> সংগীতশিল্পী শাফিন আহমেদ মারা গেছেন

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।