গাইবান্ধা থেকে: গাইবান্ধা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র মেয়র প্রার্থীদের ব্যক্তি ইমেজের চেয়ে প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে দলীয় পরিচয়। দলীয় প্রভাবের উপর ভিত্তি করেই তাদের জয়-পরাজয় নির্ধারণ হতে পারে।
এই দুই প্রার্থীর পাশাপাশি রয়েছেন বর্তমান পৌর মেয়র শামসুল আলম। এক সময় বাসদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও বর্তমানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই নির্বাচনে লড়ছেন তিনি। এই তিন প্রার্থীর মধ্যেই ত্রিমুখী লড়াই হবে গাইবান্ধার পৌর নির্বাচনে।
পৌরসভার ভোটারদের কথা, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী যে-ই আসুক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বর্তমান মেয়রের সঙ্গে।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গাইবান্ধা পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে চায়ের দোকানে কথা হয় একজন তরুণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাওনের সঙ্গে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনে দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। যে-ই এই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপরে উঠে আসবে, তাকে মোকাবেলা করতে হবে বর্তমান মেয়রকে।
পৌরসভার ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, শামসুল আলমের ব্যক্তিগত ইমেজ ভালো। একজন স্বচ্ছ মানুষ হিসেবে সর্বস্তরের মানুষের কাছে তার পরিচিতি আছে। গত পাঁচ বছর মেয়র হিসেবে সফলভাবে পৌরসভা চালিয়েছেন। বড় ধরনের কোনো ব্যর্থতা বা দুর্নাম নেই। তারপরও যেহেতু নির্বাচনে দলীয় প্রভাব একটা বড় বিষয়, তাই এই প্রভাবমুক্ত ভোটই তার একমাত্র ভরসা।
এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে প্রার্থী হয়েছেন জেলা যুবলীগের সভাপতি শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির মিলন। পৌর এলাকায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা ভালো। মানুষের বিবেচনায় রয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হলে উন্নয়ন কাজ ত্বরান্বিত হবে। নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জনসমর্থনের দিক থেকে বাড়তি সুবিধাও পাচ্ছেন তিনি।

বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন শহীদুজ্জামান শহীদ। বিএনপির ভোটই তার ভোট। ব্যক্তি হিসেবে ভোট টানার মতো ইমেজ আছে তারও। তার কথায়ও তা স্পষ্ট হয়ে যায়। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মানুষ বিএনপিকে ভালোবেসে ভোট দেবে। এখানে ব্যক্তির চেয়ে দলের ও দলীয় প্রতীক ধানের শীষের প্রাধান্য বেশী।
নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাওয়ায় জামায়াত দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও গাইবান্ধা পৌরসভায় জামায়াতের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন।
এদিকে, নির্বাচনের আর মাত্র ১২ দিন বাকী। ইতোমধ্যেই গাইবান্ধার নির্বাচনী মাঠ ব্যাপক সরগরম হয়ে উঠেছে। প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে গাইবান্ধা পৌরশহর। রাস্তায় রাস্তায় চলছে মাইকে প্রচারণা। প্রার্থীরাও দিনরাত ছুটছেন ভোটারদের ঘরে ঘরে। বিশেষ করে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীদেরই মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইতে দেখা গেছে বেশি।

রাত ৮টার দিকে শহরের একটি আবাসিক এলাকায় গিয়ে এমন দৃশ্যই চোখে পড়লো। বিএনপির প্রার্থী শহীদুজ্জামান শহীদ ঘরে ঘরে দরজায় গিয়ে ডেকে ডেকে ভোট চাচ্ছেন।
এই একইভাবে ভোটের জন্য মানুষের কাছে ছুটছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির মিলনও। তার সঙ্গে দেখা করে কথা বলার জন্য শহরের কয়েকটি এলাকায় গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। রাত সাড়ে ১০টার দিকেও তিনি শহরের মাঝিপাড়া এলাকায় গণসংযোগ করছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৫
এসকে/আরএইচএস/আরএইচ
** আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ
** শোর উঠেছে ধানের শীষের, ভোট পড়বে নৌকায়
** আ’লীগের ভরসা ইমেজ, বিএনপির ভরসা প্রতীক
** নৌকায় ভাঙছে বিভেদের দেয়াল
** ‘রাজা’ ‘বখত’ নয়, এবার লড়াই দলীয়
** নৌকা-ধানের শীষ নয়, লড়াই কালাম-শামছুর
** ছাতকে ‘ফ্রি চা-পানি’, মিলছে ‘টেকা-টুকা’ও
** জকিগঞ্জবাসীর দুঃখগাঁথা
** ওপারে শীতের চাদর, এপারে নির্বাচনী উত্তাপ
** বছর ধইরা মাঠ ঠিক করছি, এখন সরতাম কিতার লাগি
** লাখ লাখ টেকার ভুট এক হাজারে বেচিয়া কতদিন খাইবা?
** এখানে কুনো ভুটো কারচুপি অইছে না
** ডিজিটাল রেল, সময়ানুবর্তী রেল