ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ইভিএম প্রদর্শন, ভোটদানের পদ্ধতি শেখাবে ইসি

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৯ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০১৮
ইভিএম প্রদর্শন, ভোটদানের পদ্ধতি শেখাবে ইসি প্রতীকী ছবি

ঢাকা: বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে ভোটগ্রহণ করার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছে। তাই এই ভোটযন্ত্রের ওপর সবার আস্থা তৈরিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) হাতে নিয়েছে ভোটারদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ।

বরিশাল সিটির মাধ্যমে এটি শুরু হলেও পর্যায়ক্রমে দেশের সব এলাকাতেই এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে। এজন্য ভোটাদের প্রশিক্ষণের সুবিধার্থে একটি মাস্টার ট্রেইনার গ্রুপ তৈরি করছে নির্বাচন কমিশন।

মোট ২০ কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত ওই মাস্টার টিম পরবর্তীতে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা ও ভোটারদের প্রশিক্ষণ দেবে।
 
এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১০ সালে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের প্রচলন শুরু করে। তারা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে ইভিএম প্রস্তুত নেয়। বেশ কয়েকটি নির্বাচনে ব্যবহার করে এই ভোটযন্ত্রে বিরাট সাফল্য অর্জন করে ওই কমিশন। কিন্তু পরবর্তীতের কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদর নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নিয়ে যন্ত্রটি রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২০১৩ সালে ব্যবহার করতে গেলে বিপত্তি বাঁধে।  

ওই নির্বাচনে একটি মেশিন বিকল হলে আর ভোটগ্রহণ করা যায়নি। এমনটি মেশিনটির ত্রুটির কারণ নির্ণয় এবং সমাধান বের করতে পারেনি। ফলশ্রুতিতে তারা প্রায় সাড়ে ১২শ ইভিএম মেশিন বাতিল ঘোষণা করে।
 
কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের বাইরে থেকে নতুন ইভিএম কিনে আনে। যা সরবরাহ করছে বাংলাদেশে মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি। ইতোমধ্যে কেএম নূরুল হুদা ঘোষণা দিয়েছেন আগের ইভিএমগুলোর চেয়ে এগুলো অধিক ভালো। এই যন্ত্রে ভোট কারচুপি করার কোনো উপায় নেই। কোনো দলকে নতুন এই মেশিনের ওপর অনাস্থা প্রকাশ না করে বরং পরীক্ষা করার আহ্বানও জানান তিনি। সিইসি বলেন, কেউ চাইলে তাদের আমরা এই মেশিনের কার্যকারিতা দেখাবো।
 
সেই কথার ধারাবাহিকতায় নির্বাচন কমিশন গত ডিসেম্বরে রংপুর এবং গত মে মাসে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দু’টি করে কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করে। এতে বেশ সাড়াও পড়ে। এছাড়া বিকেল চারটায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই ফল ঘোষণা করা যায়। এসব বিষয়কে সাফল্য ধরে কমিশন এবার ইভিএম ব্যবহারের পরিধি বাড়াচ্ছে। এজন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রশিক্ষক টিম তৈরি করে দেশব্যাপী ভোটারদের প্রশিক্ষিত করার উদ্যোগ নিয়েছে।
 
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৬টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের হার বাড়ানো হবে জানিয়েছে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাও।
 
সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই আগামী ৭ জুন বরিশালে শুরু হচ্ছে ভোটারদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এই কার্যক্রম দু’টি স্পটে পরিচালিত হবে। এর আগে ৬ জুন বরিশাল ও ফরিদপুর অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরপর ওই দিনই জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যম এবং অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিদের ইভিএমে ভোটদান পদ্ধতি প্রদর্শন করা হবে।
 
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মো. মুখলেসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আইন অনুযায়ী ইভিএমে ভোটগ্রহণ করার ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে। তবে ভোটারদের মাঝে জনপ্রিয়তা আসেনি বলে পুরো নির্বাচন ইভিএমে করা হচ্ছে না। তাই ভোটারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার মাধ্যমে এই যন্ত্রে তাদের আস্থা বাড়ানোর উদ্যোগে এই প্রশিক্ষণ। এতে ভোটাররা সহজেই ইভিএম সম্পর্কে বুঝতে পারবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৬ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৮
ইইউডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।