ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

নারীদের জন্য এক তৃতীয়াংশ আসনের সুপারিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৭
নারীদের জন্য এক তৃতীয়াংশ আসনের সুপারিশ

ঢাকা: জাতীয় সংসদে মোট আসনের এক তৃতীয়াংশ আসনে নারীদের সরাসির নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্ব করার ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ এসেছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)।

বৃহস্পিতবার (৫ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বসে এমন সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ। এছাড়াও দলটির পক্ষ থেকে তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পূর্ববতী নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অব্যাহতি দেওয়ার আইন প্রণয়নের ওপরও জোর দিয়েছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইস) কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপের বাসদের সম্পাদক খালেকুজ্জামানের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।

সংলাপ শেষে খালেকুজ্জামান বলেন- আমরা সেনা মোতায়েনের কথা বলিনি। যখনই সেনা মোতায়েনের কথা বলবো তখনই যুদ্ধ করতে যাবো, নাকি নির্বাচন করতে যাবো? তাহলে তো এক সময় জাতিসংঘের বাহিনী আনতে হবে। সুশৃঙ্খলতা, সংঘাত মোকাবেলার জন্যে সেনা ডাকতে হয় তাহলে তো নির্বাচন হয় না। সেনা ছাড়া পরিস্থিতি যদি নির্বাচন কমিশন নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে,তাহলে নির্বাচনই তো হবে না।

তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে- অবাধ, রুটিন কাজ পরিচালনাকারী সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠান, দলনিরপেক্ষ অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থার জন্য আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় মতামত সৃষ্টি, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আলাদা আইন ও নির্বাচন কমিশনের জন্য আলাদা বাজেট দেওয়া।  

এছাড়া নির্বাচনী জামানত ৫ হাজার টাকা, নির্বাচনী ব্যয় ১০ লাখের মধ্যে সীমিত রাখা, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জন্য আজীবন সম্মানী ভাতা চালু করা,  নির্বাচনে কালো টাকা, পেশীশক্তি, সাম্প্রদায়িকতা ও আঞ্চলিকতা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করা, পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম ব্যবহার করা এবং নির্বাচনী বিরোধ মেটানোর জন্য স্বতন্ত্র আদালত গঠনের সুপারিশও করা হয়েছে।

এদিকে জাকের পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা আমীর ফয়সালের নেতৃত্বে দলটির ১০ সদস্যের প্রতিনিধ দল সংলাপে অংশ নেয়।

সংলাপ শেষে মোস্তফা আমীর ফয়সাল সাংবাদিকদের বলেন, সেনাবাহিনীর জন্য স্পষ্ট করে বলার সময় এখনও আসেনি। সবার আগে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। প্রয়োজনে বারবার আলোচনা করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে স্থায়ী সমাধান দরকার। তবে এ বিষয়ে আমাদের কোনো প্রস্তাব নেই।

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশন যে সব ব্যবস্থা নেবে জাকের পার্টি তাতে সমর্থন দেবে।  

দলটি মোট ২১ দফা সুপারিশ করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা, হ্যাকিং প্রটেকটেড ইভিএম ব্যবহার, ইসির বাজেট বৃদ্ধি, নির্বাচনী ব্যয় মনিটরিং, সৎ-যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে আনার ব্যবস্থা প্রভৃতি।

গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এবং ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিল ইসি। এরপর গত ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন।

সংলাপে আসা সুপারিশগুলোর মধ্যে  সেনা মোতায়েন, না ভোটের প্রবর্তন, প্রবাসে ভোটারধিকার প্রয়োগ, জাতীয় পরিষদ গঠন, নির্বাচনকালীন অস্থায়ী সরকার গঠন, নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার, নির্বাচনের সময় সংসদ ভেঙে দেওয়া, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার ও নির্বাচনকালীন ইসির অধীনে জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, দলের নির্বাহী কমিটিতে বাধ্যতামূলকভাবে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখার বিধান তুলে নেওয়া ইত্যাদি অন্যতম।

আগামী ৮ অক্টোবর বেলা ১১টায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি (তারা) ও বিকেল ৩টায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ’র (মশাল) সঙ্গে সংলাপে বসছে নির্বাচন কমিশন। এরপর ৯ অক্টোবর জাতীয় পার্টি (লাঙল), ১৫ অক্টোবর বিএনপি (ধানের শীষ) এবং ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের (নৌকা) সঙ্গে বসবে নির্বাচন আয়োজনকারী এ কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৭
ইইউডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।