ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ভোটাররাই টাকা দিলেন প্রার্থীকে 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৪
ভোটাররাই টাকা দিলেন প্রার্থীকে 

লক্ষ্মীপুর: ভোট প্রার্থনায় ভোটারদের দ্বারপ্রান্তে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। তবে ভোট চাইতে গিয়ে ভোটারদের কাছ থেকে ‘ভোটের খরচ’ পেয়েছেন একজন প্রার্থী।

ভোটাররা চাঁদা তুলে দিয়েছেন প্রার্থীর হাতে।  

এমন ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে। এখানে রকেট প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুস সাত্তার পালোয়ানকে ভোটের খরচের জন্য টাকা দিয়েছেন প্রার্থীরা। নজিরবিহীন এ ঘটনার প্রায় আড়াই মিনিটের একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, আবদুস সাত্তার পলোয়ান নদী বাঁধ আন্দোলন নিয়ে সংগ্রাম করছেন। উপকূলীয় বাসিন্দাদের ভিটেমাটি রক্ষার প্রতিশ্রুতি নিয়ে মাঠে নেমেছেন তিনি। ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছেন এ আইনজীবী। নির্বাচনী বিভিন্ন পথসভায় নদী বাঁধ নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার সময় লোকজন ছুটে আসেন তার বক্তব্য শুনতে।  

বুধবার (৩ জানুয়ারি) রাতে নির্বাচনী এলাকার কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ফজুমিয়ারহাটে পথসভায় তিনি বক্তব্য রাখেন। সেখানে তিনি নির্বাচনী ব্যয় বহন করার মতো কোনো টাকা নেই বলে উপস্থিত লোকজনকে বলেন। তখন লোকজন চাঁদা তুলে তার হাতে দেন।  

জানা গেছে, ভোটাররা সাত্তার পলোয়ানকে ৫ হাজার ৬০০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এ টাকা সামান্য হলেও তিনি জনগণের আশীর্বাদ হিসেবে তা গ্রহণ করেছেন।

আবদুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, ভোট করতে প্রতিদিনই অন্যান্য প্রার্থীরা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা খরচ করছে। কিন্তু আমার সে সামর্থ্য নেই। আমি নির্বাচনী পথসভায় বক্তব্যের একপর্যায়ে ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেছি, ‘ব্যক্তিগত আয় দিয়ে নির্বাচনের জন্য বিশাল ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। ’ তখন আমি ভোটারদের সহযোগিতা চেয়েছিলাম।  

তিনি জানান, এ ঘোষণার পর পরই উপস্থিত ভোটাররা ১০০ থেকে ৫০০ টাকা করে কয়েকজন আমার হাতে তুলে দেন। নির্বাচনী তহবিলের জন্য ভোটাররা আমাকে ৫ হাজার ৬০০ টাকা দিয়েছেন।  

স্থানীয় কয়েকজন ভোটার বলেন, সাত্তার পলোয়ান ভালো মানুষ। রামগতি-কমলনগর মেঘনা নদী ভাঙন কবলিত এলাকা। এখানে মেঘনা নদী শাসনের জন্য তিনি কমলনগর-রামগতি বাঁচাও মঞ্চের মাধ্যমে আন্দোলন করে আসছেন।

তারা বলেন, ভাঙনরোধে নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী ৩১শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও কাজের অগ্রগতি নেই বললেই চলে। একটি চক্র সাত্তারকে এখন আর আন্দোলন করতে দেয় না। যদি সাত্তার এমপি নির্বাচিত হন তাহলে এ এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি নদী শাসন দ্রুত সময়ে বাস্তবায়ন হবে। উপকূলের সর্বহারা মানুষজন তার পক্ষে রয়েছে। তার বক্তব্যেও সর্বহারাদের কষ্টের কথা ভেসে ওঠে। আর্থিকভাবে তিনি অন্য প্রার্থীদের মতো শক্তিশালী না হলেও মানুষের জন্য তিনি খুবই আন্তরিক।

সাত্তার পলোয়ান বলেন, সংসদ সদস্য হওয়া আমার মূল লক্ষ্য নয়। নদী বাঁধ নিয়ে কাজ করাই আমার মূল উদ্দেশ্য। নদী বাঁধ প্রকল্পের সভাপতির দায়িত্বে থাকেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। এমপি চাইলে উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে ভূমিকা রাখতে পারেন। সেই লক্ষ্যে আমি প্রার্থী হয়েছি। আমি নির্বাচিত হলে আমার মূল লক্ষ্য হবে বাঁধ নির্মাণ কাজে অবদান রাখা।  

লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনে আবদুস সাত্তার ছাড়াও আরও ৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। এরমধ্যে নির্বাচনী মাঠে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন মহাজোট মনোনীত জাসদের মোশারফ হোসেন (নৌকা) ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আবদুল্লাহ (ঈগল)। মোশারফ ও আবদুল্লাহ এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২৪
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।