ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

প্রার্থিতা ফিরে পাওয়াদের অর্ধেকের বেশি স্বতন্ত্র

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩
প্রার্থিতা ফিরে পাওয়াদের অর্ধেকের বেশি স্বতন্ত্র

ঢাকা: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা বাতিলের খাতায় যেমন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বেশি, তেমনি আপিল করে কমিশন থেকে তারাই প্রার্থিতা ফিরে পাচ্ছেন বেশি।

দু’দিনের আপিল শুনানিতে মোট ১০৭ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।

এদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন ৫৯ জন বলে জানিয়েছেন ইসির আইন শাখার কর্মকর্তারা।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) ৯৯ জনের আপিল আবেদন শুনানি করে নির্বাচন কমিশন। এদের মধ্যে ২৬ স্বতন্ত্র প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। আগের দিন ৯৪টি আপিলের শুনানি হয়, এতে ৩৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। অবশিষ্ট ৪৮জন বিভিন্ন দলের প্রার্থী।

দু’দিনে যে সকল স্বতন্ত্র প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন—চট্টগ্রাম-১০ আসনের ফরিদ মাহমুদ, ময়মনসিংহ-১১ আসনের মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ, কুষ্টিয়া-৪ আসনের আবদুর রউফ, রংপুর-২ আসনের মোছা. সুমনা আক্তার, গাইবান্ধা-২ আসনের মোছা. মাছুমা আখতার, কুমিল্লা-২ আসনের মো. আবদুল মজিদ, নোয়াখালী-১ আসনের খন্দকার আল আমিন, ঢাকা-৬ আসনের ফারহানা সাঈদ, বাগেরহাট-২ আসনের এস এম আজমল, বাগেরহাট-৪ আসনের মোঃ জামিল হোসেন, রাজবাড়ী-১ আসনের মো. ইমদাদুল হক বিশ্বাস, মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের গোলাম সরোয়ার কবীর, সুনামগঞ্জ-৪ মো. আসনের মোবারক হোসেন, ঢাকা-৩ আসনের মো. আলী রেজা, কুষ্টিয়া-১ আসনের মো. নাজমুল হুদা, জামালপুর-২ আসনের শাজাহান আলী মন্ডল, খুলনা-৪ মো. রেজভী মিয়া, খুলনা-৬ জি এম মাহবুবুল আলম, চট্টগ্রাম-৬ শফিউল আজম, কুষ্টিয়া-২ ডা. ইফতেখার মাহমুদ, নীলফামারী-৪ মোহাম্মদ সিদ্দিকুর আলম, রাজশাহী-১ শারমিন আক্তার নিপা (মাহিয়া মাহি), কিশোরগঞ্জ-৩ মো. গোলাম কবির ভূঞা, গাজীপুর-৫ মো. আমজাদ হোসেন, নাটোর-৪ সুজন আহমেদ ও রাজশাহী-৪ মো. বাবুল হোসেন।

এছাড়াও টাঙ্গাইল-২ আসনে মো. ইউনুছ ইসলাম তালুকদার, যশোর-২ আসনে এসএম হাবিবুর রহমান, জামালপুর-২ আসনে মো. জিয়াউল হক জিয়া, গোপালগঞ্জ-১ আসনে মো. কাবির মিয়া, চট্টগ্রাম-৮ আসনে আবদুচ ছালাম, বরগুনা-১ আসনে মো. খলিলুর রহমান, মেহেরপুর-২ আসনে মোখলেসুর রহমান, রংপুর-২ আসনে বিশ্বনাথ সরকার, ফরিদপুর-১ আসনে মাহমুদা বেগম, চট্টগ্রাম-২ আসনে মোহাম্মদ শাহজাহান, মাদারীপুর-২ আসনে ইউসুফ আলী সুমন, চট্টগ্রাম-১৫ আসনে আব্দুল মোতালেব, ঢাকা-৫ আসনে মো. কামরুল হাসান (রিপন), চট্টগ্রাম-১ আসনে মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, যশোর-৩ আসনে মোহিত কুমার নাথ, কুষ্টিয়া-১ আসনে ফিরোজ আল মামুন, যশোর-৬ আসনে মো. আজিজুল ইসলাম, বরিশাল-৬ আসনে  মোহাম্মদ শামসুল আলম, কুমিল্লা-৫ আসনে সাজ্জাদ হোসেন ও এম এ জাহের, বরগুনা-১ আসনে মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, চাপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, গাইবান্ধা-২ আসনে শাহ সারোয়ার কবীর, শরীয়তপুর-১ আসনে মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, নীলফামারী-১ আসনে মো. জয়নাল আবেদীন, গাইবান্ধা-৫ আসনে ফারজানা রাব্বী বুবলী, কিশোরগঞ্জ-১ আসনে সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম, নেত্রকোণা-৫ আসনে মো: আনোয়ার হোসেন, ঝালকাঠী-১ আসনে আবুল কাসেম মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, টাঙ্গাইল-৭ আসনে রাফিউর রহমান খান ইউসুফ জাই, শরীয়তপুর-২ আসনে খালেদ শওকত আলী, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে মো. হালিমুল হক মীরু, বগুড়া-৩ আসনে মো. আফজাল হোসেন ও ফরিদপুর-১ মোহাম্মদ আরিফুর রহমান স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থিতা ফিরে পান।

আপিলের দ্বিতীয় দিনে জাতীয় পার্টির বাগেরহাট-২ আসনের প্রার্থী হাজরা সহিদুল ইসলাম, ঝালকাঠী-২ আসনে মো. নাসির উদ্দিন, চাঁদপুর-৪ আসনে সাজ্জাদ রশিদ, নাটোর-৩ আসনে মো. আনিসুর রহমান, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মুন্সিগঞ্জ-২ আসনের প্রার্থী নূরে আলম সিদ্দিক, ঢাকা-৫ আসনের প্রার্থী নুরুল আমিন, ঢাকা-১৪ আসনের তৃণমূল বিএনপির মো. নাজমুল ইসলাম, রাজবাড়ী-২ আসনের এসএম ফজলুল হক, বাগেরহাট-২ মরিয়ম সুলতানা, সিরাজগঞ্জ-২ মো. সোহেল রানা, ঢাকা-১৯ আসনের বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী মো. জুলহাস, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) ঢাকা-১২ আসনের মো. আতিকুর রহমান নাজিম, জামালপুর-৪ আসনের তারিখ মাহদী, গণতন্ত্রী পার্টির নোয়াখালী-৪ আসনের সারওয়ার ই দীন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ঢাকা-১০ আসনের কেএম শামসুল আলম, জাকের পার্টির খুলনা-১ আসনের মো. আজিজুর রহমান, বিএনএম’র গাইবান্ধা-১ আসনের মো. মোস্তফা মহসিন, মুক্তিজোটের কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের মোহাম্মদ আইয়ুব হোসেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ’র গাইবান্ধা-৩ আসনের এস এম খাদেমুল ইসলাম খুদি, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, গণফোরামের সিলেট-২ আসনের মোকাব্বির খান ও কুমিল্লা-৫ আসনের আলীমুল ইহছান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের কুমিল্লা-৮ আসনের মো. হান্নান মিয়া প্রার্থিতা ফিরে পান।

এ দিন মানিকগঞ্জ-১ ও ৩ আসনের জাতীয় পার্টির মোহা. জহিরুল আলম রুবেল ও বরগুনা-২ আসনের মিজানুর রহমানের আপিল শুনানি হলেও আদেশ স্থগিত রেখেছে ইসি। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির রাজশাহী-৫ আসনের মো. আলতাফ হোসেন মোল্লা, কুমিল্লা-২ আসনের মো. শাহ আলম খন্দকারের শুনানিতে অনুপস্থিত ছিলেন। এছাড়া যশোর-৪ আসনের রনজিত কুমার এবং ময়মনসিংহ-৮ আসনের ফখরুল ইমামের আপিল শুনানি ১৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।

অন্যদিকে আপিলের প্রথম দিনে কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. নাসিরুল ইসলাম খান প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির নোয়াখালী-২ আসনের তালেবুজ্জামান, যশোর-১ আসনের মো. আক্তারুজ্জামান, খুলনা-৬ আসনের মো. শফিকুল ইসলাম মধু, কুমিল্লা-২ আসনের এটিএম মঞ্জুরুল ইসলাম ও গাজীপুর-১ আসনের এমএম নিয়াজ উদ্দিন প্রার্থিতা ফিরে পান।

এছাড়া তৃণমূল বিএনপির খুলনা-৪ আসনের শেখ হাবিবুর রহমান, সিলেট-২ আসনের মো. আব্দুর রব এবং সুপ্রিম পাটির ঢাকা-২০ আসনের মো. মিনহাজ উদ্দিন ও ময়মনসিংহ-১১ আসনের এবিএম জিয়া উদ্দিন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।

বিএনএফ’র মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের মমতাজ সুলতানা আহমেদ ও মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের মো. বাচ্ছু শেখ প্রার্থিতা ফিরে পান। আবার যশোর-৩ আসনের জাকের পার্টির মো. মহিদুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের যশোর-৩ আসনের প্রার্থী শেখ নুরুজ্জামান ও পাবনা-২ আসনের ডলি শায়ন্তনীও প্রার্থীতা ফিরে পান। বাংলাদেশ কংগ্রেসের লালমনিরহাট-২ আসনের মো. দেলাব্বর হোসেন, কুড়িগ্রাম-৪ আসনের প্রার্থী মো. আব্দুল হামিদ, বগুড়া-৪ আশরাফুল আলম (হিরো আলম) ও নেত্রকোণা-২ আসনের বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. আজহারুল ইসলাম খান, ইসলামী ফ্রন্টের ঢাকা-১৩ আসনের মো. জাফর ইকবাল নান্টু এবং জামালপুর-১ আসনের তৃণমুল বিএনপির প্রার্থী মো. গোলাম মোস্তফা প্রার্থিতা ফিরে পান।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, ৩০০ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছিল দুই হাজার ৭১৬টি। এর মধ্যে বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা বাতিল করেছিলেন ৭৩১টি, যা মোট দাখিলকৃত মনোনয়নপত্রের ২৬ দশমিক ৯২ শতাংশ বা ২৭ শতাংশ। আর বৈধ হয়েছে এক হাজার ৯৮৫টি মনোনয়নপত্র, যা দাখিলকৃত মনোনয়নপত্রের ৭৩ দশমিক ০৮শতাংশ বা ৭৩ শতাংশ। আর বাতিলের খাতায় অধিকাংশই স্বতন্ত্র, ৪২৩ জন। এদের বেশিরভাগের প্রার্থিতাই এক শতাংশ ভোটারর সমর্থনসূচক স্বাক্ষরে গরমিলের কারণ দেখিয়ে বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৫৬১টি আপিল আবেদন জমা পড়েছে। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানি করে আপিল আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করবে নির্বাচন কমিশন।

দু’দিনের আপিল শুনানিতে দেখা গেছে, স্বতন্ত্রদের বেশির ভাগই প্রার্থিতা ফিরে পাচ্ছেন। এদের মধ্যে বিরাট সংখ্যক হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতা।

আগামী ৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩
ইইউডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।