ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

কর্মচারীর হামলার শিকার হাবিপ্রবির ৫ শিক্ষক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২
কর্মচারীর হামলার শিকার হাবিপ্রবির ৫ শিক্ষক

দিনাজপুর: দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে(হাবিপ্রবি) এক কর্মচারীর হামলায় পাঁচজন শিক্ষক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় অভিযুক্ত কর্মচারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

একই সাথে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্তকে দিনাজপুর কোতয়ালী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এর আগে সকালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

আটক ওই কর্মচারীর নাম তাজুল ইসলাম। তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

আর তাজুল ইসলামের হামলায় আহত হন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যানসহ পাঁচজন শিক্ষক। পরে তাদের উদ্ধার করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হামলায় আহত শিক্ষকরা হলেন, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক রোকনুজ্জামান রনি, সহযোগী অধ্যাপক বেলাল হোসেন, প্রভাষক নির্মল চন্দ্র রায়, প্রভাষক হারুনুর রশিদ ও প্রভাষক মাহাবুবুর রহমান।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সূত্র থেকে জানা যায়, বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে একটি শিক্ষা সফরের আয়োজন করা হয়। বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সেই শিক্ষা সফরে সবারই যাওয়ার কথা ছিল। শিক্ষা সফরে একজন কর্মচারীকে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া হবে। কিন্তু এদিন সকালে অফিস সহায়ক মোঃ তাজুল ইসলাম অফিসে এসে জানতে পারে যে শিক্ষা সফরের তালিকায় তার নাম নেই।  তালিকায় তার নাম না থাকায় সহযোগী অধ্যাপক বেলাল হোসেনের সাথে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে তাজুলের হাতে থাকা মগ দিয়ে বেলাল হোসেনের মাথায় আঘাত করে। বিষয়টি দেখে তাৎক্ষনিক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকনুজ্জামান রনি, প্রভাষক নির্মল চন্দ্র রায়, প্রভাষক হারুনুর রশিদ ও প্রভাষক মাহবুবুর রহমান এগিয়ে আসলে তাদের উপর হামলা করে তাজুল। এসময় ওই বিভাগে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা তাজুলকে আটক করে এবং আহতদের উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে ভর্তি করে। পরবর্তীতে তাদেরকে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরে তাজুলকে নিজেদের হেফাজতে রেখে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে প্রশাসনের আহ্বানে ক্যাম্পাসে দিনাজপুর কোতয়ালী থানা পুলিশ প্রবেশ করলে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা পুলিশকে ক্যাম্পাস থেকে বের হতে বলে। পরে দুপুর ২টার দিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আটক তাজুলকে কোতয়ালী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মোঃ মামুনুর রশিদ বলেন, “সকালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে তুচ্ছ ঘটনায় অফিস সহায়ক তাজুল ইসলামের হামলার শিকার হন ৫ শিক্ষক। বর্তমানে শিক্ষকদের চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। তাকে শিক্ষার্থীরা আটক করেছিল। পরে আমরা তাদের কাছ থেকে নিয়ে কোতয়ালী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছি। এ ঘটনায় তাজুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সে মানসিক সমস্যা ভুগছে বলে আমরা জানতে পারছি। এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি নির্দেশনা দিলে পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি তদন্ত করা হবে। ”

দিনাজপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাজুল ইসলাম নামে একজনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। পরবর্তী অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ”

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।