ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

খুবির সমাবর্তনে সেজেছে ক্যাম্পাস

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৯
খুবির সমাবর্তনে সেজেছে ক্যাম্পাস আলোকসজ্জ্বায় সেজেছে খুবি ক্যাম্পাস। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: জাতীয় পতাকার লাল-সবুজ রঙের আলোকছটায় উদ্ভাসিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন। ভবনগুলোতে বাহারি রঙের ছড়াছড়ি যেন আলোকচ্ছটায় চিরচেনা রূপে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।

যা সমাবর্তনের আবেশকে বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। ফলে সমাবর্তনকে ঘিরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ক্যাম্পাসের আনাচে-কানাচে যেন উৎসবের আমেজ বইছে।

আলোকসজ্জ্বায় সেজেছে খুবি ক্যাম্পাস।  ছবি: বাংলানিউজএছাড়া সমাবর্তনকে ঘিরে ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রশাসনিক ভবনের সামনে হলুদ গাঁদা ফুলের যেন রাজ্য বসেছে। প্রশাসন ভবন ছাড়াও প্রধান ফটকসহ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন একাডেমিক ভবন, হলগুলো, উপাচার্যের বাসভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও অবকাঠামো অলোকসজ্জা করা হয়েছে। পৌষের এই শীতে খুবি সৌন্দর্যের ঢালি খুলে রেখেছে। দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে ক্যাম্পাসের বাগানগুলোতে ফুটে থাকা নানা রঙের ফুল। আলোকসজ্জ্বায় সেজেছে খুবি ক্যাম্পাস।  ছবি: বাংলানিউজবিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতরে ও নগরীর দর্শনীয় স্থানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির পোর্টেট ছবি শোভা পাচ্ছে। পাঁচ হাজার অতিথি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন আধুনিকমানের বিশাল প্যান্ডেল ও মঞ্চ তৈরির কাজ সম্পন্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সমাবর্তন অনুষ্ঠান স্থলসহ গোটা ক্যাম্পাসকে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। গোটা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এখন নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা।

রাতের রঙবেরঙের বর্ণিল বাতির আলোতে মায়াবী ক্যাম্পাস যেন আরও মায়াময় হয়ে ওঠেছে।   সড়কের পাশের গাছগুলোতে সাদা-লাল রঙ করা হয়েছে। সমাবর্তন উৎসবে রাতের আঁধারেও দিনের মতোই যেন উজ্জ্বল খুবি। গাঢ় অন্ধকারকে ম্লান করে দিয়েছে বর্ণিল আলোকছটা। আলোর স্নিগ্ধতায় জ্বলজ্বল করছে গোটা ক্যাম্পাস। যা দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন সবাই। আলোকসজ্জ্বায় সেজেছে খুবি ক্যাম্পাস।  ছবি: বাংলানিউজখুবির অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী তৈয়েবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, রাত পোহালেই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতীক্ষিত ষষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। সমাবর্তন উপলক্ষে নানা রঙবেরঙের আলোয় সেজেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক ভবন, বিভিন্ন চত্বর এবং স্থাপনাগুলো। নানান ব্যানার, ফেস্টুন আর নিপুণ আল্পনার তুলিতে সেজেছে পুরো ক্যাম্পাস। যা দেখে মুগ্ধ সবাই। আলোকসজ্জ্বায় সেজেছে খুবি ক্যাম্পাস।  ছবি: বাংলানিউজখুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) ষষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে রোববার (২২ ডিসেম্বর)। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

স্টিয়ারিং কমিটি এবং অর্গানাইজিং কমিটি সার্বিক প্রস্তুতি তত্ত্বাবধান ও পর্যালোচনা করছে। গোটা বিশ্ববিদ্যালয় এখন উৎসবমুখর। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অনুষ্ঠানস্থলসহ গোটা ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকা বিশেষ নিরাপত্তা মনিটরিংয়ের আওতায় নেওয়া হয়েছে।

খুবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, খুবির সমাবর্তনের মাহেন্দ্র ক্ষণে আমরা উপস্থিত।

এ বিষয়ে খুবির সব শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সবাই অত্যন্ত আন্তরিক। সবাই অনুষ্ঠানকে সফল করতে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে। একটা সমাবর্তনের জন্য ক্যাম্পাসকে যতটা সাজানো প্রয়োজন তা সবই করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠান যাতে সফল ও সাফল্যমণ্ডিত হয় সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা- কর্মচারী গ্রাজুয়েট বর্তমান ছাত্রছাত্রী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিডিয়াসহ খুলনাবাসীর সবার সহযোগিতা চায়। সমাবর্তনকে সামনে রেখে নতুন সাজে সাজানো হয়েছে ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে প্রশাসনিক ভবনের রাস্তা এবং প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন একাডেমিক ভবনগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। বিভিন্ন ভবনে এবং রাস্তায় নতুন করে রং ও আল্পনা আঁকা হয়েছে। আলোকসজ্জ্বায় সেজেছে খুবি ক্যাম্পাস।  ছবি: বাংলানিউজখুবি সূত্রে জানা গেছে, সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠান আগে ওই দুপুর ২টা ৫মিনিটে রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের অদূরে নবনির্মিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ‘কালজয়ী মুজিব’ উদ্বোধন করবেন।

এবার ষষ্ঠ সমাবর্তনে ৪৪৭৮ জনকে স্নাতক, ২৫৩০ জনকে  স্নাতকোত্তর, পাঁচজনকে এমফিল ও আটজনকে পিএইচডি এবং ১৭ জনকে পোস্ট-গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা-ইন-এডুকেশন ডিগ্রি দেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের (অনুষদ) পরীক্ষার ফলাফলে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য এবার ২৩ জন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল দেওয়া হবে।

গোল্ড মেডেল প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলেন: বিজ্ঞান প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের-রসায়ন ডিসিপ্লিনের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের রুম্পা কুণ্ডু, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের মো. রাহাত আলী, পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের সুবর্ণা কুণ্ডু, গণিত ডিসিপ্লিনের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের তন্ময় বৈরাগী, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের নাজমুস সাকিফ।

জীব বিজ্ঞান স্কুলের- এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ঈশিতা মণ্ডল, ফার্মেসি ডিসিপ্লিনের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের জিনাত সুলতানা ও একই ডিসিপ্লিনের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ফারহান তানভীর, ফার্মেসি ডিসিপ্লিনের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মাইশা মালিহা মেধা।

সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের- অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শেখ ফাইজান বিন হালিম, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের তহমিনা ইসলাম, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের রোজিনা আক্তার, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সাবরিনা আক্তার, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মুক্তা আক্তার।

ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলের- ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ইমতিয়াজ মাশরুর, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ফারিহা আজাদ, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শাহানাজ আক্তার, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের তমালিকা বালা।

চারুকলা স্কুলের- ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শাপলা সিংহ ও ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের হিমা আক্তার হিরামণি, ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের রূপক কুমার সাহা, প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিনের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আসমা চৌধুরী।

১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর খুবির আগে পাঁচটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম সমাবর্তন ১৯৯৭ সালের ১০ এপ্রিল, দ্বিতীয় সমাবর্তন ২০০১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি, তৃতীয় সমাবর্তন ২০০৭ সালের ১৯ মাচ, চতুর্থ সমাবর্তন ২০১০ সালের ২৮ ডিসেম্বর এবং পঞ্চম সমাবর্তন ২০১৫ সালের ২৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৯
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।