ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

সান্ধ্য কোর্স বন্ধসহ ১৩ নির্দেশনা ইউজিসি’র

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
সান্ধ্য কোর্স বন্ধসহ ১৩ নির্দেশনা ইউজিসি’র

ঢাকা: দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সান্ধ্য কোর্স বন্ধ, উপাচার্যদের অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন এবং নতুন বিভাগ ও পদ সৃষ্টিতে পূর্বানুমোদন গ্রহণ, নিয়োগ এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুসরণসহ ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে এসব নির্দেশনা সংবলিত চিঠি পাঠানো হয়েছে।
 
ইউজিসির জনসংযোগ ও তথ্যঅধিকার বিভাগের পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন বলেন, এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।

 
 
সন্ধ্যাকালীন কোর্স বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘মেলায়’ পরিণত করছে বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ। গত সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ইভিনিং কোর্সের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সন্ধ্যার পরে মেলায় পরিণত হয়। বাণিজ্যিক ও সন্ধ্যাকালীন কোর্সের কারণে দেশের অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এখন দিনে ‘সরকারি’ আর রাতে ‘বেসরকারি’ চরিত্র ধারণ করেছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।
 
রাষ্ট্রপতির এমন বক্তব্যের পর ইউজিসি থেকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা এলো।
 
ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম স্বাক্ষরিত চিঠিতে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য কোর্স বন্ধের কথা বলা হয়েছে।
 
চিঠিতে বলা হয়, সান্ধ্য কোর্স পরিচালনা করা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্য ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে বিধায় সন্ধ্যাকালীন কোর্স বন্ধ হওয়া দরকার।
 
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে উপাচার্যরা নিজেদের মেধা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দিয়ে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য প্রতিপালন করে যাচ্ছেন। তবুও নানা কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতি অনুসরণে শিথিলতা দেখা যাচ্ছে। এসব কারণে উচ্চশিক্ষা প্রশাসনে সৃষ্টি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা, যা কাম্য নয়। ’
 
চিঠিতে আরো বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন অনুষদ, বিভাগ, প্রোগ্রাম ও ইনস্টিটিউট খোলা এবং নতুন পদ সৃষ্টি বা বিলুপ্তির ক্ষেত্রে কমিশনের পূর্বানুমোদন নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু ইউজিসি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে, দেশের কোনো কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের অনুমোদন ছাড়াই নতুন বিভাগ, প্রোগ্রাম ও ইনস্টিটিউট খুলে শিক্ষার্থী ভর্তি করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে, যা বাঞ্ছনীয় নয়।
 
শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ এবং পদোন্নতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের আইন মেনে চলতে চিঠিতে নির্দেশ দিয়েছে ইউজিসি।  

একই সঙ্গে ওই চিঠিতে বলা হয়, বিধি বহির্ভূতভাবে ‘সেশন বেনিফিট’ সুবিধা প্রদান এবং শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিম্নতর গ্রেড থেকে উচ্চতর গ্রেডে উন্নীত করা বাঞ্ছনীয় নয়।  
 
‘নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হচ্ছে, এমনকি পদোন্নতি ও পদোন্নয়নের ক্ষেত্রেও নিয়মের ব্যত্যয় ঘটানো হচ্ছে। সরকারের আর্থিক বিধি লঙ্ঘন করে দেওয়া হচ্ছে ভূতাপেক্ষ জ্যেষ্ঠতা। এসব ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, বিধি-বিধান এবং সরকারের নিয়ম-নীতি প্রতিপালন করা অবশ্য কর্তব্য। ’
 
সরকারি ‘আর্থিক বিধিমালা’ অনুযায়ী আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করার আহ্বান জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং এসব ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ প্রয়োজনে কমিশনের পরামর্শ নিতে পারে।
 
এছাড়া চিঠিতে দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে ইউজিসি।     
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
এমআইএইচ/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।