ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

শিক্ষকরা পদের লবিং নিয়ে ব্যস্ত: রাষ্ট্রপতি

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৯
শিক্ষকরা পদের লবিং নিয়ে ব্যস্ত: রাষ্ট্রপতি

রাজশাহী: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রশাসনের বিভিন্ন পদ-পদবি পাওয়ার লোভে শিক্ষা কার্যক্রমে ঠিকমতো অংশ নিচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। 

তিনি বলেছেন, শিক্ষকরা উন্নত জাতি তৈরির মহান কারিগর। কিন্তু সম্প্রতি গণমাধ্যমে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যেসব খবর ও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তা দেখে আচার্য হিসেবে আমাকে মর্মাহত করে।

আজকাল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যাচ্ছে শিক্ষকগণ প্রশাসনের বিভিন্ন পদ-পদবি পাওয়ার লোভে কার্যক্রম ঠিকমতো অংশ না নিয়ে লবিং নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাদশ সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, একজন শিক্ষক নিছক একজন বক্তা নন। তিনি শিক্ষাগুরু। শিক্ষকের কথা কেবল বক্তৃতা নয়-তা বাণী। আদর্শ ছাড়া, প্রচেষ্টা ছাড়া, বৃত্তি ছাড়া, পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস ছাড়া শিক্ষা মূল্যহীন। তাই একজন শিক্ষককে হতে হবে আদর্শ ও ন্যায়-নীতির প্রতীক।  

‘কিন্তু এখনকার বাস্তবতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করতেও পিছপা হন না। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ভুলে গিয়ে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট লেনদেনে সম্পৃক্ত হন। এটা অত্যন্ত অসম্মানের ও অমর্যাদাকর। ’

শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। সাধারণ মানুষ আপনাদের সম্মান ও মর্যাদার উচ্চাসনেই দেখতে চায়। তাই ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার জন্য নীতি ও আদর্শের সঙ্গে আপস করবেন না। আপনাদের মর্যাদা আপনাদেরই সমুন্নত রাখতে হবে। ব্যক্তি স্বার্থের কাছে আদর্শ যাতে ভূলুণ্ঠিত না হয়, সে দায়িত্ব আপনাদেরই নিতে হবে। আপনারা রাজনৈতিকভাবেও খুবই সচেতন ব্যক্তিত্ব।  

‘রাজনৈতিক মতাদর্শ ও চিন্তা চেতনায় একজনের সঙ্গে আরেকজনের পার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু এর নেতিবাচক প্রভাব যেন প্রতিষ্ঠানে বা শিক্ষার্থীর ওপর না পড়ে তাও নিশ্চিত করতে হবে। ’

এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ হেলিকপ্টারে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন। সেখানে তাকে ফুল দিয়ে উষ্ণ অর্ভ্যথনা ও লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়।  

সেখান থেকে তিনি উপাচার্যের বাসভবনে গেলে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

পরে দুপর সাড়ে ৩ টায় শোভাযাত্রা সহকারে রাষ্ট্রপতি সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন। সেখানে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠের পর সমাবর্তন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি।

এরপরে ডিগ্রি উপস্থাপন ও প্রদান পর্ব, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক পিএইচডি ডিগ্রিপ্রাপ্তদের সনদপত্র প্রদান, বিশেষ অতিথির বক্তব্য, সমাবর্তন বক্তার বক্তব্য, সমাবর্তন স্মারক প্রদান ও রাষ্ট্রপতির ভাষণ প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, রাবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আব্দুস সোবহান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক ড. চৌধুরী মো. জাকারিয়া, কোষাধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।  

এবারের সমাবর্তন বক্তা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রঞ্চন চক্রবর্তী। পরে সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করবেন কণ্ঠশিল্পী খুরশিদ আলম ও জাফরিন জিনিয়া লুইপা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৯
এসএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।